বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষ ভাগবাটোয়ারা নিয়ে
Published: 11th, March 2025 GMT
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর সীমান্ত সড়কে কয়লা ও চুনাপাথরবোঝাই ট্রাক থেকে প্রতিদিন অন্তত তিন লাখ টাকার চাঁদাবাজি হয়। এ চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সীমান্তবর্তী দুটি ইউনিয়নের বিএনপি নেতাকর্মী দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছেন। এর জেরে সোমবার রাতে উপজেলার মহিষখলা বাজারে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন। একজন নিহত হওয়ার খবর প্রকাশ হলেও স্বজনরা বলছেন, তিনি ঘটনাস্থলেই ছিলেন না; মারা গেছেন হৃদরোগে।
চাঁদাবাজির ঘটনায় বিএনপির দুই পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছে। মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাঁদাবাজি-চোরাচালান ঠেকাতে মহিষখলায় পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বড় শুল্ক স্টেশন চারাগাঁও ও বাগলী থেকে চুনাপাথর ও কয়লার একটি বড় অংশ সম্প্রতি ট্রাকে মহিষখলা হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে। বিগত সরকারের শেষ সময়ে এই পথে ট্রাক চলাচল শুরু হলেও সরকার পরিবর্তনের পর এ পথে ব্যস্ততা বেড়েছে। প্রতিদিন আড়াইশ থেকে তিনশ ট্রাক চলছে। ৫ আগস্টের আগে উত্তর বংশিকুণ্ডা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আইনুদ্দিনের নেতৃত্বে এ সড়কে চাঁদাবাজি হতো। এর ভাগ প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের পকেটেও যেত। আইনুদ্দিন কারাগারে থাকায় এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
পরে এ সড়কে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নেন স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতারা। চাঁদা তোলা ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ বংশিকুণ্ডা (একাংশ) বিএনপি’র নেতাকর্মীর বিরোধ চলছে গেল কয়েক মাস ধরেই। কয়েকদিন আগে বিএনপির উচ্চপর্যায় থেকে সমঝোতার চেষ্টা করেও সফলতা আসেনি।
উত্তর বংশিকুণ্ডা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাসান শিকদার বলেন, ‘বহিস্কৃত বিএনপি নেতা হযরত আলীর ছোট ভাই যুবদলের সোহেল রানা প্রতিদিন দুইশ থেকে তিনশ ট্রাক থেকে এক হাজার টাকা করে চাঁদা তোলেন। তারা দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করায় আমরা প্রতিবাদ জানাই। এতে সাবেক ছাত্রদল নেতা হারুন মাহমুদ আকাশকে সোমবার তারা মারধর করেন। পরে হারুন ঘটনাটি গ্রামের লোকজনকে জানালে গ্রামবাসী ইফতারের পর জড়ো হয়ে মহিষখলা বাজারে গেলে সংঘর্ষ ঘটে।’ এ সময় এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর মামলার সুবিধার্থে প্রচার করা হয়– দাবি করে এ ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘হোসেনপুরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।’
সাবেক ছাত্রদল নেতা উপজেলার দক্ষিণ বংশিকুণ্ডা ইউনিয়নের দাতিয়াপাড়ার বাসিন্দা হারুন মাহমুদ আকাশ বলেন, ‘হযরত আলী ও তাঁর ভাই মুক্তার হোসেন প্রতিদিন দুইশ থেকে তিনশ গাড়ি থেকে চাঁদা তোলেন। দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ায় প্রতিবাদ করেছি। পরে তারা (হযরতের সমর্থকরা) আক্রমণ করে। এ সময় গ্রামের লোকজন সাবেক দুই ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের নেতৃত্বে মহিষখলা বাজারে আসেন। সেখানে আমার সমর্থক বিএনপি নেতাকর্মীরাও ছিলেন। হযরত আলীর লোকজন আমাদের দেখামাত্রই ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।’
মধ্যনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, ‘রাতের বেলা বিভিন্ন ট্রাক থেকে চাঁদা তুলেন হারুন মাহমুদ ও তাঁর লোকজন। পরে ট্রাকওয়ালাদের আমাদের কারও নাম বলে দেন।’ তিনি দাবি করেন, প্রশাসনসহ এলাকাবাসী বাধা দেওয়ার পরও বড় বড় ট্রাক এ সড়ক দিয়ে চলছে। তাঁর দাবি, সোমবার দাতিয়াপাড়া থেকে ১৫-২০টি গাড়িতে লোকজন এনে হামলা চালায় হারুন মাহমুদের সমর্থকরা। এ সময় তাঁর পক্ষের ২০ জন আহত হন। তাদের নেত্রকোনার কলমাকান্দা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হোসেনপুরের মোহাম্মদ আলীর ওপর ঢিল পড়ে। পরে তিনি মারা যান। তার ছেলেদের দাবি, তিনি হৃদরোগে মারা গেছেন।
উত্তর বংশিকুণ্ডা ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হেলাল মিয়া বলেন, সীমান্তের এ সড়ক দিয়ে চুনাপাথর, কয়লার ট্রাক বছর দুয়েক আগেও যায়নি। এগুলো নৌপথে নেওয়া হতো। বছরখানেক হয় এ পথে চুনাপাথর-কয়লা যাচ্ছে। শত শত ট্রাক যাওয়ায় সড়কের অবস্থাও বেহাল। বাড়ি-ঘর ধুলোময়। শব্দে ঘুমানো যাচ্ছে না। সড়কের বেহাল দশা ঠেকাতে প্রতিবাদ করেও লাভ হচ্ছে না।
মধ্যনগর থানার ওসি সজীব রহমান বলেন, মহিষখলায় সংঘর্ষে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কয়েকজন আহত হয়েছেন। মোহাম্মদ আলী মারামারি শুরুর আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ছ ত রদল র ল কজন স ঘর ষ হ দর গ ব এনপ উপজ ল এ সড়ক
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলী নৃশংসতার প্রতিবাদে বন্দরে শাহাজাদা জিলানীর বিক্ষোভ
গাজা ও রাফায় ইজরায়েলী বর্বরোচিত নৃশংসতার প্রতিবাদে এবং নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন আল্লামা মাহাবুবুল হক নূরে বাংলা হুজুরের শাহাজাদা রাকিব হাসান জিলানী ও জিলানী গ্রুপের কর্ণধার পেয়ার মোঃ রকি এর উদ্যোগে বন্দরে সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বাদ জুমা স্বল্পের চক বায়তুন নূর জামে মসজিদ থেকে হুজুরের শাহাজাদার ডাকে ২২ ও ২৩ নং ওয়ার্ডের সর্বস্তরের জনগণ এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। এসময় ডোনাল্ড ট্রাম্পে ও নেতা নিয়াহুর ছবিতে থুতু ও জুতা নিক্ষেপ করা হয়।
শাহাজাদা রাকিব হাসান জিলানী বলেন, এমন একটা দিন আসবে বিশ্বের মানচিত্রে থেকে ইজরায়েলী নামক কোন দেশ থাকবেনা। বিশ্বের মানচিত্রে একমাত্র ফিলিস্তিনি স্বাধীন দেশ হিসেবে টিকে থাকবে। আমরা ঐ দিনের অপেক্ষায় আছি।
আল্লাহ যে ভাবে হযরত মুসা (আঃ) এর জমানায় ফেরাউনকে পতন ঘটিয়েছে। হযরত নূহ (আঃ) জমানায় যেভাবে নবউতকে পতন ঘটিয়েছে। আমরা অপেক্ষায় আছি ইমাম মাহাদী আসবেন ইহুদীদের পতন ঘটাবেন। আল্লাহ আবাবিল পাখি পাঠাবেন ইহুদের ধ্বংশ করার জন্য। আল্লহ রাব্বুল আল-আমিন জিবরাহিল সহ ফেরেস্তাদের পাঠাবেন ইহুদীদের ধ্বংশ করার জন্য।
তিনি আরোও বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে বলেছেন ইজরায়েলীরা গাজা দখল করবে। এতে কেউ বাধাগ্রস্থ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠর ব্যবস্থা নিবে। এ সমাজ থেকে ড. ইউনুস সাহেবকে বলতে চাই আমরা না খেয়ে মরবো তারপরও ইজরায়েলী কোন পণ্য বাংলাদেশে ঢুকতে দিবেন না।
দোকানি ভাইয়েরা আপনারা ইজরায়েলী পণ্য ফেলে দেন আল্লাহ আপনাদের সহায়ক হবেন। আজ ফিলিস্তিনিদের পক্ষে যারা যুদ্ধ করছেন তাদের হাতে অস্ত্র নেই। আমাদের স্বাদ আছে সাধ্য নাই তাই পন্য বয়কট করতে হবে। এতেই আমাদের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা হবে।
আমরা তাদের যোগান দিতে চাই মুসলমান ভাইয়েরা একা নন। কিছু না করতে পারলেও নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিবাদ আন্দোলন করে ফিলিস্তিনি গাজাবাসীর পাশে থাকব।
হুজুরের শাহাজাদা ও জীলানী গ্রুপের কর্ণধার পেয়ার মোঃ রকির সভাপতিত্বে এসময় সক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন, প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন আল্লামা মাহাবুবুল হক নূরে বাংলা হুজুরের শাহাজাদা রাকিব হাসান জিলানী, বন্দর কেন্দ্রীয় কবরস্থান রোড পঞ্চায়ত কমিটির সভাপতি সোহেল খান বাবু, স্বল্পের চক বায়তুন নূর জামে মসজিদ মোতোয়াল্লী মোঃ কালাম, কোষাধক্ষ মীর মামুন, শরিফ দেওয়ান, মসজিদের মোয়াজ্জিন আব্দুর রহমান, নয়ন বেপারী।
এছাড়া আরোও উপস্থিত ছিলেন, মোঃ জিহাদ, তৌছিফ, মোঃ রবিন, পারভেজ, সৌরভ, রুবেল, ওহাব, আকাশ, মনির হোসেন, সাইফুল প্রমুখ।
ফিলিস্তিনি গাজায় শিশু সহ নিহত আহত সকল জনগণের জন্য ও যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন জামেয়া গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া তাহেরীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল শাহ্ মোয়াজ্জাম আল আজহারী।