ডা. বাসেত বাদ, জামায়াতের নতুন প্রার্থী নিজামীপুত্র ব্যারিস্টার মোমেন
Published: 12th, March 2025 GMT
পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে দলটির সাবেক আমির ও সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে দলটির বিশেষ সভায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। এর আগে ওই আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির ডা.
রফিকুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর শাহাদাতের পর এখানে আমাদের দলের প্রার্থী নাজিবুর রহমান মোমেনই ছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের জুলুম নির্যাতনের কারণে মতিউর রহমান নিজামীর পরিবারের কোনো সদস্য দেশে থাকতে পারেননি। তাই মাঝখানে নির্বাচনের জন্য আমরা প্রার্থী করেছিলাম আব্দুল বাসেত খান ভাইকে। আবারও আমরা বিজয়ের সম্ভাবনাকে নিশ্চিত করতেই ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেনকে প্রার্থী করলাম। আমাদের দলের প্রার্থী হওয়া বা প্রার্থী করা কোনোটাই প্রার্থীর সাথে সম্পর্কিত নয়, সবকিছুই দলের সঙ্গে সিদ্ধান্ত।
সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর আগাম প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও দলের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনে দলের প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। এই আসনে এতদিন প্রচারণা চালাচ্ছিলেন বেড়া উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল বাসেত খান।
মতিউর রহমান নিজামীর দ্বিতীয় পুত্র মোমেন লন্ডন থেকে বার-অ্যাট-’ল ডিগ্রি নিয়ে ২০১০ সালে ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। পরে ২০১৬ সালের ১০ মে মধ্যরাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তার বাবা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের পর সরকারের নানা চাপে দেশত্যাগ করে লন্ডনে চলে যান। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
মতিউর রহমান নিজামীর ৬ সন্তানের মধ্যে নাজিবুর রহমান মোমেন দ্বিতীয়। বড় ছেলে ড. নাকিবুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের একটি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক। দ্বিতীয় আরেক সন্তান মোমেনের জমজ ভাই ডা. নাঈম খালেদ যুক্তরাজ্যে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। ছোট ছেলে নাদিম তালহা তুরস্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বড় মেয়ে ড. মহসিনা ফাতেমা মালেয়েশিয়া ও ছোট মেয়ে খাদিজা তাহেরা যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম প বন ১ ন জ ব র রহম ন ম ম ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু যৌন নিপীড়ন ধাপাচাপা দিতে সাংবাদিককে আইনজীবীর চাপ
মানিকগঞ্জে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিন বছরের শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতে সাংবাদকিকে চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল জজ কোর্টের আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুরের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১০ মার্চ) রাতে যৌন নিপীড়নের বিষয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে খোঁজ নিতে যান কয়েকটি মিডিয়ার সাংবাদিকরা। এর সত্যতা পেয়ে সাংবাদিকরা যখন ফিরে যাচ্ছিলেন সেসময় আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুর মুঠোফোনে ডিবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক সোহেল তালুকদারকে ফোন করে নিউজ না করতে চাপ প্রয়োগ করেন।
ফোনে আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুর বলেন, “নারী শিশু কোর্টের বিচারক অথবা টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারকে বলে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে। কোন মামলা যাতে না হয়, সেই বিষয়টিও আমি দেখছি।” বিষয়টি এত সহজে মীমাংসা করা যায় কিনা উল্টো প্রশ্ন করলে বিভিন্ন আইন দেখানোর চেষ্টা করেন তিনি।
এদিকে ঘটনার শাস্তি দাবি করলেও অস্বস্তি প্রকাশ করে সাংবাদিকদের সামনে আসেনি শিশুটির মা ও বাবা।
এর আগে গত শুক্রবার (৭ মার্চ) মানিকগঞ্জে বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে ওই শিশু ১৪ বছরের এক স্কুলছাত্রের মাধ্যমে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়। বিষয়টি ওই শিশুর মা টের পেয়ে টাঙ্গাইল চলে আসেন। রবিবার (৯ মার্চ) শিশুটিকে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে শিশুকে চিকিৎসক দেখার পর সোমবার (১০ মার্চ) উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে শিশুটিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
শিশুরটি মা বলেন, “বিয়ের অনুষ্ঠানের রাতে শিশুটির সাথে অন্যায় কাজ করা হয়। পরে মেয়ে আমাকে জানায় সে গোপনাঙ্গে ব্যাথা অনুভব করছে। পরে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারি আমার মেয়ের সাথে আমাদেরই আত্মীয়ের ১৪ বছরের একটি ছেলে খারাপ কাজ করেছে। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবেও অশান্তিতে আছি।”
এ বিষয়ে ডিবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক সোহেল তালুকদার বলেন, “বিজ্ঞ আইনজীবী ধর্ষকের পক্ষে একজন গণমাধ্যমকর্মীকে সংবাদ না করার জন্য হুমকি দিতে পারেন এটাই বিষ্মিত করেছে। তিনি এই ঘটনা মীমাংসা করতে পারেন কি না এমন কথায় ওই আইনজীবি বলেন, আদালতের জজ ও পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলে সমাধান করবেন তিনি।”
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে দায়িত্বরত নার্সরা জানায়, শিশুটির সাথে খুবই অন্যায় করা হয়েছে। ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য সোয়াব টেস্ট করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক ডা. সাদিকুর রহমান জানান, গোপানাঙ্গের বাইরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে এটিকে ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সোয়াব টেস্ট করা হয়েছে। সেটির রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
ঢাকা/কাওছার/এস