বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ভেতরে অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা ও চেইন অব কমান্ড ভেঙে যেতে পারে বলে ভারতীয় মিডিয়ায় যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা মিথ্যা উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) আইএসপিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছে সম্প্রতি দ্য ইকোনমিক টাইমস এবং দ্য ইন্ডিয়া টুডেসহ কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে অভ্যুত্থান ও চেইন অব কমান্ড ভাঙতে পারে বলে যে কথা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই ধরনের মিথ্যা প্রতিবেদন বাংলাদেশ এবং সশস্ত্র বাহিনীর স্থিতিশীলতা ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করার লক্ষ্যে একটি ইচ্ছাকৃত বিভ্রান্তিকর প্রচারণার অংশ বলে মনে হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা স্পষ্টভাবে বলছি- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের দক্ষ নেতৃত্বে শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ এবং তার সাংবিধানিক কর্তব্য পালনে সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কমান্ড শৃঙ্খল শক্তিশালী এবং সিনিয়র জেনারেলসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল সদস্য সংবিধান, কমান্ড শৃঙ্খল এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাদের আনুগত্যের প্রতি অটল। পদমর্যাদার মধ্যে অনৈক্য বা আনুগত্যহীনতার যেকোনো অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে বানোয়াট এবং বিদ্বেষপূর্ণ।

এতে আরো বলা হয়, এটি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক যে দ্য ইকোনমিক টাইমস বারবার এই ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণায় লিপ্ত হয়েছে। এই সাম্প্রতিক প্রতিবেদন প্রকাশের মাত্র এক মাস আগে, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে একই সংবাদমাধ্যম একই ধরণের মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। এই ধরণের আচরণ এই সংবাদমাধ্যমগুলোর উদ্দেশ্য এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতির সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা এবং নিরাপত্তা রক্ষার প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আমরা সকল সংবাদমাধ্যমকে দায়িত্বশীলতা নিয়ে কাজ করার এবং অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে এমন মিথ্যা তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

ঢাকা/হাসান/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কম ন ড

এছাড়াও পড়ুন:

আন্দোলনের সময় জাতিসংঘের কোনো বার্তা পায়নি সেনাবাহিনী: আইএসপিআর

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে দমন–পীড়নে অংশ না নিতে সেনাবাহিনীকে ‘সতর্ক’ করেছিলেন বলে কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। তবে হাইকমিশনার থেকে এ বিষয়ক কোনো ইঙ্গিত কিংবা বার্তা সম্পর্কে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবগত নয়।

সোমবার (১০ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।  

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘হার্ডটক’-এ গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের মন্তব্য নিয়ে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মানবাধিকারের তাৎপর্য যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে এবং যেকোনো গঠনমূলক সমালোচনা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে, তবে অধিকতর সঠিকতা ও স্বচ্ছতার উদ্দেশ্যে উক্ত মন্তব্যের কিছু বিষয়ে স্পষ্টকরণ প্রয়োজন বলে মনে করে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার থেকে এ বিষয়ক কোনো ইঙ্গিত কিংবা বার্তা সম্পর্কে অবগত নয়। যদি এ সংক্রান্ত কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়ে থাকে, তবে তা তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়ে থাকতে পারে, সেনাবাহিনীকে নয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতীয় নিরাপত্তা নির্দেশিকা অনুযায়ী কাজ করে এবং সর্বদা আইনের শাসন ও মানবাধিকার নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে, মি. ভলকার তুর্কর মন্তব্য কিছু মহলের মাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে, যা সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি এবং এর পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।

নিরপেক্ষতা ও সততার মহান ঐতিহ্য ধারণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা জনগণের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অতীতের ঘটনাপ্রবাহ, বিশেষত ১৯৯১ সালের গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনো জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করেনি। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময়ও সেনাবাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং কোনো পক্ষপাত বা বাহ্যিক প্রভাব ছাড়াই জননিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তির বর্ণনা অনুযায়ী, বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে, পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এখানে উল্লেখ্য যে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অর্জিত আয়ের একটি ক্ষুদ্র অংশ শান্তিরক্ষীরা পেয়ে থাকেন এবং এর সিংহভাগ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে, যার পরিমাণ গত ২৩ বছরে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ককে গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করে এবং দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেনাবাহিনীর ভূমিকা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে উদ্বেগ অথবা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলে তা গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে ফলপ্রসূভাবে সমাধান করা সম্ভব বলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মনে করে।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সেনাবাহিনী নিয়ে ভুয়া খবরের প্রতিবাদ আইএসপিআরের
  • ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে সেনাবাহিনী নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে: আইএসপিআর
  • ভলকার তুর্কের মন্তব্য নিয়ে যা বলল সেনাবাহিনী
  • সিএমএইচে চিকিৎসাধীন শিশুটি লাইফ সাপোর্টে
  • আন্দোলনের সময় জাতিসংঘের কোনো বার্তা পায়নি সেনাবাহিনী: আইএসপিআর
  • সেনাবাহিনী নিয়ে ভলকার তুর্কের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা জানাল আইএসপিআর