পুরো ফলাফল প্রকাশ না করা এবং পুলিশের উপপরিদর্শকের (নিরস্ত্র) শূন্য পদে ৮৮ জনকে নিয়োগ দিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। ওই নিয়োগ প্রশ্নে দুই বছর আগে দেওয়া রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন।

এই রায়ের ফলে পুলিশের উপপরিদর্শকের (নিরস্ত্র) শূন্য পদে ৮৮ জনের নিয়োগের পথ সুগম হলো বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে।’

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে বি এম ইলিয়াসের সঙ্গে শুনানিতে আরও ছিলেন আইনজীবী মো.

মনিরুল ইসলাম মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।

আইনজীবীদের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে পুলিশের সাব–ইন্সপেক্টর (এসআই–নিরস্ত্র) হিসেবে প্রকৃত শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ২০২৩ সালের ৪ মে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এ অনুসারে অন্যান্য প্রাথমিক পরীক্ষার পর একই বছরের ৩০ জুলাই লিখিত পরীক্ষা হয়। এতে ৫ হাজার ৮৩৯ জন উত্তীর্ণ হন। মৌখিক পরীক্ষা শেষে ১ হাজার ৪০০ শূন্য পদের বিপরীতে ৯২১ জনকে নিয়োগের জন্য ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর সুপারিশ করা হয়। এ অবস্থায় শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ না দেওয়ায় পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর আবেদন করেন রিট আবেদনকারীরা। এতে ফল না পেয়ে নিয়োগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন তাঁরা। এতে প্রতিকার না পেয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নিয়োগবঞ্চিত ৮৮ জন ২০২৩ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পুরো ফলাফল প্রকাশ না করা এবং পুলিশের উপপরিদর্শক (নিরস্ত্র) হিসেবে শূন্য পদে রিট আবেদনকারীদের (৮৮ জন) নিয়োগ দিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুল বিচারাধীন অবস্থায় গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি প্রকৃত শূন্য পদে সরাসরি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এ অবস্থায় রিট আবেদনকারীরা তাঁদের জন্য শূন্য পদ সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৫ মে হাইকোর্ট আবেদন মঞ্জুর (ছয় মাসের জন্য শূন্য পদ সংরক্ষণ) করে আদেশ দেন। অর্থাৎ রিট আবেদনকারীদের (৮৮টি পদ) জন্য সংরক্ষণ করতে বলা হয়। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন।

শুনানি নিয়ে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রেখে মূল বিষয়বস্তুতে হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেন আদালত।

পুরো ফলাফল প্রকাশ না করার বিষয়ে রিট আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, প্রকৃত শূন্য পদে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে লিখিত ও মৌলিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ৯২১ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। তবে মৌখিক পরীক্ষায় কতজন উত্তীর্ণ হয়েছেন, তা সুনির্দিষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তখন এ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ গণমাধ্যমের খবরে আসে। যে কারণে পুরো ফলাফল প্রকাশ না করা ও লিখিত পরীক্ষাসহ পাঁচটি ধাপে উত্তীর্ণ ৮৮ জন নিয়োগ না দেওয়ার বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়। হাইকোর্ট রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। ফলে ৮৮ জনের এসআই (নিরস্ত্র) শূন্য পদে নিয়োগের পথ খুলল।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২০২৩ স ল শ ন য পদ ক পর ক ষ আইনজ ব র জন য বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

সমন্বয়ক পরিচয়ে পুলিশকে মেরে আসামি ছিনতাই

ঢাকার কেরানীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে দুই পুলিশকে মারধর করে এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই পিযুষ সরকার ও কনস্টেবল রাজীব সিকদার আহত হয়েছেন। সোমবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন বেগুনবাড়ি সেতুর ঢালে জমিদার সিটি এলাকায় কালু বেপারীর বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় বেগুনবাড়ি এলাকায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই পিযুষ সরকার দু’জন কনস্টেবল নিয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আসিফ উল্লাহকে (২৫) গ্রেপ্তার করেন। এ সময় আসিফের ছোট ভাই মারুফ হোসেন পুলিশের কাছে এসে নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দেন। মারুফ পুলিশের কাছে ওয়ারেন্টের কাগজ দেখতে চান। পুলিশ ওয়ারেন্টের কাগজ বের করে দেখালে মারুফ পুলিশের হাত থেকে ওয়ারেন্টের কাগজ নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন। মারুফ ফোনে কল করে বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনসহ ২০-২৫ জনকে জড়ো করেন। এ সময় তারা দুই পুলিশকে মারধর করে হাতকড়া পরা অবস্থায় আসামি আসিফকে ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনা এসআই পিযুষ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করেন। তাদের মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে অভিযান চালিয়ে শুভাঢ্যা সাবান ফ্যাক্টরি এলাকা থেকে হাতকড়া পরা অবস্থায় আসামি আসিফ ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ মারুফসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে।

কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ছিনিয়ে নেওয়া আসামিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি সমন্বয়ক পরিচয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, আসামির আত্মীয়-স্বজনরা পুলিশকে মারধর করে আসামি ছিনিয়ে নিয়েছেন। সেখানে সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করা হয়েছে কিনা বিষয়টি তিনি নিশ্চিত নন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখতে অনড় কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ
  • শিশু ধর্ষণের চেষ্টাকারীকে পুলিশে সোপর্দ
  • ‘ঘুষের জন্য’ ১৫১ ফাইল আটকে রাখেন রাজশাহী মাউশির ডিডি
  • সমন্বয়ক পরিচয়ে পুলিশকে মারধর করে আসামি ছিনতাই
  • সমন্বয়ক পরিচয়ে পুলিশকে মেরে আসামি ছিনতাই
  • রাজশাহীতে মাউশির উপপরিচালকের দপ্তরে দুদক পেল আটকে রাখা ১৫১ ফাইল
  • ‘ঘুষের জন্য’ মাউশির ডিডির টেবিলে আটকা ১৫১ ফাইল 
  • দুই পুলিশ হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩
  • তারেক রহমানের নির্দেশনায় ‘জাতীয়তাবাদী চালক দলের’ জুয়েল ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মামলা