উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ কি বাড়ছে?
Published: 12th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি (৫০.৪৩ শতাংশ) নারী। তাই দেশকে উন্নয়নের পথে এগোতে হলে নারীসমাজকে সঙ্গে নিয়েই এগোতে হবে। দেশে বর্তমান প্রায়োগিক সাক্ষরতাসম্পন্ন মানুষের হার ৬২.৯২ (৭+)। তবে ৭ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের মধ্যে সাক্ষরতায় পুরুষের চেয়ে নারীরা এগিয়ে রয়েছে। এটা সবার জানা যে শিক্ষার সঙ্গে নারীর উন্নয়ন বা ক্ষমতায়ন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। মূলত নারীর ক্ষমতায়ন হলো দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নারীর অংশগ্রহণের সুযোগ। সেই সুযোগের শুরু হয় শিক্ষা দিয়ে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, দেশের সার্বিক শিক্ষাব্যবস্থায় নারীর অংশগ্রহণ ও সফলতার হার আগের তুলনায় বাড়ছে। দেশে প্রায় সব পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা পাসের হার এবং সিজিপিএ উভয় ক্ষেত্রেই এগিয়ে থাকছে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা কার্যক্রমে ছেলেদের তুলনায় পিছিয়ে থাকার পর মেয়েদের এ অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।
যেকোনো দেশের অগ্রগতি অনেকাংশে নির্ভর করে সে দেশের উচ্চশিক্ষার প্রকৃতি ও মানের ওপর। বর্তমানে দেশে সার্বিকভাবে শিক্ষায় পুরুষের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ দিন দিন বাড়ছে। এ স্তরে ভর্তির সংখ্যা ও ছাত্রী ভর্তির অনুপাতও বেড়েছে। গত ১০ বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৩ সালে ছাত্রী ভর্তির হার ছিল প্রায় ৩৮ শতাংশ। সেখানে গত বছর (২০২৪) তা বেড়ে হয়েছে ৫০.
ইউনেসকোর এক তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাপী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের মোট শিক্ষার্থীর ৫৩ শতাংশই নারী (স্নাতক পর্যায়ে এ হার ৪৪ শতাংশ ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে (৫৫ শতাংশ) এবং পিএইচডি পর্যায়ে ৪৩ শতাংশ। বৈশ্বিক হিসাবে উচ্চশিক্ষায় নারীরা পুরুষের প্রায় সমকক্ষ। অধুনা নারীর উচ্চশিক্ষা গ্রহণে তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা করে। কিন্তু বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও গবেষণায় নারীর অংশগ্রহণ মাত্র ২৮ শতাংশ। নারী মস্তিষ্ক বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও অঙ্ক শেখার উপযোগী নয়, এমন বদ্ধ ধারণা একসময় এ দেশের সমাজে বেশ প্রবল ছিল। নারীদের ঘরে আবদ্ধ রাখার পক্ষে ছিল অভিভাবক সমাজ। বিআইজিডির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিশ্বাস নারীদের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার থেকে বিরত রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন এখনো স্বল্পশিক্ষিত নারীদের প্রায়ই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে অক্ষম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু একই শিক্ষাগত যোগ্যতার অধিকারী পুরুষদের এভাবে বিচার করা হয় না। আশার বাণী হলো, ক্রমেই দেশে নারীশিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করায় সমাজের সেই মনোজাগতিক অবস্থার খানিকটা হলেও পরিবর্তন ঘটেছে।
প্রতীকী ছবিউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় পাকিস্তানি গায়ক এনে লাপাত্তা আয়োজক, স্থগিত কনসার্ট
পাকিস্তানি শিল্পী মুস্তাফা জাহিদ। বিশ্বজুড়ে যার ভক্ত-অনুরাগী রয়েছে। সদ্যই ঢাকায় এসেছেন তিনি। কথা ছিল, ‘মেলোডি আনলিশড’ শিরোনামের একটি কনসার্টে গান গাইবেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঢাকায় এসেও আর গান গাওয়া হলো না তার। কনসার্টটি স্থগিত করেছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান মেলোডি অ্যান্ড মাইন্ড কমিউনিকেশন। কনসার্ট শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে আয়োজক প্রতিষ্ঠান ফেসবুকে জানিয়ে দেয়, কনসার্টটি স্থগিত করা হয়েছে। কারণ দর্শানো হয়েছে- নিরাপত্তাজনিত সমস্যাকে।
ঢাকার শিল্পী এ কে রাহুল, ব্যান্ড লেভেল ফাইভ ও এনকোর– এই কনসার্টে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আয়োজকরা কারো সঙ্গেই যোগাযোগ রাখেননি বলে অভিযোগ করেছেন শিল্পীরা। বিষয়টি নিয়ে এ কে রাহুল বলেন, একজন আন্তর্জাতিক শিল্পী অতিথি হয়ে দেশে এসেছেন। প্র্যাকটিসও করেছেন। অথচ আয়োজকরা একেবারে শেষ মুহূর্তে গায়েব হয়ে গেলেন। এটা শুধু লজ্জাজনক নয়, শিল্পীসমাজের জন্য অপমানজনকও।
ব্যান্ড লেভেল ফাইভের ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস জানান, আয়োজকরা গতকাল যে পেমেন্ট দেওয়ার কথা বলেছিল, সেটিও দেয়নি। তখন থেকেই সন্দেহ হয়েছিল কিছু একটা হতে পারে। অন্যদিকে, এই কনসার্টের জন্য তিন ক্যাটাগরির টিকিট বিক্রি হয়েছিল।
জেনারেল এক হাজার ৯৯৯ টাকা, মেলোডি জোন তিন হাজার ৪৯৯ এবং প্রিমিয়াম ১০ হাজার টাকা। কনসার্টটি হওয়ার কথা ছিল পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে। তবে ভেন্যু কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘মেলোডি অ্যান্ড মাইন্ড কমিউনিকেশন’ নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের আজকের দিনের জন্য বুকিং ছিল না। তারা যোগাযোগ করেছিল ঠিকই, কিন্তু কোনো পেমেন্ট দেয়নি। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অসংখ্য দর্শক ভেন্যুতে হাজির হন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখেন গেট বন্ধ, নেই কোনো আয়োজনের চিহ্ন। দর্শকরা আয়োজকের নম্বরে ফোন করলেও সব নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।