লাকি আক্তারের গ্রেপ্তার দাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 12th, March 2025 GMT
রাজধানীতে পুলিশের উপর হামলার প্রতিবাদ এবং গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লাকি আক্তারের গ্রেপ্তার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিবাগত মধ্য রাতে তারা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। রাইজিংবিডি ডটকমের বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)
আরো পড়ুন:
রাবিতে শিবির-ছাত্রদল এক মঞ্চে
রাবিতে ছাত্রশিবিরের কোরআন বিতরণ কর্মসূচি
ঢাবি শিক্ষার্থীরা রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বেশি চত্বর ও টিএসসি হয়ে শাহবাগে এসে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। মিছিলের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লাকি আক্তারকে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন তারা।
এ সময় তারা ‘জুলাইয়ের বাংলায়, শাহবাগের ঠাঁয় নাই’, ‘ল তে লাকি, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’, ‘শা তে শাহবাগী, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’, ‘শাহবাগীরা হামলা করে, ইন্টেরিম কী করে’, ‘কাফন লাগলে কাফন নে, শাহবাগের কবর দে’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, লাকি কেন বাহিরে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
অন্তর্বর্তী সরকারকে হুমকি, দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ ও দায়িত্বরত পুলিশের উপর হামলার প্রতিবাদে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণঅভ্যুত্থান মঞ্চ।
মিছিল থেকে তারা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে ২০১৩ সালে শাহবাগে গড়ে ওঠা প্ল্যাটফর্ম ‘গণজাগরণ মঞ্চের’ আলোচিত মুখ লাকি আক্তারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান। এছাড়াও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সূচনাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।
রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক ও আবাসিক হল প্রদক্ষিণ শেষে একই জায়গায় এসে মিলিত হন।
এ সময় ‘শাহবাগীদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ল তে লাকি, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’, ‘শ তে শাহাবাগী, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’, ‘শাহাবাগির বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘শাহবাগিদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, শাহাবাগীদের বিচার চাই’, ‘শাহাবাগীরা হামলা করে, ইন্টেরিম কী করে?’, ‘উদ্যানের গাজাখোর উদ্যানে ফিরে যা’, ‘১৩ আর ২৫, এক নয় নয়’, ‘শাহাবাগ না শাপলা, শাপলা শাপলা’, ‘হলে হলে খবর দে, শাহবাগীদের কবর দে’, ‘জুলাইয়ের বাংলায়, শাহাবাগীদের ঠাই নাই’, ‘২৪ এর বাংলায়, শাহাবাগিদের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)
মব সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এবং শাহবাগের জুডিশিয়াল কিলিং এর বিচার দাবিতে রাত ২ টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জাবি শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার বটতলায় ফিরে আসে। পরবর্তীতে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করা হয়। মিছিলে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
বিক্ষোভ মিছিলে ‘সন্ত্রাস করে একদল, শাহবাগী মবের দল’, ‘শাপলা হত্যার বিচার চাই, করতে হবে করতে হবে’, ‘ল তে লাকী, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’, ‘শাহবাগীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘শাহবাগ সন্ত্রাস করে, ইন্টেরিম কি করে’, ‘শাহবাগের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘শাহবাগের বিরুদ্ধে, আগুন জ্বালো একসাথে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)
গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক লাকি আক্তারকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা। রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে ফিরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্র ইউনিয়নে সাবেক নেত্রী লাকীকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘১৩ এর খুনিরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘শাহবাগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘ল তে লাকি, তুই হাসিনা, তুই হাসিনা’, ‘শহীদেরা দিচ্ছে ডাক, শাহবাগ নিপাত যাক’, ‘ওয়ান, টু, থ্রি, ফোর, শাহবাগ নো মোর’, ‘শাহবাগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
ঢাকা/সৌরভ/আহসান/লিমন/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সম্মেলনে ৩১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে: বিডা চেয়ারম্যান
ঢাকায় চার দিনের সম্মেলনে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
তিনি বলেন, খরচের হিসাব দিয়ে সামিটকে মূল্যায়ন করা যাবে না। বিনিয়োগের সব ক্রেডিট এই সামিটের নয়, এটা আগে থেকে চলতে থাকা আলোচনার ভিত্তিতে হয়েছে। সামিটে এসেই বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে দেবেন, বিষয়টি এমন নয়। তাই এটাকে সামিটের সফলতা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ৪ দিনের ওই সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনের বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, বিডার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ এসেছে। সরকারি খরচ হয়েছে দেড় কোটি টাকা। তবে খরচের হিসাব দিয়ে সামিটকে মূল্যায়ন করা যাবে না। বিনিয়োগের সব ক্রেডিট এই সামিটের নয়, এটা আগে থেকে চলতে থাকা আলোচনার ভিত্তিতে হয়েছে। চারদিনের সামিটে এসে কেউ ১০০ কোটি টাকার চেক লিখে ফেলবে, বিষয়টি এমন নয়। তাই এটাকে সামিটের সফলতা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। সামিটের খরচ দিয়ে বিনিয়োগের পরিমাণ বিচার করলে হবে না।
তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ফ্যাক্টরি ভিজিট করিয়েছি। ফ্যাক্টরি করতে হলে কোথায় যেতে হবে, তাদের দেখানো হয়েছে। সম্মেলনে এসে বিনিয়োগকারীরা খুব খুশি হয়েছেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য খাবারের ম্যানু থেকে আমরা যেন আগেই বাদ না পড়ে যাই। আমরা একইসাথে সংস্কারের কাজ করব, আর বিনিয়োগের পাইপলাইন বিল্ডিং-এর কাজ করে রাখব।
বিডার চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ১০-এ ১০ পাওয়ার মতো সামিট হয়নি। যত সফলতা আছে তা সবার। ব্যর্থতা বিডা ও বেজার। প্রতিবছর এ ধরনের সামিট হতে পারে। এ ধরনের সিমিলার ইভেন্ট পরবর্তীতে বা পরবর্তী সরকার করবে বলে প্রত্যাশা করি।
তিনি আরো জানান, বিনিয়োগের পাইপলাইন ঠিক রাখতে বিনিয়োগ সম্মেলনে আসা সবাইকে থ্যাংক ইউ মেইল পাঠানো হবে। তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা হবে।
বিডার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, উদ্বোধনী সামিটে ৭৫০ জন অংশ নেয়। এর মধ্যে ৪১৫ জন বিদেশি ছিল। পুরো সম্মেলনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেয়। স্পিকার ও প্যানেলিস্ট ছিল ১৩০ জন।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ