শাহরুখ খানের জন্য একবার মুম্বাইয়ে শত শত বিয়ে স্থগিত হয়ে যায়; কিন্তু কেন এমনটা ঘটেছিল? সেটা জানতে আপনাকে পিছিয়ে যেতে হবে আরও ২৪ বছর আগে। ২০০১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় শাহরুখ খান অভিনীত, সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত সিনেমা ‘দেববাস’। বিয়ে পেছানো–সংক্রান্ত ঘটনাটির সঙ্গে এ সিনেমার যোগ আছে।

সঞ্জয় লীলা বনসালির একটি ছবির জন্য মুম্বাইয়ের মতো শহরে শত শত বিয়ে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল।

‘দেবদাস’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নাগরিকদের উপাত্তের সংরক্ষণ ও সুরক্ষা দেওয়া ইসির কাজ নয়: ফয়েজ আহমদ

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নাগরিকের যে উপাত্ত আছে, তা মানসম্মত নয়। এমনকি নাগরিকদের উপাত্ত সংরক্ষণ ও সুরক্ষা দেওয়া ইসির কাজ নয়। তবে ইসি এত দিন যে দায়িত্ব পালন করেছে, তাতে তারা প্রশংসার দাবিদার। উপাত্ত কর্তৃপক্ষের অধীনে উপাত্ত সংরক্ষণ হলেও ইসির দায়িত্ব কমবে না।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ আহমদ এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্বের কোথাও ইসি দেশের নাগরিকদের উপাত্ত সংরক্ষণ করে না। তবে বাংলাদেশে এক ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে ইসি যে দায়িত্ব নিয়েছিল, তাতে তারা প্রশংসা প্রাপ্য। তিনি বলেন, উপাত্তের সংখ্যা না বাড়িয়ে মানের দিক থেকে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি সমন্বয় বাড়াতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, বর্তমান ইসি কি এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) থেকে উপাত্তকে সুরক্ষা দেওয়ার মতো যোগ্য? বা তার এই দায়িত্ব হওয়া উচিত? তাদের দায়িত্ব হচ্ছে, ভোটাধিকার সুরক্ষা ও বাস্তবায়ন করা। নাগরিকদের উপাত্ত সংরক্ষণ ও সুরক্ষা দেওয়া ইসির কাজ নয়। উপাত্ত কর্তৃপক্ষ হলে ইসির ক্ষমতা কমবে না, বাড়বে। তারা মানসম্মত ডেটা পাবে। তাদের গুরুত্বও বাড়বে।

বাংলাদেশে এত দিনেও ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন হয়নি উল্লেখ করে ফয়েজ আহমদ বলেন, সাবেক সরকারের সময়ে আইনের খসড়ায় উপাত্ত কর্তৃপক্ষ আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সরকারের ৫৮টি মন্ত্রণালয়ের কাজ একটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে রেখে দিলে তা একটা ব্লকের মধ্যে পড়ে যায়। তার জাতীয় চরিত্র থাকে না। বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু সংরক্ষণ, কার সঙ্গে কীভাবে শেয়ার করবে, তার যে নীতি থাকা দরকার ছিল, তা হয়নি। পাশাপাশি সমাজের অংশীদারদের মধ্যে যে বোঝাপড়া দরকার, তা তৈরি হয়নি।

বর্তমান সরকার একটি ডিজিটাল রূপান্তরের পথরেখা তৈরি করবে উল্লেখ করে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, তাতে বিদ্যমান সিস্টেমগুলোর মধ্যে ইন্টারকানেক্ট (ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরি) করা হবে। এরপর উপাত্ত সুরক্ষা আইনের অধীনে একটি উপাত্ত কর্তৃপক্ষ তৈরি করা হবে, যারা নিয়ন্ত্রক সংস্থা হবে। তাদের বিধি মেনে সবাই কাজ করবে। এখানে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে। উপাত্ত কর্তৃপক্ষ হলে একটি শৃঙ্খলা তৈরি হবে।

এ কাজের জন্য বিভিন্ন দেশের উদাহরণগুলো দেখা হচ্ছে উল্লেখ করে ফয়েজ আহমদ বলেন, যে মন্ত্রণালয় নাগরিককে সেবা দেয়, তার অধীনে ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার) থাকবে। তিনি বলেন, ‘আজকে নির্বাচন কমিশনের অধীনে ৩৫ ধরনের ডেটা আছে, ভোটের জন্য কি এটার দরকার আছে? তবে বলছি না, তাদের আইটি সেল বন্ধ করে দেব। তাদের কারিগরি সক্ষমতা নিয়ে নেব। ডেটা অথরিটির মাধ্যমে এটা নিয়ন্ত্রিত হবে। যার কাছে যেটা আছে, সেটা তো তার কাছেই থাকবে। যখন রূপান্তরের দরকার হবে, তখন কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের অধীনে আসবে।’

ফয়েজ আহমদ বলেন, ইসি ছাড়াও জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছে নাগরিকের ডেটাবেজ আছে। কিন্তু এগুলো বছর পার হলেও এদের মধ্যে কোনো ইন্টার-অপারেবিলিটি (আন্তক্রিয়াশীলতা) নেই। মানুষের তথ্য এখন ডার্কওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমান সরকার নাগরিকের উপাত্তের নিরাপত্তা ও মানসম্মত করার দিকে নজর দিচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ফয়েজ আহমদ বলেন, কেউ জন্ম নিলে তার নিবন্ধন হবে সিটি করপোরেশনে। এর বাইরে আর কোনো উপাত্ত সংগ্রহের পদ্ধতি থাকবে না। এরপর ডেটা হালনাগাদ হবে। তিনি আরও বলেন, উপাত্ত নিয়ে যে জঞ্জাল হয়েছে, তা যক্ষের ধনের মতো আঁকড়ে না ধরে সমস্যা স্বীকার করে তা সমাধানে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।

উল্লেখ্য, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা ইসির কাছে রাখার দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশে দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ইসি সচিবালয়, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও সারা দেশে ইসির মাঠপর্যায়ের কার্যালয়ে বেলা ১১টা থেকে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।

এখন অন্তর্বর্তী সরকার জন্মনিবন্ধন, এনআইডি ও পাসপোর্ট সেবা নিয়ে স্বতন্ত্র একটি কমিশন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এনআইডি সেবা নিজেদের হাতে রাখতে কর্মসূচি পালন করছেন ইসির কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ