দোল পূর্ণিমায় লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষ্যে এবারে পবিত্র রমজানের কারণে একদিনের উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে লালন একাডেমি ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। 

তবে প্রতিবছর তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলা থাকবে না। শুধু সাধু সঙ্গের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দোল পূর্ণিমায় লালন মাজারের আয়োজন।

রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও লালন একাডেমির পক্ষ্য থেকে একদিনের লালন স্মরণোৎসব উদযাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান।

বুধবার (১২ মার্চ) দুপুর থেকে একে একে বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধু-ভক্ত ও লালন অনুসারীরা এসে জড় হয়েছে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন আঁখড়াবাড়িতে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে সাধুদের নিয়মেই চলবে সাধু সঙ্গ।

এদিন সন্ধ্যা এবং রাতে বাউল ভক্ত ফকিরদের বাল্যসেবা প্রদান করা হবে। রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে সাধুদের বৃহস্পতিবার রাতেই আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে বলে জানা গেছে।

তিনদিনের পরিবর্তে এবার একদিনের অনুষ্ঠান হলেও সেটাতে সাধুদের নিয়মনীতিতে কোন প্রভাব নেই বলে জানান সাধুরা। তারা তাদের নিজস্ব নিয়ম মেনেই চলে।

এবারে তাদের অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- সন্ধ্যায় বাল্যসেবা, রাখাল সেবা ও পূণ্যসেবা। এছাড়া সাধু-গুরুর ভক্তি ও ভাবের আদান প্রদান।

উল্লেখ্য, বাউল সম্রাট লালন ফকির তার জীবদ্দশায় প্রতিবছর ভক্ত ও অনুসারীদের নিয়ে দোল পূর্ণিমা তিথিতে স্মরণোৎসব পালন করতেন। সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর দোল পূর্ণিমায় লালন ভক্ত, অনুসারী ও বাউলরা অনুষ্ঠান উদযাপন করে আসছেন।

লালন মাজারে থাকা খোদা বক্স ফকির বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমরা গুরু কার্যে বসব। ভোরে সেহরির পূর্বেই আমরা বাল্য সেবার মধ্য দিয়ে আমাদের কার্যক্রম শেষ করব। তবে যদি কেউ দুপুরে থাকে, তাহলে তারা নিজেদের কাফেলায় নিজেদের উদ্যোগে পূণ্য সেবা নিবে। তবে আমরা সকালেই সবাইকে বিদায় দিয়ে দেব।”

তিনি বলেন, “পৃথিবীর সকল ধর্মের মানুষের মাঝে সত্যের বাণি প্রচারের মাধ্যমে আমরা আমাদের মানবতার ধর্ম প্রচার করি। এজন্য কোনো ধর্মের মানুষ কষ্ট পাক এটা আমরা চাই না।”

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান জানান, রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও লালন একাডেমির পক্ষ্য থেকে একদিনের লালন স্মরণোৎসব উদযাপন করা হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ-র‌্যাব এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে।

ঢাকা/কাঞ্চন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স মরণ ৎসব অন ষ ঠ ন রমজ ন র একদ ন র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে এবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিজাত ইউনিটের পিটিশন

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ এবং বন্দিদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরো কয়েকশ’ সদস্য নতুন একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন।

ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল কান-এর বরাত দিয়ে শনিবার (১২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু।

কান জানিয়েছে, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) নতুন একটি চিঠিতে স্বাক্ষরকারী সৈন্যরা সেনাবাহিনীর বিভিন্ন বিভাগ এবং বিশেষায়িত বিভাগের সদস্য।যার মধ্যে রয়েছে গোয়েন্দা ইউনিট ৮২০০, বিশেষ বাহিনী এবং সায়েরেত মাতকাল, শায়েতেত এবং শালদাগের মতো অভিজাত ইউনিট।

আরো পড়ুন:

গাজা ‘পৃথিবীর নরকে’ পরিণত হয়েছে: রেড ক্রস

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ শনিবার

কান আরো জানিয়েছে, স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ সক্রিয় রিজার্ভ সেনা।

আনাদোলুর একটি হিসাব অনুসারে, বৃহস্পতিবার থেকে এখন পর্যন্ত ছয়টি পিটিশন স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রথম চিঠিতে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর প্রায় এক হাজার সদস্য স্বাক্ষর করেছেন। পরে এতে ১ হাজার ইসরায়েলি শিক্ষাবিদ যোগ দিয়েছেন।

দ্বিতীয় পিটিশনে ইসরায়েলি সাঁজোয়া বাহিনী এবং নৌবাহিনীর কয়েকশ’ সদস্য; তৃতীয়টিতে কয়েক ডজন রিজার্ভ সামরিক চিকিৎসক; চতুর্থটিতে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা ইউনিট ৮২০০ এর কয়েকশ’ সদস্য, পঞ্চমটিতে প্রায় ১০০ সামরিক চিকিৎসক এবং সর্বশেষ ষষ্ঠটিতে বিশেষ এবং অভিজাত বাহিনীসহ বিভিন্ন ইউনিটের কয়েক’শ সদস্য স্বাক্ষর করেছেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বেশ কয়েকটি বিবৃতিতে যেকোনো পিটিশনে স্বাক্ষরকারী সক্রিয় সেনাদের বরখাস্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল।  তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এটি প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

গাজায় তাদের আচরণের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলাও চলছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ