মা-ছেলে নিখোঁজ, অপরিচিত ব্যক্তি ফোনে বললেন ‘তারা ভালো আছেন’
Published: 12th, March 2025 GMT
রাজধানীর ওয়ারী থেকে এক নারী ও তার শিশুসন্তান রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছেন। তারা হলেন– লামিয়া তাসমেরী মুন (৩২) ও আহনাফ কবির ইনাফ (৭)। মঙ্গলবার দুপুরে ছেলেকে নিয়ে স্কুল থেকে বের হওয়ার পর আর তাদের সন্ধান মেলেনি। সন্ধ্যায় একটি মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল করে স্বজনকে বলা হয়, ‘তারা ভালো আছেন।’ এরপর সেই নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
লামিয়ার স্বামী হুমায়ুন কবির পুরান ঢাকার নবাবপুরে ইলেকট্রনিক সামগ্রীর ব্যবসা করেন। তিনি সমকালকে জানান, ওয়ারীর যুগীনগর লেনে পরিবারের সঙ্গে থাকেন লামিয়া। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ওয়ারী স্ট্রীটের তিন নম্বর গলির ইএলসি স্কুলে ইনাফের পরীক্ষা ছিল। এজন্য ছেলেকে নিয়ে তিনি স্কুলে যান। দুপুর ১২টায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর মা–ছেলে স্কুলের সামনে থেকে হেঁটে অদূরে চৌরাস্তা পর্যন্ত যান। এই দৃশ্য সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। তবে এরপর তারা কোন দিকে গেছেন, নাকি কেউ তাদের তুলে নিয়ে গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
হুমায়ুন কবির জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইফতারের আগে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি লামিয়ার মা মনোয়ারা বেগমকে কল করে বলেন, আপনার মেয়ে ও নাতি ভালো আছে। পরে সেই নম্বরটির ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হয়। দেখা যায়, বরিশালের হিজলার এক ব্যক্তির নামে সেটির নিবন্ধন রয়েছে। সেই ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জে শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা। তবে কলটি করা হয়েছে ডেমরার ডগাইর এলাকা থেকে। এ বিষয়ে ওয়ারী থানা পুলিশ ও র্যাবের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।
ওয়ারী থানার ওসি ফয়সাল আহমেদ সমকালকে বলেন, নিখোঁজ নারী–শিশুর সম্ভাব্য একটি অবস্থানের তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সেখানে অভিযান চালানো হচ্ছে। তাদের উদ্ধারের পর জানা যাবে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বান্দরবানে আদিবাসী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১
রোয়াংছড়ি উপজেলার খামতাম পাড়া এলাকায় খেয়াং সম্প্রদায়ের এক মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার সকালে রাস্তার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা অভিযুক্ত জামাল হোসেনকে (৩২) আটক করে এলাকাবাসীর কাছে সোপর্দ করে। পরে পুলিশ এসে থানায় নিয়ে যায়।
এলাকাবাসী জানায়, ১৬ বছর বয়সী খেয়াং কিশোরী মানসিক প্রতিবন্ধী। সে প্রতিদিন বিকেলে পাড়ার আশপাশে ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরে। প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার বিকেলে রোয়াংছড়ি-রুমা উপজেলা রাস্তায় ঘুরতে বের হয়। কিন্তু সেদিন কিছুটা রাত হলেও আর বাড়িতে ফেরেনি।
এলাকাবাসী আরও জানায়, ওই এলাকায় রোয়াংছড়ি-রুমা উপজেলা সংযোগ সড়কে নির্মাণ কাজ চলছে। সেখানে নিয়োজিত আছে ১৮-২০ জন শ্রমিক। সন্ধ্যার দিকে পাড়ার পাশে কবরস্থানের কাছাকাছি কিশোরীকে একা পেয়ে শ্রমিক মো. জামাল হোসেন ওই কিশোরীকে টেনে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। পরে রাত নামলে কিশোরীর চিৎকার শুনে পাড়াবাসী জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। কিশোরীর কথায় পাড়াবাসী নিশ্চিত হয় এক নির্মাণ শ্রমিক তাকে ধর্ষণ করেছে। এরপর রাতভর বেশ কয়েকজন মিলে জঙ্গলের ভেতরে খোঁজাখুঁজি করে কিন্তু অভিযুক্তকে পাওয়া যায়নি।
সড়কের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুইজন শ্রমিক বলেন, পাড়ার একটি মেয়েকে আমাদের একজন শ্রমিক ধর্ষণ করেছে বলে জানতে পেরেছিলাম। কিন্তু এ কাজ কে করেছে তা জানতাম না। পরে রাতে দেখি মো. জামাল হোসেন নামে এক শ্রমিক আমাদের সঙ্গে ঘুমাতে আসেনি। ভোরের দিকে কাজের জায়গায় অভিযুক্ত জামাল পৌঁছালে শ্রমিকরা সবাই মিলে তাকে আটক করে পাড়াবাসীর কাছে তুলে দেয়।
খামতাম পাড়ার কয়েকজন জানান, জামালকে পাওয়ার পর এলাকাবাসী তাকে মারধর করে। এরপর গলায় জুতার মালা পরিয়ে পুরো পাড়া তাকে ঘুরানো হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অভিযুক্ত জামালকে তাদের কাছে সোপর্দ করে।
রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি আশিকুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত জামালকে পাড়াবাসী পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। কিশোরীর ভাই বাদী হয়ে রোয়াংছড়ি থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে।