বাংলাদেশ সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মতো শিল্পপতিদেরই চায়
Published: 12th, March 2025 GMT
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যুসংবাদ আমাকে খুবই ব্যথিত করেছে। তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তিনি ছিলেন দেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং তাঁর দক্ষতা ও নীতিনিষ্ঠা সর্বজনবিদিত। সমাজের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা ছিল। শুধু তা–ই নয়, দুবার (১৯৯৬ ও ২০০১) তিনি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি নিয়ে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সুস্পষ্ট ধারণা ছিল। তিনি ছিলেন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তাঁর নানামুখী প্রজ্ঞা রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনেক সহায়ক ছিল। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকাকালে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) পরিচালক ছিলেন। ব্যাংক খাতের উন্নতি, এ খাতের সুশাসন, খেলাপি ঋণের হার নিয়ন্ত্রণে তাঁর পরামর্শ আমরা কাজে লাগিয়েছি। এ ছাড়া বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী ফোরাম এমনকি বাজেট প্রণয়নেও তাঁর জ্ঞানগর্ভ সুপারিশ অর্থ মন্ত্রণালয় পেয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
সানবিমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল প্রতিষ্ঠাসহ শিক্ষা খাত এবং বিভিন্ন সামাজিক কাজে যুক্ত ছিলেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। তাঁর সঙ্গে সামাজিক ফোরামে যখনই দেখা হয়েছে, আমি দিলখোলাভাবে কথা বলেছি, গল্প করেছি। তিনি ছিলেন একজন অমায়িক ও পরিশীলিত ভদ্রলোক।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুরকে অ্যাপেক্স গ্রুপের দায়িত্ব দিয়েছেন অনেক আগেই। এটাও তাঁর একটি সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত। এবার যখন অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলেন, আমি খোঁজ নিয়েছি। আশা ছিল, সুস্থ হয়ে ফিরে দেশে ফিরে আসবেন।
ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়া, কাগজপত্রের ভিত্তিতে ব্যাংকঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করা, বিদেশে অর্থ পাচার করা ইত্যাদি কাজ করে থাকেন দেশের একশ্রেণির ব্যবসায়ী। এর বিপরীতে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মতো শিল্পপতিরাও তৈরি হয়েছেন, যাঁরা দেশের সম্পদ। এ ধরনের শিল্পপতিদেরই বাংলাদেশ চায়। আমি মনে করি কর্ম, নিষ্ঠা, সাফল্য ও সততার দিক থেকে যেকোনো ব্যবসায়ী বা শিল্পপতির জন্যই আদর্শ হতে পারেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী।
লেখা: সালেহউদ্দিন আহমেদ, অর্থ উপদেষ্টা
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ল পপত
এছাড়াও পড়ুন:
১৯০ বিঘা খাস জমি দখলে নিতে সংঘর্ষ, নিহত ১
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় খাস খতিয়ানের ১৯০ বিঘা জমির দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন। এ সময় শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
নিহত মো. মদিন মোল্লা (৫৫) উপজেলার রূপবাটি ইউনিয়নের বড় ধুনাইল গ্রামের মৃত ছকির মোল্লার ছেলে। তাঁর লাশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সরেজমিন জানা গেছে, বড় ধুনাইল গ্রামের ১৯০ বিঘা খাস খতিয়ানের জমি নিয়ে এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় হালিম ও জাফরের পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। এরই জেরে গত শনিবার দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শাহজাদপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান।
রোববার সকালে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়ায়। এতে মদিন মোল্লা নিহত হন। আহত হয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), ইনজামুল হক (২৬), আলতাব (৫৭), বাবলু মোল্লাসহ (৪৫) অন্তত ১০ জন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জাফরের পক্ষের মদিন মোল্লার মৃত্যুর খবরে হালিম পক্ষের লোকজন গ্রাম ছেড়ে চলে যান। এ সুযোগে জাফর পক্ষের লোকজন বিভিন্ন বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার বিষয়ে জানার চেষ্টা করেও দু’পক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
খতিয়ানের জমি দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হালিম ও জাফর পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শাহজাদপুর থানার ওসি মো. আছলাম আলী।
তিনি বলেন, শনিবারের সংঘর্ষ পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনলেও রোববারের সংঘর্ষে মদিন মোল্লা নামে একজন নিহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।