৩ দিন পর বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ
Published: 12th, March 2025 GMT
পঞ্চগড়ের অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক আল আমিনের (৩৬) মরদেহ তিনদিন পর ফেরত দিয়েছে বিএসএফ।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাতে তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা সীমান্তের জিরো লাইনে পরিবারের কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করে তারা।
মরদেহ হস্তান্তরের সময় ভারতের রাজগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর অনুপম মজুমদার ও বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া থানার এসআই নরেশ চন্দ্র দাস, বিজিবি-বিএসএফ সদস্য, নিহত আল আমিনের বাবা সুরুজ মিয়াসহ তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
নেত্রকোণার ধনু নদ থেকে ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার
নাটোরে অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ উদ্ধার
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৮ মার্চ (শনিবার) ভোরে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন ভিতরগড় বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ৭৪৪ এর সাব পিলার ৭ হতে আনুমানিক ১৬০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে ভাটপাড়া নামক স্থানে আল আমিনের মরদেহ পরে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। ভারতের ৪৬ ভাটপাড়া বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদস্যদের গুলিতে নিহত হন তিনি। এ ঘটনায় মরদেহ ফেরত চেয়ে ও প্রতিবাদ জানাতে গত সোমবার বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ভারতের রাজগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মঙ্গলবার রাতে নিহতের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
তেঁতুলিয়া থানার এসআই নরেশ চন্দ্র দাস বলেন, “ভারতে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তিনদিন পর মঙ্গলবার রাতে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যদের উপস্থিতিতে আল আমিনের লাশ ফেরত দেয় ভারতীয় পুলিশ। পরে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শামসুদ্দিন এবং শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে নিহতের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।”
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ ব এসএফ পর ব র র র মরদ হ ব এসএফ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
মধ্যরাতে বাড়ি থেকে অপহরণ, ৩ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর গ্রাম থেকে অপহৃত রিফাত মিয়াকে উদ্ধার ও ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। ডিজিএফআই পরিচয় দিয়ে গত সোমবার মধ্যরাতে দুর্বৃত্তরা ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম মালুর ছেলে রিফাতকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে। পরে ৩ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে কসবা উপজেলা থেকে তাঁকে উদ্ধার এবং রেজাউল করিম নামে একজনকে আটক করেছে। অন্য আটজনকে বুধবার খুলনা থেকে আটক করা হয়।
ক্যাপ্টেন পরিচয় দেওয়া রেজাকে নবীনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, একটি মাইক্রোবাসের নম্বর ও চালকের ফোন নম্বরের সূত্র ধরে আটজনকে আটক করা হয়। কসবা পৌর এলাকার রেজা জানায়, সে বিমানবাহিনীতে চাকরি করত। অপহরণে চালকসহ ১২ জন জড়িত।
আটক অন্যরা হলো– ডুমুরিয়ার সাহাপুর গ্রামের জাহিদুর রহমান, খরসংগ গ্রামের আশরাফুল কবির, মাসুম বিশ্বাস, মধুরাম সাহাপুর গ্রামের রাজন কুম্ভ, আন্দুলিয়া গ্রামের মো. নয়ন আকোঞ্জী, খরসংগ গ্রামের মো. আলমগীর মোল্লা, কেশবপুরের ভরতভাইনা গ্রামের আব্দুল গফুর সরদার, ডুমুরিয়ার শাহাপুর গ্রামের মোহাম্মদ তৈবুর রহমান।
রিফাতের (১৯) বাবা মালু মিয়া সৌদি আরবে ব্যবসা করতেন। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশের উপস্থিতিতে সোমবার রাতে দুর্বৃত্তরা নিজেদের ডিজিএফআই সদস্য পরিচয় দিয়ে রিফাতকে ধরে নিয়ে যায়। এর চার ঘণ্টা পর রাত ৩টার দিকে মোবাইল ফোনে মুক্তিপণ হিসেবে নগদ ৩ কোটি টাকা দাবি করা হয়। তিনি আরও বলেন, ফোন দিয়ে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নবীনগর থানার ওসির সহযোগিতা চেয়েছিলেন। ওসি তখন বলেন, তিনি ছুটিতে আছেন, তবে পুলিশ পাঠাচ্ছেন। এর আধা ঘণ্টার মধ্যেই থানা থেকে দুই এসআই আবদুল মন্নাফ ও রাম কানাই সরকারের নেতৃত্বে সাত-আট পুলিশ তাদের বাড়িতে আসে। কিন্তু পুলিশ এসে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের বদলে তাদের সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে শলাপরামর্শ করে। এ সময় সামান্য দূরে থাকা এসআই মন্নাফকে কমপক্ষে ২০ বার ফোন করেন। কিন্তু তিনি ফোন না ধরে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলাপ করে যাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতিতেই সন্ত্রাসীরা নগদ টাকা, স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয় এবং রিফাতকে নিয়ে নির্বিঘ্নে বাড়ি থেকে চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশও চলে যায়। তিনি মঙ্গলবার নবীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এজাহারে তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫ জনকে আসামি করা হয়। নাম উল্লেখ বরা তিনজন হলেন– লাউর ফতেপুর গ্রামের কামাল মিয়া ও কামাল খন্দকার এবং বাড়িখলা গ্রামের আবু কালাম আজাদ।
উদ্ধার হওয়া রিফাত বলেন, ‘মঙ্গলবার দিনভর কসবা রেললাইনের পাশে সীমান্তের কাছাকাছি মাইক্রোবাসে আমাকে বসিয়ে রাখা হয়। তাদের সঙ্গে চুক্তি করি, আমাকে ছেড়ে দিলে ৩ কোটি টাকা এনে দেব। চুক্তি অনুযায়ী, দুই ধাপে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়, তারা বাকি টাকা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে একটি অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে আমাকে ছেড়ে দেয়। ওই অ্যাকাউন্ট নম্বর আমার পরিবারের কাছে পাঠালে এর সূত্র ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাকে উদ্ধার ও রেজাকে আটক করে।’
এসআই মোন্নাফ ও এসআই রামকানাইয়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কথা বলবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘অপহরণ হওয়া যুবক রিফাতকে উদ্ধার করা হয়েছে। এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। পুলিশ প্রথমে ভেবেছিল ওদের কথা সত্যি, পরে যখন রিফাতকে নিয়ে যায়, তখন টের পাওয়া গেছে তারা প্রতারক চক্র। এতে পুলিশের কোনো গাফিলতি থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’