বীমা খাতের উন্নয়নে সংস্কার করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম বলেছেন, অনেক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধতা থাকায় আইডিআরএ তার ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারে না। 

এই খাতের উন্নয়ন করতে চাইলে আইডিআরএ-কে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে; ক্ষমতা প্রয়োগের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন ড.

আসলাম আলম।

বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকার মতিঝিলে আইডিআরএ কার্যালয়ে ‘বীমা খাতের সংস্কার ও আমাদের করণীয় শীর্ষক সেমিনারে’ তিনি এসব কথা বলেন। 

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরাম (আইআরএফ) যৌথভাবে এই সেমিনার আয়োজন করে।

আইআরএফ সভাপতি গাজী আনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। জীবন বীমা খাত নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রগতি লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জালালুল আজিম এবং নন-লাইফ খাত নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেনা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শফিক শামীম।

সেমিনারে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য, লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমে বীমা খাত নিয়ে কাজ করা সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।

বীমা আইনকে অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ আখ্যায়িত করে আসলাম আলম বলেন, আইডিআরএ-কে দুর্বল করে বীমাকারীদের পক্ষে এই আইন করা হয়েছে। আইডিআরএ কাউকে সাসপেন্ড করলে তারা আদালতে গিয়ে স্টে অর্ডার নিয়ে পুনরায় ফিরে আসে। তাই ব্যাপকভাবে আইডিআরএ এর ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে তথ্যের প্রয়োজন। কিন্তু বীমা কোম্পানিগুলো সঠিকভাবে তথ্য প্রদান করতে চায় না। যেসব তথ্য দেয়, তা ফেব্রিকেটেড (জাল-জালিয়াতি) কিনা তাও নিশ্চিত নয়। 

তিনি বলেন, “ডিজিটালাইজেশন হলে ৮৫ শতাংশ অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা পদক্ষেপ নেই কিন্তু সহযোগিতা পাওয়া যায় না।”

আইডিআরএ চেয়ারম্যান আরো বলেন, আইএমএস যেটা ইউএমপি নামে পরিচিত ছিল, সেটা ১০টি সার্ভিস দিচ্ছে। বীমা কোম্পানিগুলো মনিটরিং করতে এসব তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আইএমএস-এ পূর্ণ তথ্য দিলে আইডিআরএ কাজ করতে পারবে।  কিন্তু বিআইএ এর নতুন কমিটি ঘোষণা দিয়েছে, তারা এটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে না।

আসলাম আলম বলেন, ডিজিটালাইজেশন ছাড়াও যদি যথাসংখ্যক জনবল থাকতো তাহলেও হতো। কিন্তু আইডিআরএকে স্বল্পসংখ্যক জনবল ও স্বল্প টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তবে বীমা খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়েই কাজ চলছে। এজন্য সময় লাগবে, রাতারাতি সম্ভব নয়।

গ্রাহকদের বকেয়া বীমা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, উল্লেখযোগ্য শেয়ারহোল্ডারের সম্পদ বিক্রি করে দাবি পরিশোধের ক্ষমতা আইডিআরএ এর নেই। এ জন্য আদালতে যেতে হয়। এরইমধ্যে কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু মামলা চলমান আছে। 

তিনি আরো বলেন, অনিষ্পন্ন বীমা দাবি পরিশোধ না হলে বীমার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে না। সুশাসন কায়েম হলে আস্থা বাড়বে।

ঢাকা/এনএফ/এনটি/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইড আরএ ক ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

বিমা খাত নিয়ে কি গবেষণা করবেন? তাহলে ৪ থেকে ১০ লাখ টাকা দেবে আইডিআরএ

দেশের বিমা খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আপনি কি গবেষণা করতে চান? তাহলে আপনার সামনে সে সুযোগ করে দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। তবে সংস্থাটির কাছে প্রস্তাব জমা দেওয়ার আর তিন দিন বাকি আছে। ১৩ মার্চ শেষ হয়ে যাচ্ছে সময়।

আইডিআরএর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ৯টি বিষয়ে গবেষণা প্রস্তাব জমা দেওয়া যাবে। এগুলো হলো দেশের বিমা খাতে ডিজিটাল রূপান্তর, বাংলাদেশে বিমার পেনিট্রেশন, বাংলাদেশে বিমাশিল্পে বর্তমান নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর কার্যকারিতা, বিমা দাবি নিষ্পত্তি, বাংলাদেশে বিমা লিটারেসি, পলিসি ল্যাপস, নন-লাইফ বিমা ব্যবসায়ে কমিশন সমস্যা, পুনর্বিমার চ্যালেঞ্জ ও বিমা খাতে সুশাসনের সমস্যা।

আগ্রহী প্রার্থীদের ইংরেজিতে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ শব্দের মধ্যে দুই পৃষ্ঠায় প্রাথমিক গবেষণা প্রস্তাব দাখিল করতে হবে। একই সঙ্গে প্রধান গবেষকের জীবনবৃত্তান্ত দাখিল করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে বা দলগতভাবে গবেষণা প্রস্তাব দাখিল করা যাবে।

আবেদনের যোগ্যতার মধ্যে রয়েছে স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডিসহ প্রাসঙ্গিক বিশেষজ্ঞ বা অনুশীলনকারী, বিমা খাতে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অনুশীলনকারী, কিউআই জার্নালে একটি প্রকাশনাসহ ব্যবসা বা অর্থনীতি বিষয়ে গবেষণা করার অভিজ্ঞতা ইত্যাদি। অভ্যন্তরীণ গবেষকদের জন্য যোগ্যতার শর্ত শিথিলযোগ্য।

বিস্তারিত তথ্যের জন্য www.idra.org.bd-এই ওয়েবসাইটের আইডিআরএ রিসার্চ গাইডলাইন ২০২৫ অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রয়োজনে আইডিআরএর গবেষণা শাখার সহকারী পরিচালক মো. ইখতিয়ার হাসান খানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

গাইডলাইনে ক, খ ও গ নামে তিন শ্রেণির গবেষণার কথা বলা আছে। ক শ্রেণির গবেষণা করতে দুই থেকে আড়াই বছর এবং ১০ লাখ টাকার বেশি বাজেট বরাদ্দ থাকবে। খ শ্রেণিতে এক বছরের জন্য গবেষণার অর্থমূল্য হবে ১০ লাখ টাকার মধ্যে। আর গ শ্রেণিতে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে গবেষণা করতে হবে, যার অর্থমূল্য হবে চার লাখ টাকার মধ্যে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিমা খাত নিয়ে কি গবেষণা করবেন? তাহলে ৪ থেকে ১০ লাখ টাকা দেবে আইডিআরএ