রাজধানীতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির আগে এখন থেকে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও ঠিকাদারদের ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অনুমতি নিতে হবে। এই শর্ত ভেঙে ঢাকা মহানগর এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার এ বিষয়ে ডিএমপি সদর দপ্তর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলীর স্বাক্ষর করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিছু সংস্থা বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনের বেলায় বিভিন্ন ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে থাকে, যা আবার মেরামত করতে অনেক সময়, সাত-আট মাস লেগে যায়। প্রায় সব ক্ষেত্রে যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি না করেই খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। সব খোঁড়াখুঁড়ির ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জায়গা কেটে ফেলা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির সময় ট্রাফিক সিগন্যালের জন্য দিকনির্দেশনা সংবলিত সাইনবোর্ড লাগানোর বিধান থাকলেও করা হয় না। এক লেনে খোঁড়াখুঁড়ি করে মাটি, আবর্জনা অন্য লেনে ফেলে রাখায় দুই লেনে যান চলাচলে ব্যাহত হয়। অনেক সময় একই রাস্তায় রাস্তার দুই পাশে খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়, ফলে রাস্তা উভয় দিক থেকে সরু হয়ে যায়।

ডিএমপি কমিশনারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিছু ক্ষেত্রে রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করলেও কাটা অংশ সঠিকভাবে ভরাট বা লোহার শিট না দেওয়ায় দিনে ওই রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়। অনেক ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী (তার, পাইপ ইত্যাদি) সংগ্রহ করার আগেই রাস্তা খনন করে দীর্ঘদিন ফেলে রাখে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ বা ডাইভারশনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয় না। এসব কারণে ঢাকা মহানগরের যানজট বেড়ে যাওয়ায় জনভোগান্তি সৃষ্টি হয় যানবাহন রাস্তায় অলস বসে থাকায় কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়।

ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাপারে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে ডিএমপি সদর দপ্তরের সম্মতি ছাড়া রাস্তা কাটাকাটি বা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু না করা। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে কোনো রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ না করা। এ ক্ষেত্রে রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করে সকালে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।

রাস্তা কাটার আগে যেসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে, সেগুলো হলো কাজ শুরু এবং শেষ করার সময় (অর্থাৎ কোন তারিখে কাজ শুরু এবং শেষ হবে তা) আগেরই ঘোষণা করতে হবে এবং সে সময়ের মধ্যে অবশ্যই কাজ শেষ করতে হবে। রাস্তা খননের স্থান ও এর আগে-পরে ২০০ মিটার পর্যন্ত যথাযথ ট্রাফিক নির্দেশনা এবং ট্রাফিক সিগন্যাল লাইট লাগাতে হবে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল অবশ্যই নিয়োগ করতে হবে। পথচারী ও যানবাহন চলাচলের জন্য অবশ্যই বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে।

ডিএমপির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কাটা রাস্তা ব্যবহারোপযোগী করার জন্য লোহার শিট রাস্তা কাটার আগেই সেখানে আনতে হবে। রাস্তার একটা লেন রাতে কাটা যেতে পারে, তবে সেটি অবশ্যই সূর্যোদয়ের আগেই ব্যবহারোপযোগী করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই একই রাস্তার উভয় পাশে একসঙ্গে খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না। ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের প্রতিনিধিসহ রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করতে হবে। কোনো রাস্তা রাতে সর্বোচ্চ সাত দিন খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করা যাবে এবং পরবর্তী তিন রাতের মধ্যে মেরামত করে দিতে হবে, এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চসংখ্যক শ্রমিক-টেকনিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা চেয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রতিষ্ঠান যদি রাস্তা কাটাকাটি-খোঁড়াখুঁড়ির এসব শর্ত ভঙ্গ করে ঢাকা মহানগর এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কাজ বন্ধ করাসহ ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এর আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে রোজার সময় ঢাকায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি না করার অনুরোধ জানিয়েছিল ডিএমপি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল র জন য ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

ভিসা আবেদনে আগের চেয়ে বেশি সংখ্যক পেমেন্ট নিচ্ছে থাই দূতাবাস

ভ্রমণপিয়াসুদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ড। দেশটির সৌন্দর্য উপভোগে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ সেখানে ভ্রমণে যান। তবে ভিসা পেতে অপেক্ষা করতে হয় লম্বা সময়। সেই ভোগান্তির কথা চিন্তা করে এবার বাংলাদেশিদের জন্য সুখবর দিল থাই কর্তৃপক্ষ।

দেশটির ঢাকাস্থ দূতাবাস জানিয়েছে, ভিসা আবেদনে আগের চেয়ে বেশি পেমেন্ট নিচ্ছে তারা। এর আগে বাংলাদেশিদের জন্য ই-ভিসা সুবিধাও চালু করে দেশটি।

আজ বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকাস্থ থাইল্যান্ড দূতাবাস।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি নাগরিকদের থাইল্যান্ড ভ্রমণে আগের চেয়ে বেশি পেমেন্ট নেওয়া হচ্ছে। আবেদনকারীরা নির্ধারিত কর্মদিবসে ভিসা আবেদনের পেমেন্ট করতে পারবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অধিক চাহিদার কারণে ভ্রমণের তারিখের কমপক্ষে ৪৫ দিন আগে আবেদন করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। আবেদনকারীদের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার আগে তাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ এবং ব্যক্তিগত তথ্য যেমন- নামের বানান, লিঙ্গ ও জন্ম তারিখ যাচাই করার পরামর্শ দিচ্ছে দূতাবাস। যেসব আবেদনকারীর পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের কম অথবা আবেদনপত্রে থাকা তথ্য পাসপোর্টের তথ্য থেকে আলাদা, তাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের সাধারণ পাসপোর্টধারীদের জন্য ই-ভিসা চালু করেছে থাইল্যান্ড। যার ফলে বাংলাদেশি সাধারণ পাসপোর্টধারীরা অনলাইনে আবেদন করে থাইল্যান্ডের ভিসা নিতে পারবেন। অনলাইনে থাইল্যান্ডের ভিসা নেওয়ার জন্য প্রথমে নিজের একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। তারপর আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। সেখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করতে হবে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসা ফি অনলাইনে জমা দিতে হবে। আবেদন সাবমিট করার পর ১০ দিনের মধ্যেই ই-মেইলে ভিসা চলে আসবে।

থাইল্যান্ড ভিসা নেওয়ার জন্য যেতে হবে এই লিংকে https://www.thaievisa.go.th/

সম্পর্কিত নিবন্ধ