আসছে ঈদে মুক্তির মিছিলে রয়েছে প্রায় হাফ ডজন সিনেমা। নতুন করে যুক্ত হয়েছে মোশাররফ করিম অভিনীত ‘চক্কর ৩০২’, যা পরিচালনা করেছেন শরাফ আহমেদ জীবন। এটি নির্মাতার প্রথম সিনেমা।

সম্প্রতি এক ভিডিওতে নাটকীয় এক প্রমোশনাল ভিডিওর মাধ্যমে ‘চক্কর ৩০২’ ঈদে মুক্তির ঘোষণা দেন মোশাররফ করিম ও নির্মাতা জীবন।

ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ঘরে জীবনকে মুখ আঁটকে রেখে দড়ি দিয়ে বেঁধে চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়। সেখানে মোশাররফ করিম অনেকটা বিরক্ত হয়ে জীবনকে বলেন, তুমি অনেক যন্ত্রণা দিয়েছো আমাকে। এজন্য আটকে রাখা হয়েছে। বারবার জীবন তার বাঁধন খুলে দিতে বললে কোনোভাবে মোশাররফ করিম রাজি হন না। একপর্যায়ে মুখে লাগানো টেপ খুলে দিয়ে মোশাররফ করিম বলেন, সিনেমা রিলিজ দেয়া তোমার দায়িত্ব, দিচ্ছো না কেন? আমি অভিনেতা। সব কাজ করে দিয়েছি। এখন তুমি টিজার, গান রিলিজ আরও যা আছে সেগুলো দিচ্ছো না কেন?

শেষে মোশাররফ করিম জীবনকে আবার মুখ আটকে বলে দেন, ঈদে চক্কর রিলিজ হবে, প্রমোশন হবে সবই কিন্তু জীবন তোমার রিলিজ নাই।

মুক্তির আগে অভিনেতা ও নির্মাতার এমন ব্যতিক্রমী প্রমোশনাল ভিডিওতে নজর কেড়েছে। পরিচালক শরাফ আহমেদ জীবনের ভাষ্য, চক্কর’র মানবিক স্পর্শ ও থ্রিলার গল্পের ছবি। মানুষ দেখা শুরু করলে গুড এক্সপেরিয়েন্স পাবে।

‘চক্কর ৩০২’ সিনেমায় ইন্সপেক্টর মইনুল চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। সরকারি অনুদানে ও কারখানা প্রোডাকশন্সের প্রযোজনায় এর শুটিং হয়েছে। সহ-প্রযোজনায় গামাফ্লিক্স।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুত হবে, কঠোর হচ্ছে আইন: আসিফ নজরুল

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ধর্ষণ মামলার বিচার যাতে শুধু দ্রুতই নয়, বিচারটা যাতে নিশ্চিত হয় এবং যথাযথ হয় সে লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন কঠোর করা হচ্ছে।

সচিবালয়ে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বুধবার এ তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা। খবর বাসসের

ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় কমিয়ে অর্ধেক করতে সংশোধিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানান ড. আসিফ নজরুল। খসড়া আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের মামলা তদন্তের সময় ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন এবং মামলার বিচার কাজ শেষ হওয়ার সময় ১৮০ দিন থেকে কমিয়ে ৯০ দিন করা হচ্ছে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা গত পরশু (সোমবার) এবং গতকাল (মঙ্গলবার) সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে পরামর্শ সভা করেছি। আমরা একটা খসড়া (সংশোধিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন) আইন করেছি। সেটি আজ আমরা সার্কুলেট করছি কিছু কিছু স্টেক হোল্ডারের কাছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা আইনটি কঠোর করার চেষ্টা করবো। ধর্ষণের মামলার বিচার শুধু দ্রুত নয়, বিচারটা যাতে নিশ্চিত হয় এবং যথাযথ হয় আমি এগুলো তাদের বলেছি। বিচারক যদি মনে করেন তবে ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই মেডিকেল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে মামলার বিচারকাজ ও তদন্তকাজ চালাতে পারবেন এমন বিধান রাখা হচ্ছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।

আসিফ নজরুল বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে মেয়েদের অবিস্মরণীয় ভূমিকা ছিল। ফ্যাসিষ্ট হাসিনার বিরুদ্ধে বহু আন্দোলন হয়েছিল। তখন মেয়েরা নামেনি। এবার মেয়েরা নেমেছে। মেয়েরা নামলে তাদের পরিবারও নামে। ফ্যাসিবাদ পতনের চূড়ান্ত বিজয়ে মেয়েদের অবদান অবিস্মরণীয়।

তিনি বলেন, বিজয় পরবর্তী সময়ে আমাদের দেশে মেয়েদের আক্রমণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোষ্ঠী থেকে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়েও তাদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি।

মঞ্চের নেত্রীরা কর্মক্ষেত্র-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যৌন হয়রানি রোধে আলাদা সেল করার কথা বলেছেন জানিয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, এ বিষয়ে হাইকোর্টের একটি রায় রয়েছে। সেই রায়ের আলোকে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর কাজের জায়গায় নয়, রাস্তাঘাটে যাতে আমাদের মেয়েরা উত্ত্যক্ত ও হয়রানির শিকার না হন- সেরকম একটি কম্প্রিহেনসিভ আইন করার কথা দিয়েছি, বলেছি সিরিয়াসলি চিন্তা করব। হাইকোর্টের রায়ের আলোকে সেই আইনটা একটু জোরালোভাবে করার চেষ্টা করব।

এর আগে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের পক্ষ থেকে দেওয়া এ সংক্রান্ত স্মারকলিপিতে বলা হয়, আইন মোতাবেক ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড লিখিত থাকলেও তা কার্যকর করা হয় না। পূর্ববর্তী আলোচিত অনেক ধর্ষণের বিচার হয়নি। কারণ, ধর্ষণগুলো সংগঠিত হয়েছে সমাজের ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের দ্বারা। মোসারাত জাহান মুনিয়ার ধর্ষণ এবং হত্যার বিচার হয়নি, সোহাগী জাহান তনু ধর্ষণ এবং হত্যার বিচার হয়নি। র‌্যাব কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিন কর্তৃক গুম হওয়া ব্যক্তির স্ত্রীকে রোজা ভাঙিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যার বিচার হয়নি।

ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ৫ দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শিশুর মামলার ক্ষেত্রে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের মাধ্যমে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা এবং ১ মাসের মধ্যে মাগুরার শিশুটির ধর্ষকের বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ নিশ্চিত করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যেক ধর্ষণ মামলার বিচারে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত মামলার বিচারকার্য সম্পন্ন করে সব ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে ‘নারী ও শিশু নিপীড়নবিরোধী সেল’ গঠন ও সেলের কার্যকরিতা নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাইবার বুলিং সংক্রান্ত আইনের সংশোধন করে অপরাধের স্পষ্ট ও যথাযথ সংজ্ঞায়ন করতে হবে।

ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, আজ তারা আমাকে যেসব কথা বলেছেন, এগুলো আমার নিজেরও মনের কথা। সরকারের কাছে যে প্রত্যাশা, সেটা তারা তুলে ধরেছেন। আমি মনে করি, তাদের প্রতিটি দাবি যৌক্তিক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ