‘প্রহরশেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস-/তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।।’এই ‘সর্বনাশ’কে যে কখন কার চোখে দেখে বসেন, আগেভাগে তা নির্ণয় করা কঠিন। একইভাবে ‘প্রেম একবারই এসেছিলো নীরবে’ গানের ‘একবার’টা যে কার জীবনে কখন কীভাবে চলে আসে, সেই হিসাবও মেলে না সহজে। স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে কর্মক্ষেত্রে গিয়েও সহকর্মীর চোখে ‘সর্বনাশ’দেখতে পারেন কেউ। মনে হতে পারে, ‘লাগবে, তাকে আমার লাগবে। সে ছাড়া আর কিছু চাইনে।’ সহকর্মীকে ‘ভালোলাগা’র কারণও রয়েছে প্রচুর। কর্মক্ষেত্রে কাটাতে হয় দিনের একটা দীর্ঘ সময়। মিলেমিশে কাজ করতে হয়। যে কারণে একে অপরকে জানার সুযোগও তৈরি হয়। বিশেষ কোনো গুণ বা আচার-ব্যবহার কিংবা স্রেফ ভালোলাগার কারণেই ভালোলাগা; আর ভালোলাগা থেকে মায়া তৈরি হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কের অনেক সুবিধার কথাও অনেকে বলে থাকেন। তবে সুবিধা যার আছে, তার কিছু অসুবিধাও থাকে। তাই কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে পারলে অসুবিধাগুলো এড়ানো সহজ হয়।

আচরণে সংযম

কথায় বলে, ‘যত থাকে গুপ্ত/ তত হয় পোক্ত/ যত হয় ব্যক্ত/ তত হয় ত্যক্ত।’ তাই ফলাও করে সম্পর্কের কথা জানান দেওয়া কিংবা স্যোশাল মিডিয়ায় ছবি শেয়ার করে নানা অনুভূতি ব্যক্ত করার চেয়ে বিষয়টা নিজেদের মধ্যে রাখতে পারাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, পরে দেখা গেল, কোনো কারণে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা টানাপোড়েনের সৃষ্টি হলো, তখন অফিসে সহকর্মীদের সামনে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে। তা ছাড়া সম্পর্কের বিষয়টা অফিসে অনেকে জানলে ভালোর চেয়ে মন্দ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে। বিশেষ করে ফিসফাস, কানাকানি, সমালোচনা ‍ও গুজবের মধ্যে পড়ারও আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই সম্পর্কের বিষয়টা নিজেদের মধ্যে রাখতে পারলে অনেক ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, সহকর্মীদের কাছে এসব বিষয় গোপন রাখা কঠিন। তাই ফলাও করে না বললেই নিস্তার মিলল, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। নিজেদের আচার-আচরণ, চলাফেরা এমনকি কথাবার্তাতেও ব্যাপারটা যেন ফুটে না ওঠে, সেদিকে যেমন দৃষ্টি রাখতে হবে, তেমনই পেশাদার আচরণও বজায় রাখতে হবে।

আরও পড়ুনপ্রাক্তন মানেই কি প্রতিপক্ষ?২১ সেপ্টেম্বর ২০২২অফিসের নিয়ম জানুন

ভালোবাসার মতো ভালোবাসলে নিয়মকানুন পথ আটকাতে পারে না। না, কথায় কোনো ভুল নেই। তবে সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালে চাকরি হারানোর ঝুঁকিও কিন্তু উপেক্ষা করা যায় না। প্রশ্ন করতে পারেন, চাকরি হারানোর ঝুঁকি, কীভাবে? প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট চাকরিবিধি আছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক অনুমোদন করে না। কেন করে না? ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’। কর্মক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই স্বার্থ–সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। রয়েছে পদোন্নতি, প্রণোদনাসহ নানা প্রত্যাশা। সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালে বা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে বিষয়গুলো নানাভাবে প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাহলে উপায়? ভালোলাগা, ভালোবাসা তো আর পরিকল্পনা করে হয় না। স্বতঃস্ফূর্তভাবে হয়ে যায়। তাই প্রতিষ্ঠানের চাকরিবিধির নিয়ম জেনে নিতে হবে। যদি কোনো সুনির্দিষ্ট বিধিনিষেধ না থাকে, তাহলে চিন্তা রইল না। আর বিধিনিষেধ থাকলে সে ক্ষেত্রে যেকোনো একজনকে যত দ্রুত সম্ভব অন্যত্র চাকরির চেষ্টা করতে হবে।

আরও পড়ুনআম্মার ভয়ে প্রেম করিনি, এখন আম্মাই বলে, তুমি খুঁজে আনো০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫প্রেম ভেঙে গেলে

‘ব্রেকআপের ঝুঁকি’ সম্পর্কেও পূর্ণ ভাবনা থাকা জরুরি। কোনো কারণে সম্পর্ক ভেঙে গেলে সম্বোধন যেন ‘তুমি’ থেকে ‘তুই’তে গিয়ে না ঠেকে, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। কারণ, বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হলে অফিসের পরিবেশ নষ্ট হবে। পাশাপাশি সহকর্মীদের কাছে নিজেদের সম্মান হারানোরও ঝুঁকি দেখা দেবে।

সহকর্মীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ালে প্রতিষ্ঠানের চাকরিবিধির নিয়ম জেনে নিতে হবে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে অটোরিকশায় নারী শিক্ষার্থীকে দেখে অশালীন কর্মকাণ্ড, আটক ১

রাজশাহীতে এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে তাঁকে নওগাঁর মান্দা থেকে আটক করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

আটক ব্যক্তির নাম মাসুদ রানা। তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরের কেশবপুর এলাকায়। তিনি কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ফেসবুক আইডিতে ওই ব্যক্তির একটি ছবি ও ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করে ঘটনার বর্ণনা দেন। তখন ফেসবুকে অনেকেই তাঁকে আটক করার দাবি জানান। গতকাল রাতে স্থানীয় ছাত্র-জনতা মাসুদ রানার বাড়িতে ভাঙচুর চালান।

এ সম্পর্কে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ওই ব্যক্তিকে নওগাঁ থেকে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহযোগিতায় ডিবি পুলিশ আটক করেছে। ওই শিক্ষার্থী ফেসবুকে ঘটনাটি জানানোর পর থেকেই পুলিশ দায়িত্ব মনে করে অভিযানে নামে। আজ এই ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ (গতকাল) পরীক্ষা দিয়ে ইফতারি কিনে বাসায় আসার সময় বর্ণালীর মোড়ে এই জানোয়ারের বাচ্চা আমার সামনে বসে। হাতে কাপড়ের বড় বস্তা ছিল। বারবার আমার পায়ে টাচ হচ্ছিল। ভাবলাম এত বড় ব্যাগ, তাই হয়তো সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আরও বেশি সমস্যা হওয়ার পর পা সরাতে বলি। তারপর সে নিজের গোপনাঙ্গ নিয়ে অশোভন আচরণ করে। যখন বুঝতে পারে ভিডিও করতেছি, তখনই হাত সরায় নেয়।’

এ ব্যাপারে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে গতকাল রাতে তিনি ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যাঁরা এই অবধি আমার খোঁজখবর নিয়েছেন, আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি সেইফলি বাসায় আসছি। যাঁরা জিজ্ঞাসা করতেছেন আমি কিছু করতে পেরেছি কি না, তাঁদের জন্য বলি “না”, আমি তেমন কিছু করতে পারিনি! যাঁরা আমাকে চিনেন, তাঁরা জানেন, আমি ভিতু অনেক। অল্পতে ভয় পাই। ওই ঘটনা ঘটার পর আমার হাত–পা কাঁপছিল। গা ঘিন ঘিন করছিল। দুটি গালি দেওয়া ছাড়া কিছু করতে পারিনি। এই যে সঠিক জায়গায় সঠিক প্রতিবাদ না করতে পারার কষ্ট আমি আজীবন ধরে পেয়ে আসছি। ওই লোকের খোঁজ পাওয়া গেছে। যত দ্রুত সম্ভব আইনি পদক্ষেপ নিব!’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পশ্চিমা গবেষকদের রমজানের অভিজ্ঞতা
  • রাজশাহীতে অটোরিকশায় নারী শিক্ষার্থীকে দেখে অশালীন কর্মকাণ্ড, আটক ১
  • আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বাতিল করল আয়ারল্যান্ড
  • ফিতরা কীভাবে হিসাব করব
  • রাজধানীতে শ্রমিক নিহতের জেরে সড়ক অবরোধ, যানজটে ভোগান্তি
  • ইটভাটায় কিশোরী সহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্রমিক গ্রেপ্তার
  • যেমন ছিল মহানবীর (সা.) ইফতার
  • বনানীতে দুর্ঘটনায় পোশাক শ্রমিক নিহত, সহকর্মীদের সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট
  • এই দেশ কি ধর্ষকের অভয়ারণ্য