অসহায়-দুস্থ রোজাদারের জন্যই তাদের আয়োজন
Published: 11th, March 2025 GMT
খুলনায় অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে পবিত্র রমজানজুড়ে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করছে সামাজিক সংগঠন ইদ্দিখার ফাউন্ডেশন।
কোনো দিন সংগঠনটি রাস্তার পাশে রিকশাচালক, পথচারী ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে, কোনোদিন মাদ্রাসায় গিয়ে এতিম শিশুদের দিচ্ছে
ইফতারি। পাশাপাশি দরিদ্রদের জন্য সাহরির সামগ্রীও দিচ্ছে সংগঠনটি।
সংগঠনের সদস্যরা জানান, রমজান শুরুর আগের দিন তারা দরিদ্র, এতিম, বিধবা ও বয়স্ক ৫০টি পরিবারের মাঝে ইফতারসামগ্রী দেন। প্রথম রোজায় জামিয়া রশিদিয়া গোয়ালখালী মাদ্রাসা ও এতিমখানার ৬০ এতিম ছাত্রকে ইফতার দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দিন বিলপাবলা হুসাইনিয়া জামে মসজিদে অর্ধশতাধিক মুসল্লির মাঝে ইফতারি
বিতরণ করেন। একই মসজিদে একটি সিলিং ফ্যান দেওয়া হয়।
এ ছাড়া তৃতীয় রোজায় মুজগুন্নি মহাসড়কে পথচারীদের মাঝে ইফতারের প্যাকেট ও বোতলজাত পানি বিতরণ করা হয়। চতুর্থ দিন নগরীর শিববাড়ী মোড়ে রিকশা-ইজিবাইক চালক ও পথচারীদের ইফতার দেওয়া হয়। পঞ্চম রোজায় দিঘলিয়া উপজেলার ফজলুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার ৫০ জন দরিদ্র শিশুকে নিয়ে নদীর তীরে ইফতারের আয়োজন করা হয়।
এদিকে ষষ্ঠ রোজায় রায়েরমহল কলেজের মাঠে নবীন রোজাদারের মাঝে, সপ্তম রোজায় বয়রা বাজার মোড়ে ইজিবাইক, রিকশা ও ভ্যানচালকদের মাঝে, অষ্টম রোজায় নগরীর ৭ নম্বর ঘাটে কর্মরত শ্রমিকদের, নবম রোজায় খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতাল মসজিদে ইফতার দেওয়া হয়। দশম রোজায় বয়রা পুলিশ লাইন্সের সামনের সড়কে পথচারীদের মাঝে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
ইফতারের প্যাকেট পাওয়া রিকশাচালক সোলায়মান শেখ ও ইজিবাইক চালক ইয়াকুব আলী বলেন, তারা গরিব মানুষ। চলতি পথে ইফতার পেয়েছেন। সবাই যদি রমজানে এভাবে গরিবদের সহায়তায় এগিয়ে আসত, তাহলে কষ্ট কমে যেত।
ইদ্দিখার ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক এম এ সাদী জানান, প্রচারবিমুখ কিছু দানশীল ব্যক্তির টাকা দিয়ে এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন। চার বছর ধরে রমজানে ইফতার-সাহ্রি সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্নভাবে দরিদ্র লোকজনকে সহায়তা করে এই সংগঠনটি। ঈদের আগে দরিদ্র লোকজনের মাঝে সেমাই-চিনিসহ ঈদের বাজার করে দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইফত র দর দ র ইফত র পথচ র রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালি সংস্কৃতির বিকৃতি ছাড়া কিছুই নয়: ইসলামী ছাত্র আন্দোলন
মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিকৃতি ছাড়া কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এবার পহেলা বৈশাখ উদযাপন ও এর নামকরণে জনগণের বোধ ও বিশ্বাসকে সম্মান জানানোর দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এসব দাবি করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলা বর্ষপঞ্জি ষোড়শ শতকে মোগল সম্রাট আকবরের সময় ফসল রোপণ ও কর আদায় সহজ করার উদ্দেশ্যে হিজরি সন অনুসরণ করে তৈরি করা হয়। গ্রামবাংলা ও শহরাঞ্চলে বিভিন্ন লোকসংগীত, হালখাতা, পিঠা-পুলি উৎসবের মাধ্যমে আবহমানকাল থেকে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়ে আসছে, যা বাঙালি সংস্কৃতির চিরচেনা রূপ।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত
ঢাবি শিক্ষার্থী ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
কিন্তু মাত্র তিন দশক ধরে একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে মনগড়া ও নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতীক ব্যবহার করে সার্বজনীন বাঙালি সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্য, উৎসব ও জাতিসত্তার ধর্মীয় বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করছে। বিশেষ করে, পতিত স্বৈরাচারের আমলে পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে যেভাবে কলকাতার উচ্চবর্ণের হিন্দু সংস্কৃতির বিস্তার ঘটানো হয়েছে, তা দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস ও অনুভূতিকে আঘাত করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বোধ ও বিশ্বাসকে উপেক্ষা করে বাঙালি সংস্কৃতির নামে ভিনদেশি সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার নীলনকশা এঁকেছিল ফ্যাসিস্ট ও নতজানু পতিত সরকার। মঙ্গল শোভাযাত্রার আশ্রয়ে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালিয়ে নিজস্ব সংস্কৃতির স্বকীয়তা নষ্ট করে দেওয়ার চক্রান্ত ছিল স্পষ্ট।
মঙ্গল শোভাযাত্রার কোনো বৈজ্ঞানিক বা বিশ্বাসগত ভিত্তি নেই। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা, এবার পহেলা বৈশাখ উদযাপন ও এর নামকরণে জনগণের বোধ ও বিশ্বাসকে সম্মান জানানো হবে।
মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে মুখোশ, পেঁচা ও নানা রকম মূর্তির প্রদর্শন, আসলে বাঙালি সংস্কৃতির নামে এক অপসংস্কৃতির প্রচার। প্রকৃতপক্ষে, এটি আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিকৃতি ছাড়া কিছুই নয়। মঙ্গল কখনোই এসব প্রতীকের মাধ্যমে আসে না। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। পৌত্তলিকতার প্রসারের লক্ষ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা নামে বৈশাখ উদযাপন দেশের সচেতন ছাত্র-জনতা রুখে দেবে।
মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন সার্বজনীন বাঙালি সংস্কৃতির অংশ হতে পারে না। মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে চাপিয়ে দেওয়া সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে বিরত থেকে ইসলাম-বিধৌত বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশে দেশবাসী ও সচেতন শিক্ষার্থীদের ভূমিকা রাখতে হবে বলে বিবৃতিতে মন্তব্য করেন নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী