স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ ৯ দাবিতে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্মে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা হয় গতকাল মঙ্গলবার। এসময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এছাড়া আন্দোলনকারীদের হামলায় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য।

গণমাধ্যমে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা সংক্রান্ত অসংখ্য ছবি প্রকাশ হয়। প্রকাশিত এসব ছবি সম্পর্কে বক্তব্য জানিয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। এতে বলা হয়েছে, প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে এ ধরনের খণ্ডিত সংবাদ ও ছবি প্রকাশ কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করে।

বুধবার (১২ মার্চ) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানান বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার বিভিন্ন সংবাদপত্রে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় পুলিশের বাধা সংক্রান্ত প্রকাশিত ছবির প্রতি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মনোযোগ আকৃষ্ট হয়েছে। এ সম্পর্কে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের বক্তব্য-

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ নামের প্ল্যাটফর্মের প্রায় ৬০/৭০ জনের একটি দল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রার চেষ্টা করে। পুলিশ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তাজনিত কারণে পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা দেয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে।

পুলিশ পবিত্র রমজানে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন যাতায়াত ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বিক্ষোভকারীদের নিবৃত হওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানায়। কিন্ত তারা পুলিশের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। তাদের অতর্কিত হামলায় ডিএমপির রমনা জোনের সহকারী কমিশনার গুরুতর আহত হন। এছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।

ঘটনার ভিডিও চিত্র দেখলে পরিষ্কার হয় যে, উত্তেজিত মিছিলকারীরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করার পর পুলিশ তাদের প্রতিহত করে। কিন্তু প্রকাশিত ছবিতে এ সত্যটি আড়াল করা হয়েছে।

প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে এ ধরনের খণ্ডিত সংবাদ ও ছবি প্রকাশ কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ মোট ৯ দাবিতে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করে।

এ সময় হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের কাছে পৌঁছালে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার চেষ্টা করলে হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

ঢাকা/মাকুসদ/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদয ত র ব সভবন

এছাড়াও পড়ুন:

‘আপত্তিকর আচরণের’ কারণে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে খুন করা হয়: পুলিশ

রাজধানীর উত্তরখানে নিজ বাড়িতে খুন হওয়া হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আচরণ’–এর অভিযোগ তুলেছেন পুলিশের হাতে আটক ওই দম্পতি।

আটক দম্পতিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে আজ বুধবার পুলিশ জানায়, টাকাপয়সাসহ ব্যাগ হারিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে অসহায় অবস্থায় পড়েছিলেন তাঁরা। দুজনেরই বয়স ২৫–এর কম। তাঁদের অসহায়ত্ব দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। তাঁর বাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে দুজনকে উত্তরখানের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। চাকরির কথা বলে নিলেও সাইফুর রহমানের উদ্দেশ্য ছিল ওই নারীর সঙ্গে ‘আপত্তিকর আচরণ’ করা। সুযোগ পেলেই স্বামীকে বাইরে পাঠিয়ে তরুণীর শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন সাইফুর রহমান।

পুলিশ জানায়, সর্বশেষ গত রোববার রাতে সাইফুর রহমান তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তাঁর স্বামী নাজিম প্রতিবাদ করেন। এতে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে বঁটি দিয়ে সাইফুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান দুজন।

আজ দুপুরে মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, আটক দুই ব্যক্তি হলেন মো. নাজিম হোসেন (২১) ও তাঁর স্ত্রী রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি (২৩)। গতকাল মঙ্গলবার ফরিদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে দুটি মুঠোফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়। এর আগে নিহত সাইফুর রহমানের ফ্ল্যাট থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বঁটি, একটি ধারালো চাকু, রক্তমাখা জামাকাপড় ও বিছানার চাদর উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, ১০ মার্চ দিবাগত রাত দুইটা থেকে ভোররাত চারটার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে খুন হন। এ খুনের ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় গতকাল মামলা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা মহিদুল জানান, পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগের দিন কমলাপুর রেলস্টেশনে সাইফুর রহমানের সঙ্গে মো. নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে দুজনকে তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন সাইফুর রহমান। একপর্যায়ে তিনি রুপাকে তাঁর ফ্ল্যাটে আটকে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করেন। হত্যাকাণ্ডের রাতে একই শয্যায় ছিলেন সাইফুর রহমান, রুপা ও তাঁর স্বামী নাজিম।

ডিসি মহিদুল আরও বলেন, সেই রাতে নাজিম ঘুমিয়ে পড়লে রুপাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সাইফুর রহমান। একপর্যায়ে নাজিম ঘুম থেকে জেগে গেলে রান্নাঘর থেকে বঁটি এনে তাঁকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা শিক্ষকদের, পুলিশের জলকামান
  • প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা শিক্ষকদের, পুলিশের লাঠিচার্জ-জলকামান
  • ‘আপত্তিকর আচরণের’ কারণে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে খুন করা হয়: পুলিশ
  • রাজশাহীতে অটোরিকশায় নারী শিক্ষার্থীকে দেখে অশালীন কর্মকাণ্ড, আটক ১
  • শিক্ষার্থীকে ইঙ্গিত করে অশোভন আচরণ, অভিযুক্তকে খুঁজছে পুলিশ
  • মানুষ যেভাবে বিমূর্ত চিন্তাভাবনা করে
  • চ্যাটজিপিটি কি সত্যিই মানুষের মতো মানসিক চাপ ও উদ্বেগ অনুভব করে
  • ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ এর গণপদযাত্রায় পুলিশের বাধা, লাঠিপেটা
  • শ্যামলীর রাস্তায় নারীদের পেটানো সেই রাসেল গ্রেপ্তার