শ্রীপুরে বকেয়া বেতন, বোনাস ও ছুটির টাকার দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
Published: 12th, March 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাসের ঘোষণা ও বকেয়া ছুটির টাকার দাবিতে আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সলিং মোড় এলাকায় মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়ক খান টেক্স লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকেরা অবরোধ করে রাখেন। দুপুর ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সড়ক বন্ধ ছিল।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই মাস ধরে কারখানার অধিকাংশের দুই মাসের বেতন বকেয়া আছে। তাঁরা এসব বেতন পরিশোধের দাবিতে আন্দোলন করেছেন। পরিশোধের তারিখ দিলেও তা করা হয়নি। এ ছাড়া শ্রমিকদের ছুটির টাকা ও নারীদের মাতৃত্বকালীন টাকা বকেয়া আছে। শ্রমিকেরা ঈদ বোনাস কবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা চান। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা সড়কে অবস্থান করবেন।
শ্রমিক মো.
আরেক শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে তাঁরা আন্দোলন করছেন। শ্রমিকেরা তাঁদের অধিকার অনুযায়ী নৈতিক দাবিতে আন্দোলন করছেন।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে খান টেক্স লিমিটেড কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবিরের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে অন্য একজন রিসিভ করে বলেন, ‘স্যার মিটিংয়ে আছেন। তিনি এখন কথা বলতে পারবেন না।’
কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই দাবি অযৌক্তিক। তাদের সঙ্গে লিখিত চুক্তি অনুযায়ী কেবল গত ফেব্রুয়ারি মাসের বকেয়া বেতন আগামী ২০ মার্চ দেওয়ার কথা। অথচ আগেই তারা আন্দোলন করছে। এ ছাড়া ঈদের বোনাস এখনই দিতে বলছে। এটা কীভাবে সম্ভব? কারখানার সাবেক কয়েকজন কর্মী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হোয়াটঅ্যাপের গ্রুপ খুলে অন্য শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়েছে। আমাদের সাময়িক অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে কেবল এক মাসের বেতন বাকি পড়েছে। চুক্তি করার পরেও তারা চুক্তি ভঙ্গ করে এভাবে অযৌক্তিক আন্দোলন করছে।’
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের শ্রীপুর সাব জোন ইনচার্জ মো. আবদুল লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা আন্দোলন করছেন। এ বিষয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রিজন সেলে সাবেক কাউন্সিলরের সঙ্গে আ’লীগ নেতাদের বৈঠক
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে কারাবন্দি খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও কেসিসির ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর খালিদ আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের প্রিজন সেলে বৈঠকের বিষয়টি সাংবাদিকদের চোখে পড়ে। বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের ছবি তুলতে গেলে তারা খুলনার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম খুলনা গেজেটের দুই সাংবাদিককে নাজেহাল করে। পরে অন্য সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পুলিশের সামনেই গাড়িতে করে চলে যান।
গত মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর খালিশপুর থানার পদ্মা অয়েল রোডে খালিদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় খালিদ একতলা বাড়ির ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে পালানোর চেষ্টা করে। তখন তার ডান পা ভেঙে যায়। তাকে গ্রেপ্তার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়।
আজ দুপুরে প্রিজন সেলের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এনাম মুন্সী, খালিদের চাচা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ ফরহাদ হোসেন প্রিজন সেলের ভেতরে খালিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। প্রিজন সেলের মূল ফটকে তালা ঝোলানো। বাইরের গেটে পাহারা দিচ্ছেন ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কর্মী মনিরুল ও ডিম সোহেল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনাম মুন্সীর বিরুদ্ধে আড়ংঘাটা থানায় একটি এবং খালিশপুর থানায় বিএনপি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা রয়েছে। ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৪টি।
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক তানভীর আহমেদ বলেন, তালা দেওয়া প্রধান ফটকের সামনে যুবকের জটলা দেখে আমরা এগিয়ে গেলে, তালা খুলে এনাম মুন্সী ও ফরহাদ বের হয়ে আসেন। ভিডিও করার সময় উপস্থিত কর্মীরা আমাদের নাজেহাল করার চেষ্টা করেন।
প্রিজন সেলের ভেতরে এক আসামির সঙ্গে অন্য আসামিদের বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে সেলের ইনচার্জ এসআই শামীম হোসেন বলেন, ‘আমি পুলিশ লাইনসে একটি কাজে গিয়েছিলাম। রেজাউল নামে এক কনস্টেবল দায়িত্বে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার আজম খান বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি।