মাদারীপুরে পূর্ববিরোধের জেরে মসজিদে ঢুকে প্রকাশ্যে দুই ভাইসহ তিন হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্তসহ দুই আসামিকে পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। 

বুধবার (১২ মার্চ) ভোরে ঢাকার আশুলিয়া থানা এলাকার চিত্রাশাইলের কাঁঠালতলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে হোসেন সরদারকে (৬০) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৮ এবং র‌্যাব-৪ এর যৌথ দল। এছাড়া র‌্যাব-৮ শরীয়তপুরের পালং থানার আরিগাও এলাকা থেকে আরেক আসামি সুমন সরদারকে (৩৩) গ্রেপ্তার করে। 

বুধবার দুপুরে বরিশাল নগরীর রূপাতলীতে র‌্যাব-৮ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৮ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিডিয়া অফিসার অমিত হাসান। 

গ্রেপ্তার আসামির মধ্যে হোসেন সরদার (৬০) মাদারীপুরের খোয়ারজপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আছমত আলী সরদারের ছেলে। সুমন সরদার (৩৩) মাদারীপুরের বাবনাতলা গ্রামের হাছেন সরদারের ছেলে। 

এর আগে অবৈধভাবে বালু ব্যবসা ও ইজারা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে চলতি বছরের ৮ মার্চ সকালে গ্রেপ্তার আসামি হোসেন সরদারের নেতৃত্বে প্রায় দেড়শ’ ব্যক্তি তাদের কুপিয়ে হত্যা করে। হামলার সময় আসামিরা চারটি বাড়িতে অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট করে। 

এ ঘটনায় ৪৯ আসামির নামোল্লেখ ও ৮০ থেকে ৯০ জনকে অজ্ঞাতনামা করে মাদারীপুর সদর থানায় একটি মামলা করা হয়। 

র‌্যাব-৮ এর মিডিয়া অফিসার অমিত হাসান মামলার বরাতে বলেন, “মাদারীপুর সদর থানা এলাকার খোয়াজপুর ইউনিয়নের কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু ব্যবসা ও ইজারা নিয়ে হত্যার শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে পূর্ব বিরোধ ছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে আসামিরা চাপাতি, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, ছেনদা, লাঠিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভূক্তভোগী সাইফুল সরদারের বাড়িতে হামলা করে। 

‘ভিকটিম সাইফুল ও তার দুই ভাই প্রাণ রক্ষায় সরদার বাড়ি জামে মসজিদে আশ্রয় নেয়। তখন আসামি হোসেন সরদারের নির্দেশে সহযোগী সুমন সরদারসহ অন্যান্য আসামিরা মসজিদে ঢুকে ভূক্তভোগীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কোপায়। তারা সাইফুল সরদার ও তার ভাই আতাউর সরদারকে হত্যা করে এবং আরও কয়েকজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। 

‘স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফুল সরদার (৩৩) ও তার ভাই আতাউর সরদারকে (৩৫) মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়াও গুরুতর আহত অলিল সরদার, পলাশ সরদার ও তাজেল হাওলাদারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পলাশ সরদার (১৮) মারা যান।”

ঢাকা/পলাশ/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ স ন সরদ র ল সরদ র সরদ র র মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

বীমা খাতের উন্নয়নে আইডিআরএর সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি: ড. আসলাম

বীমা খাতের উন্নয়নে সংস্কার করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম বলেছেন, অনেক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধতা থাকায় আইডিআরএ তার ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারে না। 

এই খাতের উন্নয়ন করতে চাইলে আইডিআরএ-কে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে; ক্ষমতা প্রয়োগের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন ড. আসলাম আলম।

বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকার মতিঝিলে আইডিআরএ কার্যালয়ে ‘বীমা খাতের সংস্কার ও আমাদের করণীয় শীর্ষক সেমিনারে’ তিনি এসব কথা বলেন। 

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরাম (আইআরএফ) যৌথভাবে এই সেমিনার আয়োজন করে।

আইআরএফ সভাপতি গাজী আনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। জীবন বীমা খাত নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রগতি লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জালালুল আজিম এবং নন-লাইফ খাত নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেনা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শফিক শামীম।

সেমিনারে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য, লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমে বীমা খাত নিয়ে কাজ করা সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।

বীমা আইনকে অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ আখ্যায়িত করে আসলাম আলম বলেন, আইডিআরএ-কে দুর্বল করে বীমাকারীদের পক্ষে এই আইন করা হয়েছে। আইডিআরএ কাউকে সাসপেন্ড করলে তারা আদালতে গিয়ে স্টে অর্ডার নিয়ে পুনরায় ফিরে আসে। তাই ব্যাপকভাবে আইডিআরএ এর ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে তথ্যের প্রয়োজন। কিন্তু বীমা কোম্পানিগুলো সঠিকভাবে তথ্য প্রদান করতে চায় না। যেসব তথ্য দেয়, তা ফেব্রিকেটেড (জাল-জালিয়াতি) কিনা তাও নিশ্চিত নয়। 

তিনি বলেন, “ডিজিটালাইজেশন হলে ৮৫ শতাংশ অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা পদক্ষেপ নেই কিন্তু সহযোগিতা পাওয়া যায় না।”

আইডিআরএ চেয়ারম্যান আরো বলেন, আইএমএস যেটা ইউএমপি নামে পরিচিত ছিল, সেটা ১০টি সার্ভিস দিচ্ছে। বীমা কোম্পানিগুলো মনিটরিং করতে এসব তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আইএমএস-এ পূর্ণ তথ্য দিলে আইডিআরএ কাজ করতে পারবে।  কিন্তু বিআইএ এর নতুন কমিটি ঘোষণা দিয়েছে, তারা এটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে না।

আসলাম আলম বলেন, ডিজিটালাইজেশন ছাড়াও যদি যথাসংখ্যক জনবল থাকতো তাহলেও হতো। কিন্তু আইডিআরএকে স্বল্পসংখ্যক জনবল ও স্বল্প টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তবে বীমা খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়েই কাজ চলছে। এজন্য সময় লাগবে, রাতারাতি সম্ভব নয়।

গ্রাহকদের বকেয়া বীমা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, উল্লেখযোগ্য শেয়ারহোল্ডারের সম্পদ বিক্রি করে দাবি পরিশোধের ক্ষমতা আইডিআরএ এর নেই। এ জন্য আদালতে যেতে হয়। এরইমধ্যে কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু মামলা চলমান আছে। 

তিনি আরো বলেন, অনিষ্পন্ন বীমা দাবি পরিশোধ না হলে বীমার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে না। সুশাসন কায়েম হলে আস্থা বাড়বে।

ঢাকা/এনএফ/এনটি/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ