সারা দেশে স্বর্ণ ও জুয়েলারির দোকানে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও সশস্ত্র হামলার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। গত আট মাসে রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কমপক্ষে ১৭টি জুয়েলারি দোকানে এ ধরনের হামলা হয়েছে, যার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা জানমালের নিরাপত্তা প্রদানে সরকারের সহায়তা চেয়েছেন।

চুরি ও ডাকাতির ঘটনায় জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলেও সম্প্রতি সরকারের পদক্ষেপের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। খবর বিজ্ঞপ্তি

বাজুসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসেই সারা দেশে ১১টি জুয়েলারি দোকানে চুরি-ডাকাতি হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো গত ৩ জানুয়ারি সীমান্ত সম্ভার মার্কেটে ক্রাউন ডায়মন্ড অ্যান্ড জুয়েলার্স থেকে ১৫৯ ভরি সোনার অলংকার, ৯ জানুয়ারি সিলেটের নুরানী জুয়েলার্স থেকে ২৫০ ভরি সোনা, একই দিন ফরিদপুরের প্রগতি জুয়েলার্সে ভরদুপুরে চুরির চেষ্টা, ১২ জানুয়ারি পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ঐশী জুয়েলার্স থেকে ৬০ ভরি সোনার অলংকার ও নগদ ২ লাখ টাকা, ২৪ জানুয়ারি ঢাকার হাজারীবাগের ইতি জুয়েলার্স থেকে ৭০ ভরি সোনার অলংকার, ৯ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে ২৫ ভরি সোনা, ২০ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের পুষ্পিতা জুয়েলার্স থেকে ১৪ ভরি সোনা ও নগদ ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা ডাকাতি করা হয়।

এ ছাড়া গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বনশ্রীতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার সময় নিজ বাসার সামনে থেকে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ২০০ ভরি সোনা ও ২ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

বিবৃতিতে বাজুসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ বলেন, জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো বারবার অপরাধীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই সংকট সমাধানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায় নিরাপত্তার স্বার্থে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র দ্রুত ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি পুলিশি টহল ও সিসিটিভি নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করা জরুরি।

বাজুসের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, দিনদুপুরে ডাকাতি ও হামলার ঘটনায় ব্যবসায়ীরা অস্থির। সম্প্রতি মিরপুর-১০–এর শাহআলী প্লাজায় জুমার নামাজের সময় ১৪-১৫ সদস্যের ডাকাত চক্র তালা ভেঙে ডাকাতির চেষ্টা করে। এসব ঘটনায় বাজুস জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের আশপাশে পুলিশি টহল বৃদ্ধি, অপরাধীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণ ও ব্যবসায়ীদের জন্য পৃথক নিরাপত্তা নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে।

সরকারের গৃহীত সাম্প্রতিক নিরাপত্তা উদ্যোগের জন্য সংগঠনটি কৃতজ্ঞতা জানালেও বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করছে বাজুস।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় র

এছাড়াও পড়ুন:

নববর্ষের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ না পাওয়ার অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধীরা বলছেন, অপমানিত বোধ করেছি

জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ময়মনসিংহে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ না জানানোর অভিযোগ এনেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা ও মহানগরের নেতারা। আজ সোমবার সকাল ৮টার দিকে ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয় থেকে বর্ষবরণেল আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্যসচিব আলী হোসেন নিমন্ত্রণ পেয়ে অপমানিত বোধ করেছেন বলে জানান।

সকালে শোভাযাত্রা শেষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি আবু বকর সিদ্দিক, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ করেছেন, বর্ষবরণের এক জমকালো অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে নিমন্ত্রণ করা হয়নি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর শাখার নেতাদের। তারা জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে সমন্বয় করে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করা হয়েছে, অথচ তাদের কাউকেই বিষয়টি জানানো হয়নি। জেলা প্রশাসনের দাওয়াত না পেয়ে পরে আলাদাভাবে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান পালন করেন তারা। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ মহানগরের সদস্যসচিব আল নূর আয়াস বলেন, ‘জেলা প্রশাসন বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অথচ আমাদের কাউকেই জানানোর প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। জুলাই-আগস্টে রক্তের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা আমাদের বাদ দিয়ে সবাইকে নিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন।’ 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্যসচিব আলী হোসেন বলেন, ‘বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কাউকেই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। অনুষ্ঠানটি কিভাবে হবে, এটা জানতে আমি স্বপ্রণোদিতভাবে জেলা প্রশাসককে ফোন করি। তখন তিনি আমাদের অনুষ্ঠানে যেতে বলেন। কিন্তু আমাদের সহযোদ্ধারা এভাবে নিমন্ত্রণ পেয়ে অপমানিত বোধ করেন। তাই তারা কেউ অনুষ্ঠানে যায়নি।’ 

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, ‘বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে আমরা কাউকে অফিসিয়ালি দাওয়াত দেইনি। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সদস্যসচিবকে বলা হয়েছিল, সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য। ডিসির পক্ষে সবাইকে আলাদা আলাদা নিমন্ত্রণ করা সম্ভব না। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আরও অনেক অফিসার আছে। তারা সবাইকে দাওয়াত দিতে পারেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ