ফাতিমার ফিল্মি ভ্রমণকে কঠিন করে দিয়েছিল ‘দঙ্গল’
Published: 12th, March 2025 GMT
২০১৬ সালে আমির খানের ‘দঙ্গল’ ছবির মাধ্যমে নায়িকা হিসেবে বলিউডে অভিষেক। বক্স অফিসে ঝড় তোলা ছবিটি দিয়ে সফলতার চূড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন ফাতিমা সানা শেখ। এরপর নায়িকা হিসেবে এই ইন্ডাস্ট্রিতে আট বছর কেটে গেছে। তারপরও ফাতিমার সঙ্গে যেকোনো আলাপচারিতায় চলে আসে ‘দঙ্গল’ প্রসঙ্গ। ‘এই ছবির সফলতা আমাকে চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। সত্যি বলতে, “দঙ্গল” ছবির পর আমার ফিল্মি ভ্রমণ আরও কঠিন হয়ে যায়। আমার খালি মনে হচ্ছিল যে এই ছবির মাধ্যমে আমি যে ভাবমূর্তি এবং ‘বেঞ্চমার্ক’ তৈরি করেছি, আমি আমার পরবর্তী ছবির মাধ্যমে সবার সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব কি না। আমি নিজেই নিজের প্রতি অনাস্থা দেখাতে শুরু করেছিলাম। “দঙ্গল” ছবির পর মানুষ হয়তো মনে করছেন, আমি ভালো অভিনেত্রী, আমি কি আদৌ তা–ই? এসব প্রশ্ন তখন আমাকে তাড়া করত। একক ছবি করার সাহস দেখাতে পারতাম না। মনে হতো, সমগ্র ছবির দায়ভার আমার ওপর পড়বে। আর ছবিটা যদি ভালো না হয় বা দর্শক পছন্দ না করেন, আমি তাহলে কী করব? কোনো প্রকল্প নেওয়ার সময় আমাকে তখন একরাশ ভয় এবং অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরত। আমার বুঝে উঠতে সময় লেগেছিল যে ব্যর্থতা আসতেই পারে আর ভুলভ্রান্তি হতেই পারে,’ অনেকটা এক নিশ্বাসেই কথাগুলো বললেন ফাতিমা।
আরও পড়ুনআপত্তিকর প্রস্তাব পেয়েছিলেন ফাতিমা শেখ২৮ জানুয়ারি ২০২৫অনুরাগ বসুর ‘লুডো’ ছবির প্রসঙ্গ টেনে ফাতিমা বলেন, ‘“লুডো” আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছিল। “থাগস অব হিন্দুস্তান” ছবির পর আমি “লুডো”র শুটিং করেছিলাম। আমার তখন নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসের চরম অভাব ছিল। তবে “লুডো”র শুটিংয়ের সময় আমি ভেবেছিলাম, যা হবে হোক, আমাকে আমার কাজ করে যেতে হবে। আর আমার নিজের প্রতি আস্থা বাড়াতে হবে।’
ফাতিমা সানা শেখ। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিলুপ্তপ্রায় গোটালি মাছের কৃত্রিম প্রজননে সাফল্য
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিলুপ্তপ্রায় সুস্বাদু দেশীয় গোটালি মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদনে প্রাথমিক সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) একদল বিজ্ঞানী।
মিঠাপানির জলাশয় বিশেষ করে পাহাড়ী ঝর্ণা ও অগভীর স্বচ্ছ নদী এদের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত। উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, আত্রাই ছাড়াও নেত্রকোনার সোমেশ্বরী, কংস, সিলেটের পিয়াইন, পদ্মা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে এক সময় মাছটির প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। এখন মাছটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
মাছটির কৃত্রিম প্রজনন এবং পোনা তৈরির কলাকৌশল উদ্ভাবনের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বিএফআরআইয়ের পাবলিকেশন অফিসার এসএম শরীফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ২৬১ প্রজাতির মিঠাপানির মাছের মধ্যে গোটালি (বৈজ্ঞানিক নাম Crossochelius latius) একটি গুরুত্বপূর্ণ সুস্বাদু ছোট মাছ। মাছটি অঞ্চলভেদে কালাবাটা নামেও পরিচিত।”
তিনি আরও বলেন, “জলাশয় দূষণ, অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, নদীতে বান ও কারেন্ট জালের ব্যবহার, খরা মৌসুমে জলাশয় শুকিয়ে মাছ ধরা এবং নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরা, বাসস্থান ও প্রজননক্ষেত্র বিনষ্ট হওয়াসহ নানা কারণে অন্যান্য দেশীয় ছোট মাছের ন্যায় এ মাছের প্রাপ্যতাও ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তথ্য মতে, ২০১৫ সালে মাছটি বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রজাতিটি বিপন্নের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটের সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকা থেকে মাছটি সংগ্রহ করেন। এরপর উপকেন্দ্রের গবেষণা পুকুরে অভ্যস্তকরণ ও কৃত্রিম প্রজননের জন্য গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশে প্রথমবারের মত কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জিত হয়।
এ গবেষণায় নেতৃত্বে দেন বিএফআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আজহার আলী। এছাড়াও গবেষক দলে ছিলেন, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ড. সোনিয়া শারমীন, মালিহা হোসেন মৌ ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শ্রীবাস কুমার সাহা।
এসএম শরীফুল ইসলাম বলেন, “বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ এ মাছটির কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় মাছটি চাষের আওতায় চলে আসবে। এতে উত্তর জনপদে তথা দেশের মৎস্য খাতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে এবং মাছটি বিলুপ্তির হাত থেকেও রক্ষা পাবে।”
ঢাকা/মেহেদী