ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরিমাপে কারচুপির অভিযোগে ব্যবসায়ীকে জরিমানা, অভিযোগকারী পেলেন ২৫ শতাংশ
Published: 11th, March 2025 GMT
কাচ বিক্রি করে ক্রেতার কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা আদায় করেছেন বিক্রেতা। বিষয়টি বুঝতে পেরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন ওই ক্রেতা। শুনানিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অতিরিক্ত টাকা ক্রেতাকে ফেরত দিয়েছেন বিক্রেতা। পাশাপাশি দোকানিকে গুনতে হয়েছে জরিমানা।
এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের ঘটনা। আজ মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের শুনানি হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শহরের কালাইশ্রীপাড়া রোডে অবস্থিত আনাস গ্লাস স্টোরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আইন অনুযায়ী জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থ হিসেবে অভিযোগকারী মোহাম্মদ ইয়াসিন ভূঁইয়াকে আড়াই হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভোক্তা মোহাম্মদ ইয়াসিন ভূঁইয়া পেশায় একজন আইনজীবী। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি শহরের কালাইশ্রীপাড়া রোডে অবস্থিত আনাস গ্লাস স্টোর থেকে ১১ দশমিক ৪৮ বর্গফুট আয়তনের একটি কাচ কেনেন। প্রতি বর্গফুট কাচের মূল্য ১৬০ টাকা দরে গ্লাস কেনেন তিনি। সে হিসাবে ওই কাচের দাম হওয়ার কথা ছিল ১ হাজার ৮০০ টাকা। কিন্তু বিক্রেতা তাঁর কাছ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা আদায় করেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। আজ সকাল ১০টার দিকে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি হয়।
ভোক্তা অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা গেছে, বিবাদীর বক্তব্য অনুসারে, কাচ কেটে ফেলার পর অতিরিক্ত যে অংশ থাকে তার মূল্য তিনি ভোক্তার কাছ থেকে অতিরিক্ত গ্রহণ করেছেন। বিবাদীর এই বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় খরচ দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, অতিরিক্ত ব্যয়, সিস্টেম লস সবকিছুই সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত আছে। কিন্তু অতিরিক্ত মূল্য গ্রহণের বিষয়ে ভাউচারে অথবা কোথাও তিনি ভোক্তাকে অবগত করেননি। অভিযোগটি সত্য প্রমাণিত হওয়ায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪০ ধারা লঙ্ঘনের দায়ে বিক্রেতাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান মালিক তাঁর দোষ স্বীকার করেছেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আইন অনুযায়ী জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থ হিসেবে অভিযোগকারীকে আড়াই হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়: বাংলাদেশ জাসদ
সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করে বাংলাদেশ জাসদ। আজ শনিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় নিজেদের এ অবস্থান তুলে ধরে দলটি।
আজ সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বাংলাদেশ জাসদের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে দলটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বৈঠকের শুরুতে নিজেদের প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপ পাঠ করেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন।
মুশতাক হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। অবশ্যই চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান উল্লেখ করার ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। সেই সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে নব্বইয়ের গণ–অভ্যুত্থানও তাৎপর্যপূর্ণ। এই গণ–অভ্যুত্থানকেও সংবিধানে মর্যাদার সঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন। সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও ৭ মার্চের ভাষণ অপসারণ তাঁরা সমর্থন করেন না। দেশের নাম বাংলাতে পরিবর্তনকে তাঁরা অনাবশ্যক বলে মনে করেন।
আলোচনার শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও এ দাবি প্রকৃতপক্ষে জনগণের।আলোচনার শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও এ দাবি প্রকৃতপক্ষে জনগণের। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি শেষ করতে চায় কমিশন। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঐকমত্য কমিশন রাষ্ট্র সংস্কারের একটি সুনির্দিষ্ট পথ খুঁজে বের করতে পারবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ কমিশনের সদস্যরা