গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স
Published: 12th, March 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ ৯ দাবিতে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্ল্যাটফর্মে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা হয় গতকাল মঙ্গলবার। এসময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এছাড়া আন্দোলনকারীদের হামলায় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য।
গণমাধ্যমে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা সংক্রান্ত অসংখ্য ছবি প্রকাশ হয়। প্রকাশিত এসব ছবি সম্পর্কে বক্তব্য জানিয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। এতে বলা হয়েছে, প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে এ ধরনের খণ্ডিত সংবাদ ও ছবি প্রকাশ কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করে।
বুধবার (১২ মার্চ) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানান বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার বিভিন্ন সংবাদপত্রে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় পুলিশের বাধা সংক্রান্ত প্রকাশিত ছবির প্রতি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মনোযোগ আকৃষ্ট হয়েছে। এ সম্পর্কে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের বক্তব্য-
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ নামের প্ল্যাটফর্মের প্রায় ৬০/৭০ জনের একটি দল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রার চেষ্টা করে। পুলিশ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তাজনিত কারণে পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা দেয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে।
পুলিশ পবিত্র রমজানে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন যাতায়াত ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বিক্ষোভকারীদের নিবৃত হওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানায়। কিন্ত তারা পুলিশের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। তাদের অতর্কিত হামলায় ডিএমপির রমনা জোনের সহকারী কমিশনার গুরুতর আহত হন। এছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
ঘটনার ভিডিও চিত্র দেখলে পরিষ্কার হয় যে, উত্তেজিত মিছিলকারীরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করার পর পুলিশ তাদের প্রতিহত করে। কিন্তু প্রকাশিত ছবিতে এ সত্যটি আড়াল করা হয়েছে।
প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে এ ধরনের খণ্ডিত সংবাদ ও ছবি প্রকাশ কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ মোট ৯ দাবিতে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করে।
এ সময় হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের কাছে পৌঁছালে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার চেষ্টা করলে হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
ঢাকা/মাকুসদ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদয ত র ব সভবন
এছাড়াও পড়ুন:
সেই ‘ক্রিম আপা’কে কারাগারে আটক রাখার আবেদন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি ভিউ পেতে বা অনলাইন থেকে টাকা আয়ের জন্য সন্তানদের ওপর ‘নির্যাতন চালানোর’ ভিডিও বানিয়ে ভাইরাল হওয়ার অভিযোগে ‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১১এপ্রিল) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ওমর ফারুক তাকে আদালতে হাজির করে এই আবেদন করেন। তাকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।
শারমিন শিলার পক্ষে আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় ৪ আসামির মৃত্যুদণ্ড
নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিনাত জাহানের আদালতে জামিনের বিষয়ে শুনানি হবে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) আশুলিয়া থানায় শারমিন শিলার বিরুদ্ধে মামলা করেন সাভার উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানার পুলিশ।
মামলার বর্ণনা অনুযায়ী, শারমিন শিলা একজন বিউটিশিয়ান। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত। মূলত মেক-আপের কাজ করেন এবং বিভিন্ন রকম ক্রিম তৈরি করে বিক্রি করেন তিনি। তার পরিবারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করেন। গত ৩ মার্চ বিকাল ৪টায় তার ফেসবুক আইডির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
সেই ভিডিওতে দেখা যায়, শারমিন তার মেয়েকে জোর করে মুখে খাবার দিচ্ছেন। মেয়েটি খেতে না চাইলে এক হাতে মুখে চাপ দিয়ে, অন্য হাতে কেক জাতীয় খাবার মুখে ঢোকাচ্ছেন তিনি। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এজাহারে বলা হয়েছে, শারমিন শিলা মাতৃসুলভ আচরণ না করে সন্তানদের প্রতি নিষ্ঠুর ব্যবহার করছেন, যা তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এমন আচরণ শিশু আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘একাই একশো’ গত ৬ এপ্রিল ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে শারমিনের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেয়। পরে জেলা প্রশাসন তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়।
সমালোচনার মুখে পড়ে শারমিন শিলা ফেসবুক লাইভে এসে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান এবং জানান, ভবিষ্যতে এমন ভিডিও আর করবেন না।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, ক্ষমা চাইলেও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/মামুন/রাসেল