নেত্রকোনায় শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে প্রতিবেশী তরুণসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 12th, March 2025 GMT
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় ১১ বছরের এক মেয়েশিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে প্রতিবেশী তরুণসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার পঞ্চম শ্রেণিপড়ুয়া মেয়েটি ইফতার শেষে সন্ধ্যায় ঘরের পাশে টয়লেটে যাচ্ছিল। এ সময় প্রতিবেশী তরুণ হবি মিয়া (১৯) মেয়েটির মুখ চেপে ধরে জোর করে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। মেয়েটির চিৎকার শুনে তাঁর মা এগিয়ে যান। পরে মা-মেয়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হবি মিয়া পালিয়ে যান। পরে হবির পক্ষ থেকে গ্রামের কয়েকজন বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন এবং বিষয়টি কাউকে না জানাতে ভয় দেখান। তবে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর গত সোমবার সন্ধ্যায় গ্রামের লোকজন হবির বাড়িতে গিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে দেন।
এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ‘তরুণের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, বাড়িতে তালা লাগিয়ে দিলেন গ্রামবাসী’ শিরোনামে প্রথম আলোর অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আজ সকালে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় অভিযুক্ত তরুণ হবি মিয়া, তাঁর ভাই, বাবা ও দুই চাচাকে আসামি করা হয়েছে।
মেয়েটির বাবা বলেন, তিনি দরিদ্র মানুষ। ঘটনার পর হবির বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের কাছে এ ঘটনার বিচার চান। তখন তাঁকে ভয়ভীতি দেখানো হয় এবং বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করা হয়। লোকলজ্জার ভয়ে তিনি বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। কিন্তু জানাজানি হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় গ্রামের লোকজন মিছিল নিয়ে হবির বাড়িতে গিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে অবশ্য তালা খুলে দেওয়া হয়। আজ তিনি মামলা করেছেন। মেয়ের ওপর নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, মেয়েটিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলার অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আরও পড়ুনতরুণের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, বাড়িতে তালা লাগিয়ে দিলেন গ্রামবাসী১১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় হাসপাতালের প্রিজন সেলে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে অন্য নেতাদের সাক্ষাতের অভিযোগ
আটকের পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ নেতা খালিদ আহমেদের সঙ্গে অন্য নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার দুপুরে প্রিজন সেলে সাক্ষাতের বিষয়টি জানাজানি হলে দ্রুত শটকে পড়েন নেতারা।
খালিদ আহমেদ খুলনার খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক। তিনি সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে নগরের খালিশপুর থানার পদ্মা অয়েল রোডের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে খালিদ আহমেদকে আটক করা হয়। অভিযানের সময় পালাতে গিয়ে বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে তিনি আহত হন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়। ওই প্রিজন সেলের মধ্যেই আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে খালিদ আহমেদের বৈঠক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) শামিম রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আপনারা যা শুনেছেন তা সত্য। আমি আসলে কিছু বলার জন্য রেডি না।’ এ কথা বলেই তিনি ফোন কেটে দেন। পরে ফোন দিলেও তিনি আর ধরেননি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নেতাদের সাক্ষাতের সময় প্রিজন সেলের গেটে তালা মারা ছিল। গেটে একজন পুলিশ সদস্যও দায়িত্বরত ছিলেন। আর ভেতরে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ওই বৈঠকে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে প্রিজন সেলের মধ্যে ও বাইরে ২০-২৫ জন আওয়ামী লীগ নেতাকে দেখা গেছে। ভেতরে পুলিশি পাহারায় আসামির সঙ্গে বসে গল্প করেন ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনাম মুন্সী। প্রিজন সেলের ভেতরেই খালিদ হোসেনের কক্ষে ছিলেন আত্মীয়স্বজন ছাড়াও বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। ব্যাপারটি জানাজানি হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতারা সেখান থেকে শটকে পড়েন।
খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, খালিদের বিরুদ্ধে বিএনপি অফিস ভাঙচুর ও নেতা–কর্মীদের মারধরের অভিযোগে খালিশপুর থানায় তিনটি এবং খুলনা সদর ও আড়ংঘাটা থানায় একটি করে মামলা রয়েছে। এনাম মুন্সীর বিরুদ্ধেও একাধিক নাশকতার মামলা রয়েছে। তাঁকে পুলিশ খুঁজছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি পড়েছে নগরের সোনাডাঙ্গা থানার মধ্যে। সেই হিসেবে সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে সোনাডাঙ্গা থানা–পুলিশ। সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনাটি শুনেছি। প্রিজন সেলে যিনি দায়িত্ব ছিলেন তিনি এসেছিলেন পুলিশ লাইন থেকে। এ কারণে ওই সময় কি ঘটেছিল তা বিস্তারিত বলতে পারব না। তবে ঘটনার পর সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে।’