রিজার্ভ চুরির ঘটনা পর্যালোচনায় আইন উপদেষ্টার নেতৃত্বে কমিটি
Published: 12th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা পর্যালোচনা করতে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে সভাপতি করে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি করেছে সরকার। ছয় সদস্যের এই কমিটি গঠন করে বুধবার (১২ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
কমিটিতে তিন মাসের মধ্যে সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.
কমিটিকে ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তকাজের অগ্রগতি ও এ বিষয়ে সরকারের নেওয়া অন্যান্য পদক্ষেপ পর্যালোচনা, এ ঘটনার দায়দায়িত্ব নির্ধারণ এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। কমিটি প্রয়োজনে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। এছাড়া প্রয়োজন অনুসারে সভা করতে পারবে কমিটি।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। স্থানান্তরিত এসব টাকা পাঠানো হয়েছিল ফিলিপিন্সে তিনটি ক্যাসিনোতে।
এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে ফিলিপিন্স সরকার বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দিলেও বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আর পাওয়া যায়নি।
রিজার্ভ চুরির তিন বছর পর ২০১৯ সালে ওই অর্থ উদ্ধারের আশায় নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই মামলা খারিজে আবেদন করে আরসিবিসি।
২০২২ সালের এপ্রিলে নিউ ইয়র্কের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলাটি খারিজ করে দেয়। রায়ে বলা হয়, ওই মামলা বিচারের ‘পর্যাপ্ত এখতিয়ার’ ওই আদালতের নেই।
এরপর বাংলাদেশ বাংকের পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্কের ‘এখতিয়ারভুক্ত’ আদালতে মামলা করা হয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল।
দেশের অভ্যন্তরেরই কোনো একটি চক্রের সহায়তায় এই অর্থ পাচার হয়েছে বলে তখন ধারণা করেছিলেন সংশ্লিষ্টরা।
পরে সিআইডির তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানসহ মোট ১৩ জন সরকারি কর্মকর্তাকে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করার কথা বলা হয়।
ওই বছরের ১৫ মার্চ রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা; অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের ওই মামলায় সরাসরি কাউকে আসামি করা হয়নি।
মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি। কিন্তু দফায় দফায় সময় নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি সংস্থাটি। আদালতে বারবার প্রতিবেদন জমা দিতে তারা সময় চাওয়ায় একের পর এক শুনানি পেছাচ্ছে। এরইমধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাও বদল হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে সরকারের পালাবদলের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুদক গত ৩১ ডিসেম্বর সিআইডিতে চিঠি দিয়ে মামলার তদন্তের দায়িত্ব চেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সিআইডির তরফে কিছু জানানো হয়নি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট তদন ত সরক র স আইড
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনা আলমকে যে প্রক্রিয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা ঠিক হয়নি: আইন উপদেষ্টা
মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। তবে যে প্রক্রিয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা ঠিক হয়নি বলে জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। রোববার সমসাময়িক ইস্যুতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮৮ মিলিয়ন ডলার চুরি হয়েছে। সেজন্য একটা রিভিউ কমিটি করা হয়েছে। যেখানে তিনি (আইন উপদেষ্টা) রয়েছেন। চুরি যাওয়া ৬৬ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার হয়েছে। বাকিটাও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, মূলত ২ বিলিয়ন ডলার চুরির পরিকল্পনা ছিল। আসলে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলার পরিকল্পনা ছিল তাদের। যারা এর সাথে জড়িত ছিল তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে।ও২
টাকা চুরির ঘটনায় সঠিক আইনগত বিষয় খতিয়ে দেখতে ডক্টর কামাল হোসেন কাজ করবেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে জানা যাবে। এ পর্যন্ত ৭ হাজার ১৮৪টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মাগুরার আছিয়ার মামলার চার্জশিট প্রস্তুত হয়েছে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আজকেই আদালতে দাখিল হবে চার্জশিট। এই বিচার অতি দ্রুত সময়ে শেষ করা হবে।