ইতিহাস তো গড়া হয় ভাঙার জন্যই। লিভারপুল কখনই ইউরাপিয়ান কোন প্রতিযোগিতায় অ্যাওয়েতে প্রথম লেগ জেতার পর ঘরের মাঠে দ্বিতীয় লেগ খেলে নক আউট থেকে বাদ পড়েনি। তবে এবার ফুটবল পন্ডিতরা আশংকা করছিলেন এমন কিছু হতে পারে। সেই শঙ্কার পূর্ণতা দিলেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। এই গোলরক্ষক আরেকবার ইতালিয়ান রক্ষণের মিথকে অম্লান করে পিএসজিকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুললেন।

প্রথম লেগে পার্ক দে প্রিন্সে আক্রমণের ফুলঝুরি বইয়ে দিয়েও ম্যাচটা ১-০ ব্যবধানে হারতে হয়েছিল স্বাগতিক পিএসজিকে। তবে মঙ্গলবার (১১ মার্চ, ২০২৫) চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে আর আগের ম্যাচের ভুল করল না প্যারিসের দলটি। আগেভাগেই গোল আদায় করে নিল। এরপর আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে খেলা চলল। তবে গোলের দেখা পায়নি কোন দলই। টাই ব্রেকের জন্য খেলা পেনাল্টি শুট-আউটে গেলে সেখানে লিভারপুলের জন্য রীতিমতো দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে যান দেন্নারুম্মা। পিএসজি ৪-১ ব্যবধানে টাইব্রেকার জিতে নাম লিখিয়ে ফেলে শেষ আটে।

ইউরোপিয়ান ফুটবলের চিরন্তন সত্য, লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ড প্রতিপক্ষের জন্য দুঃস্বপ্নের রাতের সমান। গতরাতেও এর ব্যতিক্রম হলো না। ম্যাচের ১২ মিনিটে পিএসজিকে উসমান দেম্বেলে এগিয়ে দিলেন বটে। তবে এরপর তাদের উপর রীতিমতো আক্রমণের বন্যা বসিয়ে দিল লিভারপুল। ভাগ্যিস চীনের প্রাচীর হয়ে সেই আক্রমণগুলো ঠেকিয়ে গেলেন দেন্নারুম্মা।

আরো পড়ুন:

অ্যানফিল্ডে জাদু দেখানোর অপেক্ষায় পিএসজি

পিএসজি হারল ‘বিশ্ব সেরা’ গোলরক্ষকের বিপক্ষে!

বিরতির পর তো অল রেডরা কেবল আক্রমণ করেই গিয়েছে। তবে স্বাগতিকদের সবচেয়ে বড় তারকা মোহাম্মদ সালাহকে ভয়ংকর হতে দেয়নি প্রতিপক্ষ। মিশরীয় রাজাকে গোল করা থেকে বিরত রাখলেন পিএসজির পর্তুগিজ লেফট ব্যাক নুনো মেন্ডেস। প্যারিসের দলটিও বেশ কিছু আক্রমণ করেছে। তবে আগের ম্যাচে ৯টি সেভ করা আলিসন বেকার এই ম্যাচে করলেন ৭টি সেভ।

ম্যাচ টাইব্রেকারে গেলে পিএসজি তাদের প্রথম চারটি শটই জালে পাঠান। বিপরীতে দোন্নারুম্মা আটকে দেন লিভারপুলের নেওয়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় শট। এই দুটি শট নেন যথাক্রমে দারউইন নুনিয়েজ ও কার্টিস জোনস। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় এই প্রথম অ্যানফিল্ড গ্যালারিকে এভাবে চুপ করিয়ে দিল কোন প্রতিপক্ষে।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প এসজ চ য ম প য়নস ল গ র জন য প এসজ প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

স্কুলছাত্রী অপহরণের মামলা করায় পরিবারকে হুমকি

স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ঘটনায় গাজীপুরের কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানায় মামলা করেছিলেন তার মা। এ ঘটনার আট দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। উল্টো তারা মোবাইল ফোনে কল করে মেয়েটির মা-বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এমনকি, মামলা তুলে না নিলে তারা পেট্রোল ঢেলে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার কথাও বলছে। এ ঘটনায় পরিবারটি ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়। 

ওই কিশোরী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে পাশের বারেন্ডা গ্রামের জান্নাতুল মোল্লা প্রেমের প্রস্তাব দিত। এতে ব্যর্থ হয়ে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। ৩১ মার্চ ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ১০-১২ জন সশস্ত্র সহযোগী নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে হানা দেয় জান্নাতুল। তার মাকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায় ওই কিশোরীকে। 

ঘটনার দিনই কাশিমপুর থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়। পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ৩ এপ্রিল রাতে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল ওই থানায় অপহরণ মামলা করেন মেয়েটির মা। এতে জান্নাতুল মোল্লা (২৬), তার বাবা সফিউদ্দিন মোল্লা (৬০), আফাজ উদ্দিন আফু (৫০), জহিরুল ইসলাম (৩৫), হিমেল হোসেনের (২৬) নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। 

মামলার বাদীর ভাষ্য, আসামি ও তাদের লোকজন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রায়ই ফোনে ও সরাসরি হুমকি দিচ্ছে। তা না করলে হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেবে বলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা মামলার সাক্ষীদেরও নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। পুলিশও অজ্ঞাত কারণে আসামি গ্রেপ্তার করছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী বলেন, অপহরণে জড়িত পরিবারটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ও বিত্তবান। তাই হয়তো পুলিশ ধরতে আগ্রহী নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, ৪ এপ্রিল অপহরণের মামলা হয়। জানতে পেরেই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ