রিয়াল জুজু তাড়াতে পারবে অ্যাতলেটিকো?
Published: 12th, March 2025 GMT
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভীষণ দুর্ভাগা অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। এই টুর্নামেন্টের নকআউটে কোনোভাবেই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে পেরে ওঠে না তারা। স্পেনের রাজধানীর এই দুই দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে নকআউটে এখন পর্যন্ত পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছে। প্রতিবারই জয় পেয়েছে রিয়াল।
এবার শেষ ষোলোর লড়াইয়ে সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রথম লেগে ২-১ গোলে জিতেছে রিয়াল। অ্যাতলেটিকোর মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে দিয়াগো সিমিওনির শিষ্যরা কী পারবে এই ব্যবধান ঘুচিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে! এজন্য ন্যূনতম দুই গোলের ব্যবধানে জিততে হবে তাদের।
রিয়াল মাদ্রিদ হলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজা। ১৫ বার তারা মর্যাদাপূর্ণ এ টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে। কিন্তু অ্যাতলেটিকো একবারও জিততে পারেনি। এর মধ্যে অ্যাতলেটিকোর জন্য সবচেয়ে যন্ত্রণার ছিল ২০১৪ ও ২০১৬ সালের ফাইনাল। ২০১৪ সালে লিসবনের ফাইনালে প্রথমার্ধেই দিয়াগো গডিনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল অ্যাতলেটিকো। ৯৩ মিনিটে সার্জিও রামোস হেড করে সমতা ফেরানোর পর অতিরিক্ত সময়ে গ্যারেথ বেল, মার্সেলো ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো গোল করলে ৪-১ ব্যবধানে জিতে রিয়াল।
দুই বছর পর মিলানে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র থাকার পর টাইব্রেকারে ৫-৩ ব্যবধানে জয় পায় রিয়াল। ফাইনালে সেটি ছিল অ্যাতলেটিকোর তৃতীয় হার। এর আগে ১৯৭৪ সালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ফাইনালে হেরেছিল স্পেনের ক্লাবটি।
২০১৭ সালে সেমিফাইনালে বার্নাব্যুতে ৩-০ গোলে হারার পর ঘরের মাঠে দ্বিতীয় লেগে ২-১ গোলে জিতেও বাদ পড়তে হয়। এ ছাড়া ২০১৫ সালে দ্বিতীয় লেগে ৮৮ মিনিটে গোল হজম করে ছিটকে যেতে হয়েছিল তাদের। এই আসরে দুই দলের প্রথম দেখা ১৯৫৯ সালে। সেমির প্লেঅফে ২-১ গোলে জিতেছিল রিয়াল।
পরাজয়ের এই বৃত্ত ভাঙতে মরিয়া অ্যাতলেটিকো বস দিয়াগো সিমিওনে, ‘আমাদের সমর্থকরা দারুণভাবে উৎসাহিত করছে। তারা আমাদের শক্তি জোগাচ্ছে, সাহস দিচ্ছে। এভাবেই তাদের পাশে চাই। আমাদের সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। আশা করছি, বুধবার আমাদের জন্য দারুণ একটি রাত হবে।’
কঠিন পরীক্ষা যে দিতে পারে সেটা রিয়াল বস কার্লো আনচেলত্তিও মানছেন, ‘ভীষণ কঠিন একটি রাত গেছে (বার্নাব্যুতে)। তাহলে চিন্তা করেন বুধবার কী হবে!’ প্রথম লেগে রিয়ালের দুই তারকা ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র কিছুই করতে পারেননি। তবে লা লিগায় ভায়েকানোর বিপক্ষে তারা দু’জনই গোল করেছেন। আর লা লিগায় গেটাফের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে অ্যাতলেটিকো।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবধ ন ফ ইন ল আম দ র প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
আইসিসির ৩৪ ট্রফির কয়টা কার শোকেসে
শুরুটা হয়েছিল ক্যারিবীয়দের দাপটে। গত শতকের সত্তরের দশকে ক্লাইভ লয়েড-ভিভ রিচার্ডসদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছিল প্রতিপক্ষের কাছে আতঙ্কের নাম। প্রথম দুই বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তাদের সেই জয়রথ থামিয়েছিল কপিল দেবের ভারত। সেই থেকেই ক্রিকেটের জোয়ার লেগেছিল ভারতে।
ওই প্রজন্মের পর ভারত সেটা ধরেও রাখা পারেনি। বরং অস্ট্রেলিয়ার চ্যাপেল ভাইদের রাজত্ব শুরু হয় তখন; যা কিনা পন্টিং, স্মিথদের হাত ধরে হালের কামিন্সরা ধরে রেখেছেন। মাঝে উত্থান দেখা যায় ইমরান খানের পাকিস্তান আর রানাতুঙ্গাদের শ্রীলঙ্কার। কিন্তু এই শতকের শুরুতে ক্রিকেটের নতুন বিশ্বায়নে আর্থিক ব্যাপারটি ভীষণভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়।
আইসিসি প্রতি বছর একটি করে টুর্নামেন্ট করার সিদ্বান্ত হলে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সঙ্গে যোগ হয় টি২০ বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। হিসাব বলছে সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত আইসিসির টুর্নামেন্ট হয়েছে ৩৪টি।
যার মধ্যে ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত মাত্র সাতটি, আর তারপর থেকে এখন পর্যন্ত মাঠে গড়িয়েছে ২৭টি। আর আইসিসির এ ট্রফির শোকসে সবচেয়ে সমৃদ্ধ অস্ট্রেলিয়া। সব ফরম্যাট মিলিয়ে তারা জিতেছে মোট ১০টি ট্রফি। তাদের ঠিক পেছনেই রয়েছে ভারত। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে তাদের মালিকানা সাতটিতে।
যার মধ্যে গত দেড় বছরে তারা জিতেছে দুটি মযার্দাপূর্ণ ট্রফি। রেকর্ড বলছে মহেন্দ্র সিং ধোনির অধিনায়কত্বে ভারত যেখানে জিতেছিল তিনটি ট্রফি, সেখানে রোহিত শর্মা জিতেছেন দুটি। কিন্তু কপিল দেবের পর ভারতীয় ক্রিকেটের শোকেসে একটা বড় শূন্যতা ছিল। সৈয়দ কিরমানি, রবি শাস্ত্রী, ভেঙ্গসরকার, শ্রীকান্ত, আজহার উদ্দিন, শচীন টেন্ডুলকার– তাদের কারো নেতৃত্বেই ভারত বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ জিততে পারেনি। বদলটা শুরু হয় সৌরভ গাঙ্গুলির হাত ধরে তাঁর সাহসী মানসিকতায়।
২০০২ সালে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। সৌরভের অধীনে মোট তিনটি আসরের ফাইনালে ওঠে ভারত। ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আর ২০০৩ বিশ্বকাপ জিততে পারেননি সৌরভ গাঙ্গুলি। ধোনির ভারত ফাইনালে উঠেছিল চারবার, যার মধ্যে শুধু ২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপ হেরেছিলেন। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে দুটি আসরের ফাইনালেই হেরে যায় ভারত।
২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের কাছে আর ২০২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিউজিল্যান্ডের কাছে। ফাইনালের এই ‘চোক’ চলেছিল রোহিতের সময়েও। ২০২৩ সালেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এবং বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরে যান রোহিত। অবশেষে কপাল খুলেছে তাঁর গতবছরের টি২০ বিশ্বকাপ আর এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে। সে কারণেই আইসিসির ট্রফির শোকেসে দ্বিতীয়তে এখন ভারত।
আইসিসি ট্রফির শোকেস:
অস্ট্রেলিয়া ১০টি : ১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭, ২০১৫, ২০২৩ (ওয়ানডে বিশ্বকাপ); ২০২১ (টি২০ বিশ্বকাপ), ২০০৬, ২০০৯ (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি), ২০২২ (বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ)।
ভারত ৭টি: ১৯৮৩, ২০১১ (ওয়ানডে বিশ্বকাপ), ২০০৭, ২০২৪ (টি২০ বিশ্বকাপ), ২০০২, ২০১৩, ২০২৫ (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫টি: ১৯৭৫, ১৯৭৯ (ওয়ানডে বিশ্বকাপ), ২০১২, ২০১৬ (টি২০ বিশ্বকাপ), ২০০৪ (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি)।
পাকিস্তান ৩টি: ১৯৯২ (ওয়ানডে বিশ্বকাপ), ২০০৯ (টি২০ বিশ্বকাপ), ২০১৭ (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি)।
ইংল্যান্ড ৩টি : ২০১৯ (ওয়ানডে বিশ্বকাপ), ২০১০, ২০২২ (টি২০ বিশ্বকাপ)।
শ্রীলঙ্কা ৩টি : ১৯৯৬ (ওয়ানডে বিশ্বকাপ), ২০১৪ (টি২০ বিশ্বকাপ), ২০০২ (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি)।
নিউজিল্যান্ড ২টি : ২০০০ (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি), ২০২১ (বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ)।
দক্ষিণ আফ্রিকা ১টি : ১৯৯৮ (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি)।