সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খাদ্য প্রকৌশল ও চা প্রযুক্তি’ বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। এতে বিভাগটির পাঠদান কার্যক্রমে স্থবিরতা ও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

বিভাগের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাম পরিবর্তনের দাবিতে ৪ মার্চ বিভাগ কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না দেওয়ায় ৫ তারিখ থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। এতে বিভাগে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম বন্ধ আছে।

চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আনজুম বলেন, ‘আমাদের বিভাগের নামের সঙ্গে চা প্রযুক্তি সংযুক্ত থাকায় চাকরি কিংবা উচ্চশিক্ষার আবেদনে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই বিভাগের নাম খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি করার দাবি জানাচ্ছি। কর্তৃপক্ষ থেকে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত বা নথি না আসা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি চলমান থাকবে।’

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিবলী সাদিক বলেন, ‘আমাদের পাঠ্যসূচির ৯০ শতাংশই খাদ্যপ্রযুক্তি–সংক্রান্ত। মাত্র ১০ শতাংশে চা বিষয় যুক্ত আছে। সব বিষয়ই খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তির অধীন রাখা যায়। এর জন্য আলাদা শব্দ জুড়ে বিশেষায়িত করার কোনো প্রয়োজনীয়তা দেখছি না।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে চা প্রযুক্তি নামের নতুন বিভাগ যোগ করে, তা কৃষি অনুষদের অধীন রাখার মতো সুযোগ আছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিমত দিয়েছেন।
এ বিষয়ে খাদ্য প্রকৌশল ও চা প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান ওয়াহিদুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।

এদিকে বিভাগের নাম পরিবর্তনের বিষয়টির জন্য ১৮০তম একাডেমিক কাউন্সিলে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সহ–উপাচার্য সাজেদুল করিমকে সভাপতি ও সব অনুষদের ডিনদের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাঠানো হবে।

সাজেদুল করিম বলেন, ‘কমিটি বিভাগের পাঠ্যসূচিগুলো দেখবে। এখন যদি শুধু খাদ্যপ্রযুক্তি রাখা হয়, তাহলে এ অঞ্চলের চা–শিল্পের আলোকে চা প্রযুক্তি কীভাবে আলাদা করা যায় কিংবা আলাদা বিভাগ করা যায় কি না, সেটি নিয়েও পর্যবেক্ষণ করা হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ল স পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় হাসপাতালের প্রিজন সেলে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে অন্য নেতাদের সাক্ষাতের অভিযোগ

আটকের পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ নেতা খালিদ আহমেদের সঙ্গে অন্য নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার দুপুরে প্রিজন সেলে সাক্ষাতের বিষয়টি জানাজানি হলে দ্রুত শটকে পড়েন নেতারা।

খালিদ আহমেদ খুলনার খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক। তিনি সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে নগরের খালিশপুর থানার পদ্মা অয়েল রোডের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে খালিদ আহমেদকে আটক করা হয়। অভিযানের সময় পালাতে গিয়ে বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে তিনি আহত হন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়। ওই প্রিজন সেলের মধ্যেই আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে খালিদ আহমেদের বৈঠক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) শামিম রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আপনারা যা শুনেছেন তা সত্য। আমি আসলে কিছু বলার জন্য রেডি না।’ এ কথা বলেই তিনি ফোন কেটে দেন। পরে ফোন দিলেও তিনি আর ধরেননি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নেতাদের সাক্ষাতের সময় প্রিজন সেলের গেটে তালা মারা ছিল। গেটে একজন পুলিশ সদস্যও দায়িত্বরত ছিলেন। আর ভেতরে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ওই বৈঠকে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে প্রিজন সেলের মধ্যে ও বাইরে ২০-২৫ জন আওয়ামী লীগ নেতাকে দেখা গেছে। ভেতরে পুলিশি পাহারায় আসামির সঙ্গে বসে গল্প করেন ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনাম মুন্সী। প্রিজন সেলের ভেতরেই খালিদ হোসেনের কক্ষে ছিলেন আত্মীয়স্বজন ছাড়াও বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। ব্যাপারটি জানাজানি হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতারা সেখান থেকে শটকে পড়েন।

খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, খালিদের বিরুদ্ধে বিএনপি অফিস ভাঙচুর ও নেতা–কর্মীদের মারধরের অভিযোগে খালিশপুর থানায় তিনটি এবং খুলনা সদর ও আড়ংঘাটা থানায় একটি করে মামলা রয়েছে। এনাম মুন্সীর বিরুদ্ধেও একাধিক নাশকতার মামলা রয়েছে। তাঁকে পুলিশ খুঁজছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি পড়েছে নগরের সোনাডাঙ্গা থানার মধ্যে। সেই হিসেবে সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে সোনাডাঙ্গা থানা–পুলিশ। সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনাটি শুনেছি। প্রিজন সেলে যিনি দায়িত্ব ছিলেন তিনি এসেছিলেন পুলিশ লাইন থেকে। এ কারণে ওই সময় কি ঘটেছিল তা বিস্তারিত বলতে পারব না। তবে ঘটনার পর সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ