লালমনিরহাট সদর উপজেলায় মো. শাকিল বাবু নামে ৯ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রের পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার গোকুন্ডা এলাকার রতিপুর গ্রামের নিজ বাড়ির একটি টয়লেটের কাছে পাঁচ ফুট গভীর একটি গর্ত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত শাকিল বাবু রতিপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। শফিকুল চট্টগ্রামে শাকসবজির ব্যবসা করেন। শাকিলের মা জয়নব বেগম দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। শাকিল স্থানীয় একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ত। গতকাল সোমবার দুপুর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে শাকিল নিখোঁজ হওয়ার পর তার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মায়ের মুঠোফোনে এক ব্যক্তি কল করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ চান। রাতে স্থানীয়দের মাধ্যমে পুলিশ বিষয়টি জানতে পারে। ওই মুঠোফোন নম্বরের সূত্রে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রতিপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৫), শহিদুলের ছেলে সোহান (২৪) এবং শহিদুলের স্ত্রী শাহানা বেগমকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে আটক করে সদর থানায় নিয়ে আসে। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে সোহান পুলিশের কাছে শাকিল বাবুর মরদেহ তাঁর বাড়ির টয়লেটের কাছে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে রাখার কথা জানান।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরনবী আজ মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, শাকিল বাবুর মরদেহ সোহানের তথ্যমতে উদ্ধার করার পর সোহান জিজ্ঞাসাবাদে কীভাবে এবং কেন হত্যা করা হয়েছে, তার বর্ণনা দিয়েছে। ওসি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহান জানিয়েছে, তাঁর কাছে অনেকে টাকা পায়। সেই টাকা পরিশোধ করার জন্য মুক্তিপণ আদায় করতে তিনি এই কাজ করেছেন।

ওসি বলেন, আগামীকাল বুধবার লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে শাকিলের মরদেহের ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করার প্রক্রিয়া চলমান আছে।

নিহত শাকিলের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মা জয়নব বেগমের কান্নায় সদর থানার পরিবেশ ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। আজ সন্ধ্যার দিকে সদর থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে যিনিই যাচ্ছিলেন, তাঁকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছিলেন এই মা।

শাকিল বাবুর নানা জয়নাল আবেদীন (৬৮) প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোর অন্ধ বেটির চোখের আলো শাকিলের খুনের সাথে যায় যায় জড়িত, সকোলক ফাঁসি দিতে হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদর থ ন র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

জাফর এক্সপ্রেসে জিম্মি ১০৪ যাত্রীকে উদ্ধার, ১৬ জঙ্গি নিহত

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে জঙ্গিদের হাতে জিম্মি থাকা ১০৪ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এসময় অভিযানে অন্তত ১৬ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে।

সর্বশেষ পাওয়া খবরে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন নিউজ জানিয়েছে, এখনো অভিযান চালাচ্ছে পাকিস্তানের সেনারা। এর আগে মঙ্গলবার জঙ্গিরা রেললাইনে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও গুলি ছুড়ে ট্রেন থামিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে।

সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, ব্যালুচিস্তানের বলান জেলায় জাফর এক্সপ্রেসে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান শুরু করেছে। অভিযানে জিম্মি ১০৪ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া অভিযানে ১৬ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৫৮ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী ও ১৫ জন শিশু রয়েছে। এছাড়া ১৭ জন আহত যাত্রীকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। অন্য যাত্রীদের উদ্ধারে এখনো অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।

জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি কোয়েটা থেকে পেশওয়ার, খাইবার পাখতুনখোয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। ট্রেনটির ৯টি বগিতে ৪০০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিল।

নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে জিও নিউজ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের পর, সন্ত্রাসীরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে যায়। আক্রমণকারীরা তাদের আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করছে।

জানা গেছে, সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তানে তাদের মাস্টারমাইন্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং নারী-শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এছাড়া এলাকার কঠিন ভূ-প্রকৃতি অভিযানকে আরও জটিল করে তুলছে।

আক্রমণকারীরা ট্রেনের উপর আক্রমণ করার আগে রেলপথে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল, নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, তারা লোকোমোটিভে গুলি চালিয়েছিল, যার ফলে চালক আহত হন। ট্রেনটি একটি সুড়ঙ্গের ঠিক আগে থেমে যায়। আফগানিস্তান ও ইরানের সঙ্গে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে একটি দুর্গম, পর্বতাঞ্চলীয় এলাকায় ট্রেনটি তারা দখলে নেয়। ট্রেনটিতে নারী ও শিশুসহ ৪৫০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিলো। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ