যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির মুখে ইরান আলোচনায় বসবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনার যা খুশি তাই করুন।’ 

মঙ্গলবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে এ তথ্য জানা গেছে। খবর: রয়টার্সের

পেজেশকিয়ান বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যেসব হুকুম ও হুমকি দিচ্ছে, তা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আমি আপনার (ট্রাম্প) সঙ্গে আলোচনাও বসবো না। আপনি যা খুশি তাই করুন।’ 

শনিবার ইরানের নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, তেহরানকে কোনো হুমকি দিয়ে আলোচনায় আনা যাবে না। তার এক দিন আগে ট্রাম্প বলেন, তিনি ইরানকে নতুন পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।

গত সপ্তাহে ফক্স বিজনেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ইরানকে সামলানোর দুটি উপায় আছে, সামরিকভাবে অথবা পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে তাদের বিরত রাখার জন্য একটি চুক্তি করার মধ্য দিয়ে। তবে তেহরানের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে তিনি আন্তরিক বলেই জানান ট্রাম্প।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে বিশ্ব অর্থনীতি থেকে ইরানকে বিচ্ছিন্ন করতে এবং তেল রপ্তানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে যে ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ করেছিলেন, তা পুনর্বহালের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ইরান দীর্ঘদিন ধরে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ইচ্ছার কথা অস্বীকার করে আসছে। তবে তারা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ পরিশুদ্ধতার মান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি উল্লেখ করে সতর্ক করেছে আইএইএ। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন হয়।

২০১৯ সাল থেকে ইরান তার পারমাণবিক তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এর এক বছর পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে তেহরানের ২০১৫ সালে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। তিনি তখন ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রীনগরে শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে জেলে গ্রেপ্তার

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সুজন দাস (৬০) নামের এক জেলেকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ব্যক্তিকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এ ঘটনায় সুজন দাসের বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় শিশুটির মা গতকাল দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেছেন। ওই মামলায় রাতেই সুজন দাসকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। পিটুনিতে আহত হওয়ায় সুজন দাসকে বর্তমানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গ্রেপ্তার সুজন দাস ভ্রাম্যমাণ জেলে। তিনি গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দা। মাছ ধরার পাশাপাশি তিনি তান্ত্রিকতা করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে শিশুটি বাড়ির বাইরে খেলাধুলা করছিল। গ্রামের পুকুরে মাছ ধরার কাজ করছিলেন সুজন দাস। পুকুরের পাশেই সুজন দাসের ভ্রাম্যমাণ একটি ডেরা ছিল। রাত আটটার দিকে ওই শিশুটিকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে ডেরায় নিয়ে যান সুজন দাস। সেখানে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় শিশুটির চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ডেরার সামনে গেলে ঘটনাটি দেখতে পান। পরে সুজন দাসকে আটক করে পিটুনি দেন। সেই সঙ্গে পুলিশকেও খবর দেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে সুজন দাসকে মঙ্গলবার রাতেই আটক করে নিয়ে আসে পুলিশ। ওই জেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টার দিকে থানায় মামলা দায়ের করেন শিশুটির মা। মারধরে সুজন দাস অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই শিশুর মা বলেন, ‘চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে বাসা থেকে তাঁর শিশু মেয়েকে মাছ ধরা দেখতে নিয়ে যায় সুজন। এ সময় পুকুরপাড়ে মাছ ধরার ডেরায় ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। আমার বাচ্চা মেয়েটা ভয়ে এখনো আতঙ্কে আছে। আমি সুজন দাসের বিচার চাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ