এলডিসি থেকে উত্তরণ পেছানোর কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার
Published: 11th, March 2025 GMT
আগামী ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের কথা রয়েছে বাংলাদেশের। বিষয়টি আরও পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা, সে বিষয়ে চিন্তা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এমনটি জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার নবনিযুক্ত বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে তাঁর প্রথম কর্মদিবসে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ কথা বলেন।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে এলডিসি তালিকা থেকে উত্তরণে আবেদন করা হয়েছিল। এ বিষয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের বৈদেশিকনির্ভরতা বেড়ে গেছে ২০১০ সাল থেকে। কমে গেছে অভ্যন্তরীণ আয়ের উৎস। ৭ শতাংশের নিচে নেমে গেছে কর-জিডিপির হার। যদি আরও ঋণ নিতে হয়, আরও চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, তাছাড়া আমাদের অর্থনীতির অবস্থা খুবই ভঙ্গুর, গাজার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। এ জন্য এলডিসি থেকে উত্তরণ পুনর্বিবেচনা করতে পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পুনর্বিবেচনার পর উত্তরণ পিছিয়ে দিতে জাতিসংঘে আবেদন করা হতে পারে। এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা হয়তো সেদিকেই যাব। আবেদনের সঙ্গে যথাযথ কারণ ও কী করব, সে বিষয়গুলো উল্লেখ করতে হবে। একটি বিশ্বাসযোগ্য রোডম্যাপ দিতে হবে। সেটার কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
এলডিসি থেকে উত্তরণের সব সূচকের অবস্থাই কি ত্রুটিপূর্ণ ছিল– এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘মনে করুন সব সঠিক; কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি কী? আমরা যে বাজার সুবিধাটা পাই, তার ৮৫ শতাংশই হচ্ছে তৈরি পোশাক খাতে। এখানে আমাদের রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে হবে। ২০১৮ সাল থেকে বলছি, এলডিসি থেকে বের হব। সাত বছরেও একটা খাতের ওপর নির্ভরশীলতা কমলো না কেন?’
এলডিসি থেকে উত্তরণ স্থগিত থাকবে কিনা– জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, এখনও সেই সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। ব্যবসায়ী ও পোশাক শিল্পের মালিকদের সঙ্গে বসতে হবে। এখনই তা বলতে পারব না। বাংলাদেশ চাইলেই কি তা স্থগিত করতে পারবে– এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘এটা পুরোপুরি বাংলাদেশের হাতে নয়। তবে আমরা পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারি। এটা আমাদের অধিকার।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দেশের পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দেশে গাজার মতো অবস্থা চলছে। সব খাতেই দুর্নীতি হয়েছে। এ ধরনের দুর্নীতি ও ভঙ্গুর অবস্থা আমরা এর আগে কোনো দেশে দেখিনি। আমাদের জিডিপির গ্রোথে প্রভাব না পড়লেও অন্যান্য খাতে ভঙ্গুর অবস্থা। এখানে লুকোচুরির কোনো বিষয় নেই। এ সময় দায়িত্ব পেয়ে তিনি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছেন। দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে তিনি কাজ করতে চান।
তিনি বলেন, উন্নতির মধ্যে শুধু আমাদের প্রত্যেকের আয় বেড়েছে। আমরা মধ্যম আয়ে চলে গেছি। সে অনুযায়ী আমাদের রাজস্ব বাড়ার কথা ছিল; কিন্তু সেগুলো গেল কোথায়? তাই মানুষকে কর দিতে উৎসাহিত করতে হবে। বিনিয়োগ মন্দা ও কর্মসংস্থান না বাড়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির অবস্থা খুবই ভঙ্গুর। গাজার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। এ থেকে বুঝে নেবেন আপনারা দেশের অবস্থা কেমন। এ মুহূর্তে কি গাজায় কেউ বিনিয়োগ করবে?
বিনিয়োগ, কর্মসংস্থানসহ অর্থনীতির সবই যে পরস্পর সম্পর্কিত, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আপনি একটা সরকারকে বলছেন ইন্টেরিম। এই শব্দটাই তো বিনিয়োগের জন্য অসুবিধাজনক। একজন বিনিয়োগকারী চিন্তা করবে, এসব অন্তর্বর্তীর পলিসির কী স্থায়িত্ব থাকবে? বিনিয়োগ করতে তারা ভাববে। রাজনীতির সঙ্গে অর্থনীতির একটা সম্পর্ক আছে।’ তাহলে এ সরকারের নাম কী হওয়া উচিত– জানতে চাইলেও সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) সচিব নাজমা মোবারেক, অর্থ বিভাগের দুই অতিরিক্ত সচিব মুনশি আবদুল আহাদ ও মোহাম্মদ আবু ইউছুফ উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এলড স র অবস থ আম দ র সরক র এলড স
এছাড়াও পড়ুন:
ফনিক্স ইন্স্যুরেন্সের নতুন সিইও রফিকুর রহমান
পুঁজিবাজারে বিমা খাতে তালিকাভুক্ত ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে মো. রফিকুর রহমানের নিয়োগ প্রস্তাব মঞ্জুর করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নিয়োগপত্রের শর্তাদি পরিপালন সাপেক্ষে ২০২৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ বছরের জন্য মো. রফিকুর রহমানের নিয়োগ অনুমোদন করা হয়েছে। গত ৬ মার্চ এক চিঠিতে এ তথ্য জানিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
আইডিআরএর উপ-পরিচালক (নন-লাইফ) মো. সোলায়মান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে মো. রফিকুর রহমানের নিয়োগ অনুমোদন করা হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/রফিক