কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের নলচরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীপথে চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল্লাহ রবি ও একই ইউনিয়নের বিএনপির সহ-সভাপতি বারেক প্রধান গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে মেঘনা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসনাত প্রধানসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০-২৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষের আগে তারা একই গ্রুপে ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা ও মেঘনা উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি মাহবুবা ইসলাম মিলি সমকালকে বলেন, রবি ও বারেকের নেতৃত্বে এই গ্রুপটি দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীপথে চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত ছিল। সম্প্রতি এই অবৈধ অর্থের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। এর জের ধরেই কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং মঙ্গলবার রাতে সংঘর্ষ বাঁধে। এখন তারা দুই গ্রুপ হয়ে গেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সংঘর্ষের সময় উভয়পক্ষ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ বেশ কিছু সময় ধরে চলে।

চালিভাঙ্গার ইউনিয়নের রামপ্রসাদেরচর গ্রামের কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবদলের সদস্য মহসিন সমকালকে জানান, অবৈধ বালুর টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। 

নলচর গ্রামটি মূল সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় আহতের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। প্রকৃত আহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংঘর্ষের বিষয়ে বক্তব্য নিতে রবিউল ইসলাম রবি ও বারেক প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল বলেন, দুুই পক্ষের আহত লোকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তারা একই সঙ্গে চলাফেরা করে। ওদের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগেছে, মারামারি হয়েছে। উভয়পক্ষের ২০-২৫ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত হ মন স ঘর ষ র

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলের কালিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা (৫০) নামে একজন নিহত হয়েছে। নিহত ফরিদ মোল্যা কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত সুরত মোল্যার ছেলে। 

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে। 

পুলিশ ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদ মোল্যাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান। 

এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে বশির মুন্সি নামে আরেকজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।  

জানা যায়, উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ইতোপূর্বে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে  দু’পক্ষের মধ্যে। এ নিয়ে থানায় উভয়পক্ষের একাধিক মামলাও রয়েছে। ঈদের দিন থেকেই গ্রামটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। নিহত ফরিদ মোল্যা আফতাব মোল্যা গ্রুপের সমর্থক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকালে মিলন মোল্যা পক্ষের সানোয়ার রহমান নড়াইল আদালত থেকে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে একা পেয়ে আফতাব মোল্যার লোকজন মারপিট করে। এ ঘটনার জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মিলন মোল্যা পক্ষের লোকজন আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে  উভয়পক্ষ স্কুল মাঠে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘণ্টাব্যাপি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। 

আফতাব মোল্যা পক্ষের আহতদের মধ্যে রয়েছেন- করিম মুন্সি (৪৯), হুসাইন শেখ (১৮), আশরাফ মোল্যা (৫০), বশির মুন্সি (৪৫), করিম মুন্সী (৩৭), জালাল মুন্সি (৪৭), নাহিদ মোল্যা (২৫), করিম মোল্যা (১৬), সহিদ মুন্সি (৪০)। 

মিলন মোল্যা পক্ষের দের মধ্যে রয়েছেন- তৌহিদ মোল্যা (৫০), আলমিস শেখ (৩৫) নিরব মোল্যা (১২), হাসিব মোল্যা (১৫), কিবরিয়া শেখ (২৮), ওসমান মোল্যা (১৫), কামাল কাজী (৪০), তরিক শেখ (২৪), জাকারিয়া শেখ (২৫) ও দিদার শেখ (১৮), হুমায়ন কাজী (৩৫), ওহাব কাজী (৪৫), পিয়ার মোল্যা (৩৪)। 

ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে কালিয়া থানায় হন্তান্তর করে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে  কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, “এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/শরিফুল/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নড়াইলের কালিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
  • হাট ইজারা নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৯
  • বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাত শক্তিশালী করতে যুক্তরাজ্যের ঘনিষ্ঠ স
  • উখিয়ায় সংঘর্ষ, মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৪