‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’–এর কর্মসূচিতে পুলিশের হামলার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। একই সঙ্গে একে ‘ন্যক্কারজনক হামলা’ উল্লেখ করে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে দলটি।

মঙ্গলবার গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এক যৌথ বিবৃতিতে এ ঘটনাকে ‘জুলাই অভ্যুত্থানের জনগণের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি’ বলে উল্লেখ করেছেন।

গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে জোনায়েদ সাকি ও আবুল হাসান রুবেল বলেন, সারা দেশে নারীর ওপর অব্যাহত নিপীড়ন, ধর্ষণ, ধর্ষণ–পরবর্তী খুনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের মঞ্চ ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ পূর্বঘোষিত প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পেশের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলা প্রমাণ করেছে, অন্তর্বর্তী সরকার আগের মতোই মানুষের ন্যায্য আন্দোলন দমনে ‘ফ্যাসিবাদী কায়দা’ অব্যাহত রেখেছে।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জোনায়েদ সাকি ও আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ওপর বর্তায়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতা জনগণের মধ্যে হতাশার সঞ্চার করবে।’

সরকারের ব্যর্থতা দেশকে বড় বিপদের দিকে নিয়ে যেতে পারে জানিয়ে বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, অপরাধমূলক মব কর্মকাণ্ড এবং বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে শক্ত ও দৃঢ় ভূমিকা নিতে হবে। অবিলম্বে হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অব্যাহত নিপীড়ন প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।

এর আগে দুপুরে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গণপদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ। রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পদযাত্রায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি ছাত্র ফ্রন্টের

সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী-শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং জননিরাপত্তা দানে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

সোমবার (১০ মার্চ) দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়েছে। 

সমাবেশে কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক নওশিন মুশতারী সাথী, সদস্য পঙ্কজনাথ সূর্য, ইডেন কলেজ শাখার সভাপতি শাহিনুর আক্তার সুমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক প্রমুখ। 

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা এমন একটা সময়ে সমাবেশ করছি, যখন ৮ বছরের শিশু আছিয়া হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। আছিয়ার মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখলে স্বাভাবিক থাকা যায় না। এর আগে আমরা দেখেছি সিলেটের এমসি কলেজে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা স্বামীকে বেধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। তার আগে নুসরাতকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল।

কুমিল্লায় তনুকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছিলো। তনুর বাবা গত ৮ বছর ধরে বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নৌকায় ভোট না দেওয়ায় যুবলীগের নেতারা চার সন্তানের জননীকে ধর্ষণ করে ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দিয়েছিল। এ রকম ঘটনা প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই আমরা দেখতাম, কিন্তু বিচার পাইনি। 

বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের সমস্ত গণ-আন্দোলনে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও তাদের কোন সামাজিক নিরাপত্তা নেই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সুমাইয়া শিকদারসহ যে নারীরা জুলাই অভ্যুত্থানে সামনে সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছিল, তাদের সেখানে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রক্টর তাদের নিয়ে নোংরা বক্তব্য দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষার্থীকে তার পোশাক ও শরীর নিয়ে নোংরা মন্তব্য করার পরেও কথিত ‘তৌহিদী জনতা’ নারী নিপীড়ককে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে।

এ ‘তৌহিদী জনতা’ জনগণের উপর শাসকদের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে, জিনিসপত্রের দাম বাড়লে, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন না। তারা অত্যাচার, নির্যাতন, শোষণের বিরুদ্ধে জনগণের লড়াইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করে দিতে চায়। তারা জনগণের পক্ষের শক্তি না। তারা নারীর উপর নিপীড়ন হলে নিপীড়কের পক্ষে দাঁড়ায়। এভাবে সমাজে চলমান সমস্ত অন্যায়- অত্যাচার ও নারী নিপীড়ন-ধর্ষণকে তারা বৈধতা দেয়। 

ধর্মীয় বক্তব্য, ওয়াজ মাহফিলে নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রাখা হয়। সিনেমা, টেলিভিশন, বিজ্ঞাপনে, সাহিত্যে– বিভিন্নভাবে নারীদের পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে নারীর উপর পুরুষের যে আধিপত্যমূলক মানসিকতা, তার বীজ তৈরি হয়। এসব অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। মুনিয়া, নুসরাত, তনু, আছিয়াসহ বাংলাদেশে ঘটা সমস্ত ধর্ষণের বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এসময় তারা সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী- শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও জন-নিরাপত্তাদানে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবি করেন।

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন, মধুর ক্যান্টিন প্রদক্ষিণ করে সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে শেষ হয়।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানুষের ভালোর জন্য যেকোনো বিষয়ে হতে পারে আলোচনা: তারেক রহমান
  • সেরা বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে চীন: রাষ্ট্রদূত 
  • সিকদার গ্রুপের ১৪ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
  • সিকদার গ্রুপের এমডি রন হক, তাঁর মা মনোয়ারা সিকদারসহ পরিবারের ১৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
  • বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, চারজন গ্রেপ্তার
  • স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি ছাত্র ফ্রন্টের
  • রাজধানীতে চোর ও ছিনতাইকারী সন্দেহে ৮ জনকে গণপিটুনি
  • রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ৮ জনকে গণপিটুনি
  • চারদিনেও জ্ঞান ফেরেনি শিশুটির, কৃত্রিম উপায়ে চলছে শ্বাস-প্রশ্বাস