চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক সময়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র ছিল শহীদ মোজাম্মেল কেন্দ্রীয় মিলনায়তন। তবে নান্দনিক স্থাপনায় সমৃদ্ধ এই মিলনায়তনটি কালের পরিক্রমায় এখন পরিত্যক্ত এক ভবনে রূপ নিয়েছে।

অনেকের কাছে ‘ভূতুড়ে অডিটোরিয়াম’ নামেই পরিচিত। তবে এবার ভবনটিকে সংস্কার করে একে ‘চবি জাদুঘর’ এর অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, ১৯৭৮ সালে সাংস্কৃতিক চর্চার লক্ষ্যে নির্মিত হওয়া চবির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের নকশাকার স্থপতি মাজহারুল ইসলাম। পরবর্তীতে, ১৯৮৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী এটি নতুনভাবে উদ্বোধন করেন এবং নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী মোজাম্মেলের নামে ‘শহীদ মোজাম্মেল অডিটোরিয়াম’ নামকরণ করেন । ওই সময় প্রায় ১ হাজার আসনবিশিষ্ট এ মিলনায়তনটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র।

আরো পড়ুন:

ভর্তির ৭ মাসেও পরিচয়পত্র পাননি চবি শিক্ষার্থীরা

ছাত্রশিবির অতিমাত্রায় পলিটিক্স পছন্দ করে না: নুরুল ইসলাম

তবে ১৯৯১ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে মিলনায়তনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তারপর থেকে এটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ হওয়ার ফলে এটি এখন পরিত্যক্ত ভবন! চারপাশে ঝোপঝাড়, ভেতরে স্যাঁতসেঁতে মেঝে আর পোকামাকড়ের বিচরণ এবং কিছু জায়গায় ভেঙ্গে পড়েছে দেওয়াল। দীর্ঘ ৩৪ বছরেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় এক সময়ের জমজমাট মিলনায়তনটি পরিণত হয়েছে ভূতুড়ে স্থাপনায়।

প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের দাবি, এভাবে অবহেলায় ফেলে না রেখে মিলনায়তনটি সংস্কার করা অথবা প্রয়োজনে নতুনভাবে বিনির্মাণ করে এটি দ্রুত চালু করা হোক। যাতে কেন্দ্রীয়ভাবে সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়।

ভবনটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু মোহাম্মদ মিরাজ বলেন, “দীর্ঘদিন প্রশাসনের সুদৃষ্টি না থাকায় ভবনটি বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রীয় মিলনায়তন হওয়ায় এটি একসময় সব অনুষদের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারত। জমজমাট থাকত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। এখন আমাদের সব অনুষ্ঠান অনুষদের মিলনায়তনে করতে হয়। একটি উন্মুক্ত মিলনায়তন থাকলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।”

মিলনায়তনটির ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.

মো. কামাল উদ্দিন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “শহীদ মোজাম্মেল অডিটোরিয়ামটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের সঙ্গে সুনিবিড়ভাবে জড়িত। সেদিন আমরা ভবনটি পরিদর্শন করে দেখেছি- এটি সংস্কার করে কাজে লাগানো সম্ভব। এর স্থাপত্যশৈলী খুবই নান্দনিক।”

তিনি বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অডিটোরিয়ামটিকে সংস্কার করে একে চবি জাদুঘরের একটি অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্তি করা।”

ভবনটির সংস্কারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজল জানান, “ভবনটি সংস্কার করা যাবে। তবে এজন্য বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ কনসালটেন্ট নিয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। তার ভিত্তিতে প্রশাসনিক নির্দেশনা পেলে সংস্কারের কাজ শুরু করতে পারব।”

ঢাকা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স স ক র কর

এছাড়াও পড়ুন:

জাদুঘরে রূপান্তর হবে চবির ‘ভূতুড়ে’ ভবন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক সময়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র ছিল শহীদ মোজাম্মেল কেন্দ্রীয় মিলনায়তন। তবে নান্দনিক স্থাপনায় সমৃদ্ধ এই মিলনায়তনটি কালের পরিক্রমায় এখন পরিত্যক্ত এক ভবনে রূপ নিয়েছে।

অনেকের কাছে ‘ভূতুড়ে অডিটোরিয়াম’ নামেই পরিচিত। তবে এবার ভবনটিকে সংস্কার করে একে ‘চবি জাদুঘর’ এর অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, ১৯৭৮ সালে সাংস্কৃতিক চর্চার লক্ষ্যে নির্মিত হওয়া চবির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের নকশাকার স্থপতি মাজহারুল ইসলাম। পরবর্তীতে, ১৯৮৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী এটি নতুনভাবে উদ্বোধন করেন এবং নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী মোজাম্মেলের নামে ‘শহীদ মোজাম্মেল অডিটোরিয়াম’ নামকরণ করেন । ওই সময় প্রায় ১ হাজার আসনবিশিষ্ট এ মিলনায়তনটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র।

আরো পড়ুন:

ভর্তির ৭ মাসেও পরিচয়পত্র পাননি চবি শিক্ষার্থীরা

ছাত্রশিবির অতিমাত্রায় পলিটিক্স পছন্দ করে না: নুরুল ইসলাম

তবে ১৯৯১ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে মিলনায়তনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তারপর থেকে এটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ হওয়ার ফলে এটি এখন পরিত্যক্ত ভবন! চারপাশে ঝোপঝাড়, ভেতরে স্যাঁতসেঁতে মেঝে আর পোকামাকড়ের বিচরণ এবং কিছু জায়গায় ভেঙ্গে পড়েছে দেওয়াল। দীর্ঘ ৩৪ বছরেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় এক সময়ের জমজমাট মিলনায়তনটি পরিণত হয়েছে ভূতুড়ে স্থাপনায়।

প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের দাবি, এভাবে অবহেলায় ফেলে না রেখে মিলনায়তনটি সংস্কার করা অথবা প্রয়োজনে নতুনভাবে বিনির্মাণ করে এটি দ্রুত চালু করা হোক। যাতে কেন্দ্রীয়ভাবে সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়।

ভবনটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু মোহাম্মদ মিরাজ বলেন, “দীর্ঘদিন প্রশাসনের সুদৃষ্টি না থাকায় ভবনটি বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রীয় মিলনায়তন হওয়ায় এটি একসময় সব অনুষদের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারত। জমজমাট থাকত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। এখন আমাদের সব অনুষ্ঠান অনুষদের মিলনায়তনে করতে হয়। একটি উন্মুক্ত মিলনায়তন থাকলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।”

মিলনায়তনটির ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “শহীদ মোজাম্মেল অডিটোরিয়ামটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের সঙ্গে সুনিবিড়ভাবে জড়িত। সেদিন আমরা ভবনটি পরিদর্শন করে দেখেছি- এটি সংস্কার করে কাজে লাগানো সম্ভব। এর স্থাপত্যশৈলী খুবই নান্দনিক।”

তিনি বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অডিটোরিয়ামটিকে সংস্কার করে একে চবি জাদুঘরের একটি অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্তি করা।”

ভবনটির সংস্কারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজল জানান, “ভবনটি সংস্কার করা যাবে। তবে এজন্য বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ কনসালটেন্ট নিয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। তার ভিত্তিতে প্রশাসনিক নির্দেশনা পেলে সংস্কারের কাজ শুরু করতে পারব।”

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ