রমজানে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থেকে নিন্মমুখী, আরো কমবে: বশিরউদ্দিন
Published: 12th, March 2025 GMT
রমজানে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থেকে নিন্মমুখী আছে দাবি করে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বরিশউদ্দিন বলেছেন, নিত্যপণ্যের বাজার সামনে আরো কমবে।
বুধবার (১২মার্চ) সন্ধ্যায় হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে ইফতার পরবর্তী ইমাম ও খতিবদের সমাবেশে যোগ দিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা একথা বলেন।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর সভাপতি মুহাম্মদ জুনায়েদ আল হাবিব ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলামীর বিভিন্ন স্তরের নেতা ও বিভিন্ন মসজিদের খতিব- ইমাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
আ.
ফারুকীকে উপদেষ্টা করায় হেফাজতের নিন্দা
অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “৫ আগস্টে যে ছাত্র-জনতার বিপ্লব হলো, তার পেছনে একটি বড় কারণ হলো সম্পদের বৈষম্য। এটি দূর করতে হবে আমাদের কর্ম ও নীতি নির্ধারণের মাধ্যমে। সম্পদের বৈষম্য দূর করতে ইসলামি মডেলের কর্জে হাসানা ও যাকাতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।”
“যাকাত সম্পদ ডিস্ট্রিবিউশনের একটি কার্যকর ইসলামি মডেল। যাকাত ব্যক্তির দায়- এটা কোনো চ্যারিটি নয়। যাকাত প্রদাণে ইমাম ও খতিবরা মানুষকে অনুগ্রাণিত করতে পারেন। এর মাধ্যমে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হবে, দারিদ্র্য কমে আসবে। যাকাত মজুতদারি নিরুৎসাহিত করে,” বলেন তিনি।
টিসিবি বছরে ১২ হাজার কোটি টাকার কার্যক্রম পরিচালনা করে বলে তুলে ধরে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, “এতে সরকারের ভর্তুকি সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। আমাদের অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতি সকল ক্ষেত্রে মারাত্মক দুর্নীতি হয়েছে বিগত সময়ে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টিসিবির কার্যক্রমেও চূড়ান্ত দুর্নীতি হয়েছে।”
টিসিবির কার্যক্রমে ধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ততা কামনা করে তিনি বলেন, “শুধু ইসলামের নয়, সকল ধর্মের নেতাদের প্রতি আহ্বান- আপনারা টিসিবির ১ কোটি প্রান্তিক পরিবারকে সঠিকভাবে বাছাই করতে সহযোগিতা করেন। আপনাদের মাধ্যমে সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।”
কোরবানির চামড়া সংরক্ষণ ও নায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “এবার সরকার মাদ্রাসা ও এতিমখানায় কোরবানির চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণ পৌঁছে দিবে। আপনাদের দায়িত্ব হবে চামড়া কোরবানির দিনেই বিক্রি না করে পরিষ্কার করে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করবেন। সাত দিন পরে বিক্রি করলে উপযুক্ত দাম পাবেন।”
চামড়াকে জাতীয় সম্পদ বর্ণনা করে তিনি বলেন, “এটা আমাদের মাদ্রাসা ও এতিমখানার আয়ের একটি বড় উৎস। চামড়া শিল্পের বিকাশে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যথাযথ উদ্যোগ নিচ্ছে।”
কোরবানির পরপরই ঢাকার বাইরের জেলা থেকে চামড়া ঢাকায় ঢুকলে সরবরাহ বেড়ে যায়, দামও কমে যায় বলে মন্তব্য করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “এবার যাতে এটা না হয়, সেটা নিশ্চিত করা হবে।”
ঢাকা/হাসনাত/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইফত র ব ণ জ য উপদ ষ ট ক রব ন র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মিদশার অবসান, ৩৩ হামলাকারীসহ নিহত ৫৮
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে জিম্মি ব্যক্তিদের উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। উদ্ধার অভিযানে ৩৩ হামলাকারীর সবাই নিহত হয়েছেন। এর আগে হামলাকারীরা ২১ যাত্রীকে হত্যা করেন। আর অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর চার সদস্য নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এসব তথ্য জানিয়েছে।
বুধবার আইএসপিআরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, অভিযানে ৩৩ সন্ত্রাসীর সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, চূড়ান্ত অভিযানের সময় কোনো যাত্রী নিহত হননি। তবে এর আগেই ২১ যাত্রীকে হত্যা করেন হামলাকারীরা।
আইএসপিআর পরিচালক বলেন, এ অভিযানে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, ফ্রন্টিয়ার কোর ও এসএসজি সদস্যরা অংশ নেন এবং জিম্মিদের উদ্ধার করেন। আত্মঘাতী হামলাকারীকে স্নাইপার সদস্যরা হত্যা করেন।
কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী ট্রেনে গত মঙ্গলবার দুপুরে হামলা চালায় সশস্ত্র একটি গোষ্ঠী। বেলুচিস্তানের বোলান এলাকার কাছে তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে যাত্রীদের জিম্মি করে। ওই সময় ট্রেনের নয়টি বগিতে প্রায় ৪৫০ জন যাত্রী ছিলেন। বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রগুলো জানায়, হামলাকারীরা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে ‘বিদেশি সহায়তাকারী’দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তাঁদের মধ্যে আফগানিস্তানে থাকা একজন ‘মাস্টারমাইন্ড’ রয়েছেন। এ ছাড়া তাঁরা ট্রেনে থাকা নারী ও শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। এ কারণে অভিযানে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।
এদিকে যাত্রীবাহী ট্রেনে ‘সন্ত্রাসী হামলার’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, এই পবিত্র রমজান মাসে নিরীহ যাত্রীদের লক্ষ্যবস্তু বানানো প্রমাণ করে, ওই সশস্ত্র ব্যক্তিদের ইসলাম, পাকিস্তান ও বেলুচিস্তানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্ধাপুর, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির (এএনপি) প্রেসিডেন্ট আমাল ওয়ালি খানও।