সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী ছিলেন বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের আইকন। উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি তুলনামূলকভাবে অল্প বয়সেই বৃহৎ বহুজাতিক কোম্পানির চাকরি ছেড়ে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন ব্যবসা ও পরিষেবা প্রতিষ্ঠায় সফলতা অর্জন করেন।

সফল ব্যবসায়ীর পাশাপাশি আরও যে কারণে তাঁকে স্মরণ করি তা হলো, তাঁর সঠিক কাজ করার প্রবণতা এবং বিষয়টি তাঁর চরিত্রের অন্যান্য দিক ছাপিয়ে যায়। তা সে ব্যবসায় হোক, সমাজে বা পরিবারে, সবখানেই তাঁর এই প্রবণতা দেখা যায়।

যে কাজেই তিনি হাত দিয়েছেন, সেই কাজেই তিনি সেরা নজির স্থাপন করেছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে তাঁর সাহস ও গতি ছিল, সেটাই ছিল তাঁর সফল প্রতিষ্ঠান নির্মাণের ভিত্তি। তাঁর চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে সমাজে, পরিবারে ও শিল্পে বড় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে।

সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী ছিলেন বাংলাদেশের ব্যবসায়িক জগতের মহিরুহ। তাঁর জীবন ছিল অনুসরণীয়। সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার পরাকাষ্ঠা ছিলেন তিনি। তাঁর মতো খুব বেশি মানুষ আমাদের দেশে খুঁজে পাওয়া যায় না। তিনি নিজে অফিস থেকে কিছু নিতেন না। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি টেলিফোন, কম্পিউটার বা গাড়ি কিছুই নেননি। নিজের প্রাপ্য গাড়ি ব্যাংকের আন্তর্জাতিক সহযোগীদের বা অতিথিদের ব্যবহারের জন্য দিয়ে রাখতেন। সেই গাড়ি ওভাবেই ব্যবহার করা হতো।

পরিচালনা পর্ষদে তিনি সবার মত শুনতেন। এরপর সবার বক্তব্যের সারসংক্ষেপ করে যে সিদ্ধান্ত নিতেন, সবাই তা মেনে নিতেন। এমনকি কোনো বৈঠক বা অনুষ্ঠানে আসতে দেরি হলে আগেই জানিয়ে দিতেন।

জীবনে কোনো দিন তিনি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাননি। নিয়মবহির্ভূত সিদ্ধান্ত নেননি। এসব ক্ষেত্রে তিনি বে–নজির। বাস্তবতা হলো, তাঁর মতো এ রকম শ খানেক মানুষ থাকলে বাংলাদেশ প্রকৃত অর্থেই সিঙ্গাপুর হয়ে যেত। করপোরেট সুশাসন ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে বিশ্বাস করতেন তিনি।

আনিস এ খান: সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশে যে মৌলবাদী প্রবণতা দেখছি, তা উদ্বেগের: জয়শঙ্কর

বাংলাদেশে যে মৌলবাদী প্রবণতা দেখছি, তা উদ্বেগের- এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বুধবার নয়াদিল্লির ভারত মণ্ডপে নিউজ১৮-এর ফ্ল্যাগশিপ রাইজিং ভারত সামিটে দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি। 

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হয়। বক্তৃতায় বৈঠকের বিষয়ে জয়শঙ্কর বলেন, বৈঠকে আমাদের প্রধান বার্তা- বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক ও অদ্বিতীয়। এটি জনগণের সঙ্গে জনগণের এবং আমি মনে করি, অন্য যে কোনো সম্পর্কের চেয়ে বেশি। এ সম্পর্ককে আমাদের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে যে বার্তা আসছে, দেশটিতে আমরা যে মৌলবাদী প্রবণতা দেখছি, তা উদ্বেগের। সংখ্যালঘু হামলা নিয়েও আমরা উদ্বিগ্ন এবং বৈঠকে উদ্বেগের বিষয়ে খুব খোলামেলা আলাপ হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, শিগগির বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশাবাদী। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য রয়েছে। গণতন্ত্রের জন্যই নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচনের মাধ্যমেই মনোনয়ন দেওয়া এবং তা নবায়ন করা হয়। আমরা আশাবাদী, তারা এ পথই অনুসরণ করবে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট জানায়, বক্তৃতায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কয়েক দশকের পুরোনো সম্পর্ক জনগণ ধরে রেখেছে। ভারতের চেয়ে অন্য কোনো দেশ বাংলাদেশের জন্য এত মঙ্গল চায় না। বিষয়টি ভারতের ডিএনএতেই রয়েছে। শুভাকাঙ্খী ও বন্ধু হিসেবে ভারত আশা করে, বাংলাদেশ সঠিক পথে চলবে; ঠিক কাজটি করবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশের ৭২% পরিবারে এখন স্মার্টফোন
  • বাংলাদেশে যে মৌলবাদী প্রবণতা দেখছি, তা উদ্বেগের: জয়শঙ্কর