প্রযুক্তি দুনিয়ায় হইচই ফেলে দেওয়া ডিপসিক এআই চ্যাটবটের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতা লিয়াং ওয়েনফেং তারকা বনেছেন বেশ আগেই। এবার লিয়াং ওয়েনফেংয়ের জন্মস্থান দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশের মিলিলিং গ্রাম পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। একসময়ের অবহেলিত ছোট গ্রামটির বাসিন্দাদের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষিকাজ। কেউ আবার জুতার কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। কিন্তু গত জানুয়ারি মাসে ডিপসিক চ্যাটবট উন্মুক্ত করার পরপরই গ্রামটিতে দর্শনার্থীরা আসতে থাকেন। সম্প্রতি দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে স্থানীয় প্রশাসন গ্রামটির ব্যাপক সংস্কার ও উন্নয়ন শুরু করেছে। বাড়িঘরে নতুন রং করার পাশাপাশি রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে আধুনিক নর্দমাব্যবস্থাও।

মিলিলিং গ্রাম কমিটির পরিচালক লিয়াং ওয়েনফেন জানিয়েছেন, গত জানুয়ারির শুরু থেকেই গ্রামে পর্যটকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে বসন্ত উৎসবের ছুটির সময় (গত ২৯ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি) প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজারের বেশি দর্শনার্থী এসেছেন এই গ্রামে। অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতার কারণে শুরুতে পর্যটকদের নানা অসুবিধার মুখে পড়তে হতো। পর্যাপ্ত শৌচাগার ছিল না, রাস্তাঘাট সরু ও খানাখন্দে ভরা ছিল। এই সংকট নিরসনে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু করেছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যটনসুবিধা বাড়াতে মিলিলিং গ্রামের ২৯টি বাড়ির বাহ্যিক অংশ সংস্কার করা হয়েছে। জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। রাস্তা প্রশস্ত করার পাশাপাশি সৌন্দর্য বাড়াতে নতুন গাছও লাগানো হয়েছে।

আরও পড়ুনতারকা বনে গেছেন ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতা লিয়াং ওয়েনফেং০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গ্রামের এক বাসিন্দা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেন, ‘অনেকে গ্রামে এসে হাত ভর্তি করে মাটি কিংবা ছোট ছোট পাথর নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার গাছের পাতা ছিঁড়ে নিচ্ছেন।’ তবে পর্যটকদের এই অতিরিক্ত আগ্রহ লিয়াং ওয়েনফেংয়ের পরিবারের জন্য কিছুটা বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, গ্রামের বাড়িতে লিয়াং ওয়েনফেংয়ের দাদা একা বাস করেন। পর্যটকদের কৌতূহলী দৃষ্টি ও সম্ভাব্য অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তিনি এখন বেশির ভাগ সময় ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখেন।

আরও পড়ুনচীনের ডিপসিক এআই মডেল নিয়ে কেন এত আলোচনা২৮ জানুয়ারি ২০২৫

প্রসঙ্গত, লিয়াং ওয়েনফেং মিলিলিং গ্রাম থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেছেন। বিশ্বজুড়ে আলোচনার শীর্ষে থাকলেও ওয়েনফেং নিজেকে আড়ালে রাখতে চান। তাই তিনি বরাবরই জনসমক্ষে আসার বিষয়টি এড়িয়ে চলছেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সাগরপাড়ে বৈশাখী উৎসব, পর্যটকদের উচ্ছ্বাস

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে জমজমাট বৈশাখী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বৈশাখের প্রথম দিন সকাল থেকেই সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী ও ইনানী পয়েন্টে ভিড় করছেন হাজারো পর্যটক ও স্থানীয় মানুষ।

রঙ-বেরঙের পোশাক, মুখে হাসি আর হাতে পান্তা-ইলিশের থালা—সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে মুখরিত সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট। সৈকতে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে আনন্দ শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে এবং বৈশাখী মেলা বসেছে। লাবণী পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উন্মুক্ত মঞ্চ করা হয়েছে।

সবার প্রত্যাশা, নতুন বছর মানুষের জীবনে বয়ে আনবে অনাবিল আনন্দ। থাকবে না হিংসা-বিদ্বেষ, দুর্নীতি ও হয়রানি।

সকাল ১০টার পর থেকে সৈকতে ভিড় বাড়তে থাকে। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে নানা বয়সের মানুষ যোগ দেন বৈশাখী উৎসবে।

ঢাকার বাসাবো থেকে আসা পর্যটক রণধীর দিব্য বলেছেন, সমুদ্র আর বৈশাখী উৎসব একসঙ্গে উপভোগ করার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। কক্সবাজারে নববর্ষ উদযাপন অনেক আনন্দ দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা জুবায়ের আহমদ বলেছেন, পহেলা বৈশাখে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সমুদ্র দেখতে এলাম। এ ধরনের উৎসব স্থানীয় পর্যটন শিল্পকে যেমন চাঙ্গা করে, তেমনই আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সবাইকে আরো গভীরভাবে যুক্ত করে।

পর্যটক ও দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সহায়তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচকর্মীরা সার্বক্ষণিক পর্যটকদের সহায়তা করছেন।

বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন বলেছেন, ঈদের পর সৈকতে এটি দ্বিতীয় বৃহৎ পর্যটক সমাগম। পহেলা বৈশাখে সৈকতে আনন্দ করতে পরিবার ও আপনজনদের নিয়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন বেড়াতে এসেছেন। তাদেরকে আমরা সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

১৪৩২ বঙ্গাব্দের বৈশাখী উৎসব ঘিরে কক্সবাজারে পর্যটকদের উপস্থিতি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। হোটেল-মোটেল, খাবারের দোকান ও পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায় চাঙাভাব দেখা দিয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়নের প্রধান (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. আপেল মাহমুদ বলেছেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন উৎসব উদযাপনে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সৈকতে প্রতিটি পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা আছেন। পর্যটকরা যে কারো অনিয়মের বিরুদ্ধে ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। কেউ পর্যটকদের হয়রানির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মায়াময় মালদ্বীপে
  • মালদ্বীপে ইসরায়েলিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
  • ইন্দোনেশিয়ার ভবিষ্যৎ রাজধানীকে হুমকিতে ফেলে দিচ্ছে ইঁদুর
  • ‘বেওয়াচ হোটেল কক্সবাজার’
  • সমুদ্রসৈকতে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, পর্যটকের ঢল
  • বন্ধুদের সঙ্গে মিরিঞ্জা ভ্যালি যাচ্ছিলেন, জিপ থেকে ছিটকে পড়ে তরুণের মৃত্যু
  • সাগরপাড়ে বৈশাখী উৎসব, পর্যটকদের উচ্ছ্বাস