তীব্র পানি সংকটের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম ওয়াসা অফিস ঘেরাও করেছেন নগরবাসী। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দামপাড়া কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন অর্ধশতাধিক মানুষ।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট চলছে। আবার যে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে, তা লবণাক্ত। রমজানে এ সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মিনহাজুল ইসলাম বলেন, নগরীর অনেক মানুষ নিয়মিত পানি পাচ্ছেন না। পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রমজানের মধ্যে গত শনিবার থেকে অনেক এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ ছিল। এভাবে প্রায়ই পাইপলাইন ফাটার পর পানি সরবরাহ বন্ধ থাকছে। রমজান মাসেও পানির এই সংকট কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
নিয়মিত পানি না পেলে এ সময় কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন অনেকে। পরে দলটি ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেন।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, ‘পিজিসিবির একটি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ চলার সময় সাগরিকা মোড়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার ১১০০ এম এম ব্যাসের প্রধান সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে নগরের ধনিয়ালাপাড়া, দেওয়ানহাটসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় পানি সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরবর হ
এছাড়াও পড়ুন:
পহেলা বৈশাখের বাজারে ‘রাজা’ রূপে ইলিশ
২০২১ সালে পহেলা বৈশাখ ও প্রথম রমজান একই দিন ছিল। এর পরের আরও দুটি পহেলা বৈশাখ রমজানের মধ্যে পালিত হয়। গত বছর ঈদুল ফিতরের দুই দিন পর পহেলা বৈশাখ হওয়ায় দুটি উৎসব একাকার হয়ে গিয়েছিল। এসব কারণে গত চারটি বাংলা বর্ষবরণে ছিল না পান্তা-ইলিশের আয়োজন। ইলিশের দামে প্রভাবও ছিল না।
আর এক দিন পর বর্ষবরণ উৎসব। এক সপ্তাহ আগে থেকে বাজারে ইলিশের সংকট দেখা দিয়েছে। যা পাওয়া যাচ্ছে, সেটা সাধারণের কেনার ক্ষমতার মধ্যে নেই। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে প্রকারভেদে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা।
বরিশাল পোর্ট রোড ও বরগুনার পাথরঘাটার ইলিশ মোকামের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ৫টি অভয়াশ্রমে ইলিশ আহরণে ১ মার্চ থেকে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে দাম বাড়ানোর কৌশল হিসেবে এক সপ্তাহ আগে মোকামে ইলিশ সরবরাহ কমেছে। যতটুকু আসছে সেগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের জন্য কিনে আড়তদাররা মজুত করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের পোর্ট রোড মোকামে গত দুই দিন ধরে ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ আড়াই হাজার টাকা, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজন ১ হাজার ৮০০ টাকা এবং ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজন ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা আরও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশিতে বিক্রি করছেন।
পোর্ট রোডের বিসমিল্লাহ আড়তঘরের মালিক নাসির উদ্দিন ও প্যাদা মৎস্য আড়তঘরের মালিক হিরাজ প্যাদা জানান, এক সপ্তাহ ধরে মোকামে ২০ থেকে ৩০ মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে এর পরিমাণ ছিল অর্ধশতাধিক মণ। সরবরাহ কমার সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ছে। ৩০ চৈত্র পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে। রাজধানীতে অনেক চাহিদা থাকলেও সংকটে সরবরাহ করতে পারছেন না।
বরগুনার পাথরঘাটা মোকামের অবস্থা পোর্ট রোডের চেয়েও খারাপ বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) পাথরঘাটার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ শিকদার জানান, সারাদেশে ইলিশ সংকট। গত এক মাসে পাথরঘাটা মোকামে ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২৯ মণ। সাগরে ৩০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। মোহনাসংলগ্ন বলেশ্বর ও বিষখালী নদীতে পাওয়া ইলিশ বৈশাখ উপলক্ষে খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এর দাম অনেক চড়া।
৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩ হাজার টাকা। পাইকারি ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, তিন মাস ধরে ইলিশ কিনে ফ্রিজে মজুত করেছিলেন। এখন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তা সরবরাহ করছেন। পাথরঘাটার সব পাইকারি ব্যবসায়ী এ কৌশল করেছেন।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম কোম্পানি জানান, ইলিশের জন্য কিছুদিন আগে সাগরে ট্রলার পাঠিয়েছিলেন। প্রত্যেকটি ট্রলার শূন্য হাতে ফিরেছে। এ কারণে কেউ সাগরে ট্রলার পাঠাচ্ছে না।