বাজারের বেশির ভাগ ফলেই কীটনাশক ব্যবহৃত হয়। এই কীটনাশক ব্যবহৃত হয় মূলত ফলকে পোকামাকড়, জীবাণু, ইঁদুর ও আগাছা থেকে রক্ষা করতে। তবে এসব কীটনাশক মারাত্মক ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন কীটনাশকযুক্ত খাবার খেলে কিডনি, লিভার ও স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়। অনেকে মনে করেন, ফলের খোসা ছাড়িয়ে নিলে কীটনাশক আর থাকে না। কথাটি সত্য হলেও খোসার মধ্যেই থাকে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। যেমন ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ। তাই খোসা ছাড়িয়ে না খেয়েও সহজ উপায়ে বিষ বা কীটনাশক দূর করা গেলে সেটাই হবে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।

আরও পড়ুনযে দশ ফল খেলে ওজন বাড়ে২১ মে ২০২৪বেকিং সোডার কার্যকর ব্যবহার

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, বেকিং সোডা ও পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে ফল ও সবজির খোসায় থাকা প্রায় সব বিষ বা কীটনাশক দূর করা সম্ভব। এক গবেষণায় দেখা গেছে, আপেলকে বেকিং সোডাযুক্ত পানিতে ১২-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে এতে থাকা বিষ বা কীটনাশক দূর হয়। এই পদ্ধতি আপেলের মতো অন্যান্য ফল ও সবজির জন্যও কার্যকর হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।

আরও পড়ুনভুঁড়ি কমাতে সাহায্য করবে সহজলভ্য এই ৭ ফল১৪ অক্টোবর ২০২৪যেভাবে বেকিং সোডা ব্যবহার করবেন

এক লিটার পানিতে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন।

এই মিশ্রণে ফল ও সবজি ১২-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।

এবার ভালোমতো ধুয়ে নিন পরিষ্কার পানিতে।

সহজ এই পদ্ধতি অনুসরণ করলেই আপনি মোটামুটি নিশ্চিত যে খাওয়ার ফল ও সবজি অনেক বেশি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর হবে।

সূত্র: হেলথলাইন

আরও পড়ুনপেট ফাঁপা কমাতে যে ৫টি ফল খাবেন০৭ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

নদীতে ফুল ভাসিয়ে পাহাড়ে বর্ষবরণ উৎসব শুরু

দেশের সমৃদ্ধি, পার্বত্য চট্টগ্রামের সুখ শান্তি ও মঙ্গল কামনা করে নদীতে ফুল নিবেদনের মধ্য দিয়ে আজ শনিবার থেকে তিনদিনব্যাপী পাহাড়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু-বিষু-বিহু সাংক্রাইন, সাংক্রান, পাতা’র আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। ভোরে শিশু ও নারী-পুরুষ ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে গঙ্গা মা’র উদ্দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে পানিতে কলাপাতায় ফুল নিবেদন করেন। 

শনিবার প্রথম দিন ফুল বিজুর দিনে বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু-বিষু-বিহু সাংক্রাইন, সাংক্রান, পাতা- উদযাপন কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটিতে কেন্দ্রীয়ভাবে সকাল ৭টায় রাজ বন বিহার পূর্বঘাটে পানিতে ফুল নিবেদন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার। এ সময় উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে একটি নৃত্য পরিবেশন করা হয়। পরে শোভাযাত্রাসহ ঘাটে গিয়ে  পানিতে ফুল নিবেদন করা হয়। এ সময় শিশুসহ নারী-পুরুষ অংশ নেন। 

এছাড়া পৃথকভাবে রাঙামাটি শহরে কোরানী পাহাড়, আসামবস্তি, গর্জনতলীসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানিতে ফুল নিবেদন করেছেন পাহাড়ি সম্প্রদায়ের লোকজন। শহরের কোরানী পাহাড় এলাকায় ভোর থেকে শতশত নারী-পুরুষ ঐতিহ্যবাহী নিজস্ব পোশাকে কলাপাতায় করে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল নিবেদন করেছেন। তারা জানিয়েছেন, উৎসবের প্রথম দিনে ফুল বিজুতে পুরাতন বছরের সমস্ত দুঃখ,কষ্ট, গ্লানি বেদনা, ভয়, অন্তরায় উপদ্রবকে মুছে ফেলে দিয়ে নতুন বছর যাতে সুখ-শান্তি, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি যেন অনাবিল শান্তি বয়ে আনে সেই উদ্দেশ্য নিয়ে কলাপাতার মাধ্যম নদীতে গঙ্গা মা’র উদ্দেশ্যে ফুল নিবেদন করেছেন। ফুল বিজুর দিনে ফুল দিয়ে বাড়ির ঘর সাজায়, ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে। তরুণ-তরুণীরা পাড়ায় পাহাড় বৃদ্ধদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্নান করায়। সন্ধ্যায় বৌদ্ধ মন্দির, নদীর ঘাটে, বাড়িতে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করে থাকে। 

আগামীকাল রোববার উৎসবের দ্বিতীয় দিন মূল বিজু। এ দিনে বাড়িতে বাড়িতে শুধু চলে খাওয়া-দাওয়ার পর্ব ও আনন্দ-ফুর্তি। ৩০ থেকে ৪০ প্রকারের তরকারি দিয়ে রান্না করা হয় ঐতিহ্যবাহী পাজন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উষাতন তালুকদার বলেন, আগামী দিনে একে অপরকে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতির স্থায়ী একটি সমাধান এবং উপনিবেশিক শোষন বন্ধ করে আগামী দিনের নতুন সুন্দর ভষিব্যৎ কামনা করেন তিনি। 

পুরাতন বছরের দুঃখ কষ্ট ও গ্লানি মুছে ফেলে নতুন বছরে নব উদ্যোগের শুভকামনা জানাতে বাংলা বর্ষের শেষ দুইদিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এ উৎসব পালন করে থাকে পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ১৩ ভাষাভাষী ১৪টি ক্ষুদ্র পাহাড়ি জাতিসত্ত্বার বসবাস। এসব জাতি গোষ্ঠীদের রয়েছে ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব হিসেবে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু, সাংক্রাই, পাতা। তবে এ উৎসবকে চাকমা সম্প্রদায় বিজু, মারমারা সাংগ্রাই, ত্রিপুরা বৈসু, তংচংগ্যারা বিষু, অহমিয়ারা বিহু, খুমিরা সাংক্রাই, সাঁওতালরা পাতা হিসেবে অভিহিত করে থাকলেও এর নিবেদন কিন্তু একই। তাই এ উৎসবটি আদিবাসী পাহাড়িদের শুধু আনন্দের নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঐক্য ও মৈত্রী বন্ধনের প্রতীকও বটে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ