শিক্ষার্থীকে ইঙ্গিত করে অশোভন আচরণ, অভিযুক্তকে খুঁজছে পুলিশ
Published: 12th, March 2025 GMT
রাজশাহীতে অটোরিকশায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রীকে ইঙ্গিত করে অশোভন আচরণ করেছেন এক ব্যক্তি বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রী তার এমন কর্মকাণ্ডের ভিডিও নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করেছেন। ভিডিওটি ভাইরাল হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজতে শুরু করে পুলিশ।
ঘটনাটি মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলের। ওই ছাত্রী ফেসবুকে অভিযুক্ত ব্যক্তির ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, “আজকে পরীক্ষা দিয়ে ইফতারি কিনে বাসায় আসার সময় বর্ণালীর মোড়ে এই .
ওই ছাত্রী আরো লেখেন, “যখন বুঝতে পারে ভিডিও করছি, তখনই হাত সরিয়ে নেয়। রোজা-রমজানের মাসেও এদের হেদায়েত হয় না। ভেতরের...জেগে উঠে মেয়ে দেখলেই। সারাটাদিন রোজা রেখে পরীক্ষা দিয়ে যখন এসব সহ্য করা লাগে, তখন আর কিছু বলার থাকে না আসলে!”
আরো পড়ুন:
গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা, বরখাস্ত এসপির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
খাগড়াছড়িতে গৃহবধূকে ‘ধর্ষণ’ চেষ্টার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১
কিছুক্ষণ পর ওই ছাত্রী এনিয়ে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, “যারা এই অবধি আমার খোঁজ খবর নিয়েছেন, আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি সেইফলি বাসায় আসছি। যারা জিজ্ঞেস করছেন, আমি কিছু করতে পেরেছি কি না তাদের জন্য বলি ‘না’। আমি তেমন কিছু করতে পারিনি!”
তিনি আরও লেখেন, “যারা আমাকে চেনেন তারা জানেন, আমি ভীতু অনেক। অল্পতে ভয় পাই। ওই ঘটনার পর আমার হাত-পা কাঁপছিল। গা ঘিনঘিন করছিল। দুটো গালি দেওয়া ছাড়া কিছু করতে পারিনি। এই যে সঠিক জায়গায় সঠিক প্রতিবাদ না করতে পারার কষ্ট আমি আজীবন ধরে পেয়ে আসছি। ওই লোকের খোঁজ পাওয়া গেছে। যত দ্রুত সম্ভব আইনি পদক্ষেপ নেব।”
ফেসবুক আইডির তথ্য অনুযায়ী, ভুক্তভোগী তরুণী রাজশাহীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে তার পোস্ট দেখে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, “আমরা ভিডিওটি দেখেছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও দেখেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা আছে। আমরা চেষ্টা করছি, দ্রুতই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ওই ছ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে রাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ সমাবেশ
নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’-এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে নারী নিপীড়নের ঘটনা নতুন নয়। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে শাসকদের দায়িত্বহীন আচরণ। বিপ্লব পরবর্তী সময়ে এমন বিচারহীনতা ও নিরাপত্তাহীনতা কখনোই কাম্য নয়। সকলকে নিপীড়ন-সহিংসতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বিপ্লব পরবর্তী সময়ে কখনোই এমন আচরণ কাম্য নয় বলে মন্তব্য করে ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ভেবেছিলাম নতুন বাংলাদেশ দেখতে পারব। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে তা আমরা দেখতে পারছি না। যে দেশে নিপীড়ককে যখন ফুল-পাগড়ি দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়, সে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা ঠিক আছে তা আমাদের বুঝতে বাকি নেই। তাই আপনাদের সকলকে কথা বলতে হবে। এই আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে। সেইসঙ্গে শাসকদের বলতে চাই দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
সুস্মিতা চক্রবর্তী আরও বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাস এতদিন নিরব ছিল, কোনো আওয়াজ পাচ্ছিলাম না। কিন্তু গতকাল রাত থেকে ক্যাম্পাসে যেভাবে আমাদের শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে, ছাত্রীরা যেভাবে হল থেকে বেরিয়ে এসেছে, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। আমাদের দেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা দীর্ঘদিনের, এটা নতুন কোনো ঘটনা নয়।’
নারীরা আজ কোথাও নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেন নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী শুসমিন আফসানা। তিনি বলেন, ‘আট বছর বয়সী মাগুরার শিশুটি পরিবারের আশ্রয়ে ঘরের মধ্যেই ধর্ষিত হয়েছে। তাহলে নারী কোথায় নিরাপদ? রাস্তায় না, দোকানে না, ঘরে না, কোথাও নিরাপদ নন। এখন আসলে নারীর অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি পড়ে গেছে। প্রতিটা ঘটনা এই সাক্ষ্য দিচ্ছে যে নারীকে অস্তিত্বহীন করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা নারীরা ঘর-রাস্তা কোনো জায়গা ছাড়ব না। আমরা কথা বলব ও প্রতিবাদ গড়ে তুলব।’
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী উমামা বক্তব্য দেন। প্রতিবাদ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন ও সহযোগী অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন, ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম কনক, নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক হাবিব জাকারিয়া, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শ্রুভ্রা রানী চন্দসহ বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।