আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বাতিল করল আয়ারল্যান্ড
Published: 12th, March 2025 GMT
আফগানিস্তানের বিপক্ষে একাধিক সংস্করণের সিরিজ বাতিল করল আয়ারল্যান্ড। আইসিসির সফরসূচি অনুযায়ী, চলতি বছরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটি টেস্ট এবং তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলার কথা ছিল আইরিশদের।
তবে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মতো আয়ারল্যান্ডও আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলছে না। যদিও ক্রিকেট আয়ারল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী ওয়ারেন ডিউট্রমের দাবি, এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং অর্থনৈতিক কারণে নেওয়া হয়েছে।
ডিউট্রম বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটি আর্থিক কারণে করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের স্বল্পমেয়াদি বাজেট–সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে এবং বোর্ডের কৌশলগত লক্ষ্য অনুযায়ী বিনিয়োগের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।’
সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো আয়ারল্যান্ডে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে ইংল্যান্ড।কারণটা অর্থনৈতিক হলেও আফগানিস্তানের জন্য এটি বড় ধাক্কা হতে পারে। কারণ, মাঠের পারফরম্যান্স দুর্দান্ত হলেও মাঠের বাইরে ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে চাপে আছে দেশটি। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে মেয়েদের খেলাধুলার পাশাপাশি পড়ালেখা, এমনকি চিকিৎসাসেবার শিক্ষা নেওয়াও নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করার আহ্বান হিউম্যান রাইটস ওয়াচের১৯ ঘণ্টা আগেআফগানিস্তান আইসিসির পূর্ণ সদস্য, আর এই সদস্যপদ পাওয়ার একটি শর্ত হলো মেয়েদের দল থাকতে হবে। এসব জটিলতায় অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মতো দল আফগানদের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি সম্প্রতি আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করার আহ্বানও জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জিতেছিল আয়ারল্যান্ড.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে প্রতারণার ফাঁদ
ফরিদপুর সদর উপজেলায় একটি পরিবারের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে অভিনব প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েক বছর ধরে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করে প্রবাসীসহ বিশিষ্টজনদের কাছ থেকে অর্থ ওঠানো হলেও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় কোনো বাস্তব উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। প্রস্তাবিত মাদ্রাসার জন্য এখনও এক ছটাক জমিও কেনা হয়নি, এমনকি কোনো ব্যাংক হিসাব নম্বরও খোলা হয়নি। শুধু মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার কথা বলে টাকা তোলার একটি কার্যক্রমই দৃশ্যমান!
মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে অভিনব প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা মীর ইন্তাজ আলী ও তাঁর তিন ছেলে মো. ইব্রাহীম আলী, ইয়ামিন আলী ও ইয়াসিন আলী। যে মাদ্রাসার কথা বলে অর্থ সংগ্রহ করা হয়, সে প্রতিষ্ঠানের নাম ‘দারুল কুরআন মীর ইন্তাজ আলী মাদ্রাসা’। সরেজমিন ওই মাদ্রাসার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ইন্তাজ আলীর ভাতিজা মো. মিজানুর রহমান মিজান জানান, প্রস্তাবিত মাদ্রাসাটির নামে ২০২১ সাল থেকে তাদের এই অভিনব প্রতারণা শুরু হয়। মাদ্রাসার কথা বলে এ পর্যন্ত চারটি ওয়াজ মাহফিল করা হয়েছে। মুফতি আমির হামজাও এখানে এসে ওয়াজ করেছেন। প্রতি ওয়াজেই মাহফিলের মাঠ থেকে মাদ্রাসার নামে লাখ লাখ টাকা ওঠানো হয়েছে। এমনকি প্রবাসীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে।
কল্পিত মাদ্রাসার নামে গত কয়েক বছরে প্রায় কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। অথচ ইন্তাজ আলী বা তাঁর ছেলেরা মাদ্রাসার নামে তোলা অর্থের বিষয়ে কারও কাছেই হিসাব দেননি। মাদ্রাসার জন্য এক ছটাক জমিও কেনেননি।
ইন্তাজ আলীর প্রতিবেশী ও কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাসুদ মোল্লা বলেন, ইন্তাজ আলী ও তাঁর ছেলেরা একটি প্রস্তাবিত মাদ্রাসার নাম দিয়ে প্রতিবছর ওয়াজ মাহফিল করেন। তাদের বক্তব্য ছিল, এভাবে অর্থ সংগ্রহ করে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করবেন। তারা প্রতিবছর অর্থ সংগ্রহ করেন কিন্তু মাদ্রাসার জন্য কিছু করেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. মিলু বলেন, ওই মাদ্রাসার দৃশ্যমান কোনো কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকি প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। কোনো কিছুই নেই।
অভিযোগ অস্বীকার করে মীর ইন্তাজ আলী বলেন, ইসলামের অগ্রগতির জন্য তিনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে মাদ্রাসার নামে কোনো অর্থ সংগ্রহ করা হয়নি।
ইন্তাজ আলীর ছেলে ইয়ামিন আলীর ভাষ্য, এটি একটি প্রস্তাবিত মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। ইন্তাজ আলীর আরেক ছেলে প্রস্তাবিত মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ইব্রাহীম আলী বলেন, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হবে। অর্থ সংগ্রহ ও আত্মসাতের বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।
কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান এ.কে.এম বাশারুল আলম বাদশা বলেন, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে ওই পরিবার প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে। এলাকাবাসীর কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তারা নিজেরা কোটিপতি হচ্ছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাদের কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা না করে আর কোনো ওয়াজ মাহফিল তারা আয়োজন করতে পারবেন না।
এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, এখনও তাঁর কাছে এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।