ডিমেনশিয়া রোগের আগাম সতর্কবার্তা দেবে এআই
Published: 12th, March 2025 GMT
মহাকাশে নতুন নক্ষত্র শনাক্ত করা থেকে শুরু করে মানবদেহের অনেক রোগ শনাক্তে বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এবার মস্তিষ্কের তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিক্ষয় রোগের আগাম উপসর্গ জানাতে সক্ষম এআই টুল তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ম্যাস জেনারেল বার্মিংহামের একদল গবেষক। নতুন এআই টুলটি ডিমেনশিয়া রোগের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্তের পাশাপাশি ভবিষ্যতে রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিতে পারে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
গবেষকদের তথ্যমতে, কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য ৬৫ বছরের বেশি বয়সী একদল নারীর পাঁচ বছরের ঘুমের তথ্য বা ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাফি (ইইজি) বিশ্লেষণ করতে দেওয়া হয়েছিল এআই টুলটিকে। এরপর তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে প্রায় ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রেই সঠিকভাবে ডিমেনশিয়া রোগের আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছে এআই টুলটি। আলঝেইমার্স ডিজিজ জার্নালে এই গবেষণা ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
এআই মডেলটি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের মস্তিষ্কের তরঙ্গে কোনো ধরনের পরিবর্তন এলে তা শনাক্ত করতে পারে। বিষয়টিকে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে মনে করছেন গবেষকেরা। কারণ, ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের কয়েক বছর আগে চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হলে সহজেই রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে গবেষক দলের সদস্য শাহাব হাগায়েগ জানিয়েছেন, এআই টুলটির মাধ্যমে ঘুমের সময় মস্তিষ্কের তরঙ্গের সূক্ষ্ম পরিবর্তন শনাক্ত করে ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার তথ্য জানা সম্ভব। শুধু তা–ই নয়, পরিধানযোগ্য ইইজি যন্ত্র বাড়িতে ব্যবহার করে রোগীদের ওপর নজর রাখার সুযোগও তৈরি হতে পারে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এআই ট ল
এছাড়াও পড়ুন:
চবিতে ধর্ষণবিরোধী মিছিলে নারী শিক্ষার্থীকে ‘ভুয়া’ বলে হট্টগোল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ধর্ষণবিরোধী সমাবেশে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ হট্টগোল হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে সমালোচনা করে বক্তব্য দেওয়া নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের প্রতিবাদে প্রথমে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছিল একদল শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদসহ বেশ কয়েকজন ফেসবুকে এটির প্রচারণা চালান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে জিরো পয়েন্টে এটি হওয়ার কথা ছিল। অন্যদিকে চলমান হেনস্তা ও ধর্ষণের শাস্তি ফাঁসির দাবিতে সাড়ে ছয়টার মশাল মিছিলের ডাক দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।
ছাত্রীদের এই মিছিলটি বিজয় চব্বিশ হলের (সাবেক জননেত্রী শেখ হাসিনা হল) সামনে থেকে শুরু হয়। পরে তারা প্রীতিলতা ও নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরী হল (সাবেক বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল) ঘুরে প্রীতিলতা হল সংলগ্ন জামাল নজরুল ইসলাম সড়কে আসে। আর ছাত্রদের মিছিলটিও জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে কাটা পাহাড় সড়ক হয়ে জামাল নজরুল ইসলাম সড়কে আসে। সেখান থেকে ছাত্র ও ছাত্রীদের মিছিলটি এক হয়ে দক্ষিণ ক্যাম্পাস ঘুরে আবার জিরো পয়েন্ট এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে সমাবেশ হয়। এতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এই বক্তব্য দেওয়া নিয়েই সেখানে হট্টগোল হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নয় ছাত্রীর বহিষ্কার নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা চলছে। বহিষ্কৃত ওই ৯ ছাত্রীর একজন ছিলেন সুমাইয়া শিকদার। তিনি সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার এক পর্যায়ে হট্টগোল শুরু হয়। সুমাইয়া শিকদার তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন।
এই সমালোচনার জেরে সমাবেশে অবস্থানকারী একটি অংশ ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেন। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ উপস্থিত অন্য শিক্ষার্থীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
জানতে চাইলে সমাবেশে থাকা ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আরমান হোসেন বলেন, সুমাইয়া শিকদার বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী। তাই তার বক্তব্য দেওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে কয়েকজন। আবার এটা ছিল এই ধর্ষণবিরোধী কর্মসূচি। সারাদেশে নারীদের নিরাপত্তার দাবিতে এই কর্মসূচি ছিল। এটি আমাদের ক্যাম্পাসের বিষয় ছিল না। এখানে একটা গোষ্ঠী ক্যাম্পাসের বিষয়গুলো এনেছে বলে আরেকটা গোষ্ঠী এর প্রতিবাদ করেছে।
এ বিষয়ে সুমাইয়া শিকদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ছাত্রীদের হানি ট্র্যাপার বলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। একজন প্রক্টর নারীদের ইঙ্গিত করে এই ধরনের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে আমি বিষয়টি বলতে যাচ্ছিলাম। তবে কথা শেষ করার আগেই একদল ইচ্ছাকৃভাবে হট্টগোল করেছে।