কোনো মূল্যবান জিনিস চুরি হওয়ার পর চোর ধরতে পারলে মানুষ তাকে পুলিশে দেয়। আবার মানুষ নিজেকে অধিকার বঞ্চিত মনে করলেও দোষীর বিরুদ্ধে আইনি সহায়তা চায়। কিন্তু আইসক্রিম খেয়ে ফেলার অপরাধে কি কাউকে ‍পুলিশে দেওয়া যায়? 

শুনতে অবাক লাগলেও আইসক্রিম খাওযার অপরাধে ৪ বছরের এক শিশু তার মায়ের নামে অভিযোগ তুলেছে। অভিযোগ করে থেমে থাকেনি হেল্প লাইনে কল দিয়ে পুলিশ ডেকেছে। যদিও মাকে শেষ পর্যন্ত কারাগারে যেতে হয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে। 

ডব্লিউএসএলএস ১০ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উইসকনসিনের মাউন্ট প্লেজেন্ট এলাকা থেকে ৯১১ নম্বরে একটি ফোন আসে। কলটি ধরার পরে ওপর প্রান্তের শিশুটি বলে ওঠে,  ‘আমার মা খুব খারাপ করেছে।’ পুলিশ প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারেনি বলে বিস্তারিত জানতে চায়। শিশুটি বলে, তার মা আইসক্রিম খেয়ে ফেলেছে। এর বিচার করতে হবে। তার মাকে ধরে নিয়ে যেতে হবে।

এরপরে শিশুটির হাত থেকে তার মা ফোন নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন এবং নিজেই নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন। এদিকে শিশুটির দাবি রাখতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাদের বাড়িতে আসেন। এরপর শিশুকে তারা বোঝান। শিশুটি পুলিশের কথা বুঝতে পারে। এরপর সে আর তার মাকে পুলিশে দিতে চায় না। 

কিন্তু তখনও সে বলতে থাকে ‘একটু আইসক্রিম খেতে চেয়েছিলাম, আমাকে দেওয়া হয়নি।’

পরে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা শিশুটির জন্য আইসক্রিম নিয়ে আবার তাদের বাসায় যান। আইসক্রিম পেয়ে খুব খুশি হয়ে শিশুটি পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবিও তুলেছে।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ল শ কর মকর ত আইসক র ম খ

এছাড়াও পড়ুন:

হারিয়ে যাওয়ার দুই বছর পর যেভাবে ছেলেকে ফিরে পেলেন মা

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক আশিকুর রহমান (৩০) দুই বছর আগে নিখোঁজ হন। স্বামী হারিয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন চোখের পানিতে বুক ভাসান স্ত্রী। পাঁচ বছরের ছেলেও কেবল বাবাকে খোঁজে। ছেলের ফেরার প্রতীক্ষায় ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা মা পথ চেয়ে থাকেন। কিন্তু ছেলে আর ঘরে ফেরেন না।

দুই বছর পর অবশেষে সেই ছেলে ঘরে ফিরলেন। উম্মে হুমায়রা নামে বান্দরবানের এক কনটেন্ট ক্রিয়েটর কয়েক দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটা ভিডিও পোস্ট করেন আশিকুরকে নিয়ে। কানাইঘাটের কয়েকজন তরুণ এটি দেখে আশিকুরের পরিবারকে খবর দেন। এরপরই সন্ধান মেলে আশিকুর রহমানের।

উম্মে হুমায়রা প্রথম আলোকে বলেন, বান্দরবান শহরে আশিকুরকে তিনি নালা থেকে ময়লা খাবার কুড়িয়ে খেতে দেখেন। কাছে গিয়ে ময়লা খাবার ফেলে তাঁকে শুকনা খাবার দেন। এরপর একটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করেন। সেই ভিডিওর সূত্রে প্রথমে কানাইঘাটের দুই তরুণ ও পরে আশিকুরের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। পরে তাঁরা আশিকুরকে নিতে বান্দরবানে আসেন। মায়ের কাছে সন্তানকে তুলে দিতে পারায় তাঁর খুবই আনন্দ হচ্ছে বলে তিনি জানান।

আশিকুরের পরিবার ও উম্মে হুমায়রার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আশিকুরের সন্ধান পেয়ে তাঁর বোনের জামাই রইস উদ্দিন মুঠোফোনে উম্মে হুমায়রার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে হুমায়রা তাঁর সহযোগীদের নিয়ে পুরো বান্দরবান শহর ঘুরে আশিকুরকে গত রোববার সন্ধ্যায় খুঁজে পান। এরপর আশিকুরকে হুমায়রা তাঁর বাসায় এনে গোসল করিয়ে ইফতার করান এবং রাতে বাড়িতেই রাখেন। আশিকুর যেন পালিয়ে না যান, সে জন্য রাতভর হুমায়রার স্বজনেরা তাঁকে দেখেশুনে রাখেন।

গতকাল সোমবার ভোরে আশিকুরের স্বজনেরা বান্দরবান পৌঁছান। বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে আশিকুরকে তাঁর মা মরিয়ম বেগমের (৬১) হাতে তুলে দেন হুমায়রা। এ সময় আশিকুরের বোনের জামাই রইস উদ্দিন, প্রতিবেশী সুলতান আহমেদ (২৮) ও মাহবুব হোসেন (২৬) উপস্থিত ছিলেন। পরে দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে আশিকুরকে নিয়ে তাঁরা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান।

আশিকুরের গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীপুর এলাকায়। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে তিনি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পায়নি পরিবার। তবে কীভাবে আশিকুর বান্দরবানে গেছেন, সেটা পরিবারের সদস্যরা এখনো জানতে পারেননি।

স্বজনেরা জানান, তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে আশিকুর তৃতীয় সন্তান। ১৫ বছর পর্যন্ত আশিকুর স্বাভাবিক ছিলেন। এরপর ধীরে ধীরে তাঁর মানসিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। ছয় বছর আগে আশিকুরের বিয়ে হয়। যখন তিনি নিখোঁজ হন, তখন তাঁর ছেলের বয়স ছিল তিন বছর। তাঁর দুই ভাইয়ের একজন সৌদি আরব ও অন্যজন কুয়েতে থাকেন। পরিবারে মা ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী আছেন। এ ছাড়া একমাত্র বোনের অনেক আগেই বিয়ে হয়েছে।

শ্রীপুরের বাসিন্দা ও মাদ্রাসাশিক্ষক সুলতান আহমেদও আশিকুরকে আনতে বান্দরবান গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ফেসবুকে উম্মে হুমায়রার ভিডিও দেখে তাঁরা আশিকুরকে চিনতে পেরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে আশিকুরের পরিবারের সদস্যদেরও বিষয়টি জানান। এরপরই আশিকুরের মা ও বোনের স্বামীসহ তাঁরা বান্দরবান যান। গতকাল রাতে তাঁরা আশিকুরকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফেরায় এখন আশিকুরের পরিবার খুবই আনন্দিত।

মুঠোফোনে আশিকুরের মা মরিয়ম বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুয়ারে পাইছি, আমি খুশি হইছি। আমার ঘরে শান্তি ফিরা আইছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুবমান গিল ফেব্রুয়ারির সেরা খেলোয়াড়, নারীদের সেরা কিং
  • প্রেমে রাজি না হওয়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ, মামলা তুলে না নেওয়ায় বাবাকে হত্যার অভিযোগ
  • দই-চিড়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
  • কাঠগড়ায় ইনুর হাতে হাতকড়া, হট্টগোল 
  • বাংলাদেশের কোন নায়িকার পারিশ্রমিক কত
  • মাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশে ফোন দিল ৪ বছরের শিশু
  • গোবিন্দকে কেন গালিগালাজ করেছিলেন কাদের খান?
  • ইফতারে তিন পদ
  • হারিয়ে যাওয়ার দুই বছর পর যেভাবে ছেলেকে ফিরে পেলেন মা