মাদ্রাসাছাত্র হত্যা মামলায় রিমান্ডে সোলাইমান সেলিম
Published: 12th, March 2025 GMT
মাদ্রাসার ছাত্র শাহেনুর রহমানকে (১৯) হত্যার অভিযোগে রাজধানীর লালবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলাইমান সেলিমের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১২ মার্চ) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে সোলাইমান সেলিমের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানিকালে সোলাইমান সেলিমকে আদালতে হাজির করা হয়।
ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক দিন পর গত বছরের ৬ আগস্ট ভোরে রাজধানীর লালবাগ থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় বিজয় মিছিল করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালালে মাদ্রাসার ছাত্র শাহেনুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই মো.
গত বছরের ১৪ নভেম্বর গভীর রাতে ঢাকার গুলশান থেকে সোলাইমান সেলিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে বেশ কয়েকটি হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
ঢাকা/মামুন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ক্রমশ সংকুচিত গাজায় বাসিন্দাদের দমবন্ধ দশা
গাজা থেকে লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করেছে ইসরায়েল। ক্রমশ সংকুচিত হওয়া ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের একটি ছোট এলাকায় তাদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এতে বসবাসের পরিবেশ এখন দমবন্ধ অবস্থার মতো। রাফাসহ গাজার বিশাল অংশ থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দুর্বিষহ জীবন থেকে বাঁচতে শেষ পর্যন্ত বাসিন্দারা যাতে গাজা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যান, সেটাই লক্ষ্য ইসরায়েলের।
গতকাল রোববার সিএনএনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার গভীরে স্থল অভিযান সম্প্রসারণ করেছে। সীমান্তে তারা একটি বৃহৎ বাফার জোন তৈরি করছে। এসব এলাকার বাসিন্দাদের জোর করে বাস্তুচ্যুত করা হচ্ছে। বাসিন্দাদের সরে যেতে গত ১৮ মার্চ থেকে অন্তত ২০ বার নির্দেশনা জারি করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
জাতিসংঘের মতে, গত তিন সপ্তাহে প্রায় ৪ লাখ মানুষকে সরে যেতে বলা হয়েছে। ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি দিতে হামাসকে বাধ্য করার প্রচেষ্টা হিসেবে এই নির্দেশনা। গাজার বেশির ভাগ এলাকা এখন বসবাসের অযোগ্য।
গত শুক্রবার গাজার সড়কে বাস্তুচ্যুত মানুষের মিছিল দেখা যায়। তারা মধ্য ও উত্তর গাজা থেকে সরে যাচ্ছিল অন্যত্র। যতদূর সম্ভব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বহন করছিল তারা। তাদের মধ্যে এক বাসিন্দা রায়েদ রাদওয়ান। তিনি বলেন, রাস্তার পাশে তাঁবু ফেলে পরিবারগুলো অবস্থান নিয়েছে, এ দৃশ্য হৃদয়বিদারক। বুলডোজার দিয়ে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাঁবু তৈরির জায়গা করা হচ্ছে।
গাজা শহরের বাসিন্দা হাতেম আবদুল সালাম বলেন, মশা-মাছি ও আবর্জনার সঙ্গে জীবনযাপন করছেন তারা। অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। মধ্য গাজার আল-শুজাইয়া থেকে ৩০ বছর বয়সী ফয়সাল জামাল বলেন, আমরা জানি না কোথায় যাচ্ছি। দুই পা যেখানে যায়, আমাদের যেতে হবে।
জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, গাজার দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা এখন বাস্তুচ্যুতি আদেশের অধীন। এসব এলাকা ‘নো গো’ জোন হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ত্রাণ সংস্থাগুলোকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।
ইসরায়েলের কট্টরপন্থি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজের পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজাবাসীকে সংকীর্ণ এলাকায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। কাৎজ সম্প্রতি এক বক্তব্যে বলেন, দখল করা এলাকা ইসরায়েলের নিরাপত্তাধীন অঞ্চলে যুক্ত করা হচ্ছে। আমরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোচ্ছি।
মার্কিন গণমাধ্যমটি লিখেছে, ইসরায়েল অনির্দিষ্টকালের জন্য গাজার বিরাট এলাকা দখলের পরিকল্পনা করছে। তবে এত হামলার পরও প্রতিপক্ষ সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এখনও প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। ১৮ মাস যুদ্ধের পরও তাদের শক্তি কমেনি।
গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী যেখানে ইচ্ছা চলে যাক, তাদের সেই স্বাধীনতা দেওয়া হবে।