জামিন পেলেন অভিনেত্রী শমী কায়সার
Published: 12th, March 2025 GMT
হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় করা মামলায় অভিনেত্রী শমী কায়সার জামিন পেয়েছেন। তাঁর জামিন প্রশ্নে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন।
আদালতে শমী কায়সারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আনিসুল হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজিব ও জিসান হায়দার।
রায়ের পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজিব প্রথম আলোকে বলেন, রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্ট পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত সময়ের জন্য ওই মামলায় শমী কায়সারকে জামিন দিয়েছেন।
এর আগে ওই মামলায় নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন শমী কায়সার। এই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। এরপর আপিল বিভাগ চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টে এ–সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করতে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেন। এর ধারাবাহিকতায় রুলের ওপর শুনানি শেষে রায় দেওয়া হয়।
ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় একজন আহত হওয়ার ঘটনায় গত ২৯ অক্টোবর উত্তরা পূর্ব থানায় শমী কায়সারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলাটি করা হয়। পরে গত ৬ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে শমী কায়সারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু যৌন নিপীড়ন ধাপাচাপা দিতে সাংবাদিককে আইনজীবীর চাপ
মানিকগঞ্জে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিন বছরের শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতে সাংবাদকিকে চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল জজ কোর্টের আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুরের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১০ মার্চ) রাতে যৌন নিপীড়নের বিষয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে খোঁজ নিতে যান কয়েকটি মিডিয়ার সাংবাদিকরা। এর সত্যতা পেয়ে সাংবাদিকরা যখন ফিরে যাচ্ছিলেন সেসময় আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুর মুঠোফোনে ডিবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক সোহেল তালুকদারকে ফোন করে নিউজ না করতে চাপ প্রয়োগ করেন।
ফোনে আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুর বলেন, “নারী শিশু কোর্টের বিচারক অথবা টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারকে বলে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে। কোন মামলা যাতে না হয়, সেই বিষয়টিও আমি দেখছি।” বিষয়টি এত সহজে মীমাংসা করা যায় কিনা উল্টো প্রশ্ন করলে বিভিন্ন আইন দেখানোর চেষ্টা করেন তিনি।
এদিকে ঘটনার শাস্তি দাবি করলেও অস্বস্তি প্রকাশ করে সাংবাদিকদের সামনে আসেনি শিশুটির মা ও বাবা।
এর আগে গত শুক্রবার (৭ মার্চ) মানিকগঞ্জে বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে ওই শিশু ১৪ বছরের এক স্কুলছাত্রের মাধ্যমে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়। বিষয়টি ওই শিশুর মা টের পেয়ে টাঙ্গাইল চলে আসেন। রবিবার (৯ মার্চ) শিশুটিকে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে শিশুকে চিকিৎসক দেখার পর সোমবার (১০ মার্চ) উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে শিশুটিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
শিশুরটি মা বলেন, “বিয়ের অনুষ্ঠানের রাতে শিশুটির সাথে অন্যায় কাজ করা হয়। পরে মেয়ে আমাকে জানায় সে গোপনাঙ্গে ব্যাথা অনুভব করছে। পরে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারি আমার মেয়ের সাথে আমাদেরই আত্মীয়ের ১৪ বছরের একটি ছেলে খারাপ কাজ করেছে। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবেও অশান্তিতে আছি।”
এ বিষয়ে ডিবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক সোহেল তালুকদার বলেন, “বিজ্ঞ আইনজীবী ধর্ষকের পক্ষে একজন গণমাধ্যমকর্মীকে সংবাদ না করার জন্য হুমকি দিতে পারেন এটাই বিষ্মিত করেছে। তিনি এই ঘটনা মীমাংসা করতে পারেন কি না এমন কথায় ওই আইনজীবি বলেন, আদালতের জজ ও পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলে সমাধান করবেন তিনি।”
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে দায়িত্বরত নার্সরা জানায়, শিশুটির সাথে খুবই অন্যায় করা হয়েছে। ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য সোয়াব টেস্ট করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক ডা. সাদিকুর রহমান জানান, গোপানাঙ্গের বাইরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে এটিকে ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সোয়াব টেস্ট করা হয়েছে। সেটির রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
ঢাকা/কাওছার/এস