সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পাবনায় এক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও তার স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পাবনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় পাবনার উপ-সহকারী পরিচালক মনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার বাদি একই কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্র ধর।

মামলার আসামিরা হলেন- পাবনার সুজানগর উপজেলার হাসামপুর গ্রামের শমসের আলী মিয়ার ছেলে ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ (৪৮), তাঁর স্ত্রী মর্জিনা খাতুন (৪৮) ও ছেলে ফজলে রাব্বি রিয়ন (২২)। তারা বর্তমানে পাবনা পৌর শহরের সদর হাসপাতাল রোড শালগাড়িয়া এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আবুল কালাম আজাদ এর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেয়ে ২০২৪ সালের ৮ মে তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করে দুদক। একই বছরের ৩ জুলাই তিনি দুদক পাবনা কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।

কমিশনে দাখিলকৃত তার সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, সম্পদ বিবরণীতে ৯ লাখ ৪২ হাজার ২৪০ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছেন আবুল কালাম আজাদ। একইসঙ্গে তিনি অসাধু উপায়ে ১ কোটি ৩২ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করে ভোগদখল করছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অপরদিকে আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী মর্জিনা খাতুনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হওয়ায় তাকে ২০২৪ সালের ৮ মে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করা হয়। তিনিও একই বছরের ৩ জুলাই দুদক পাবনা কার্যালয়ে তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।

সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধানকালে দেখা যায় যে, মর্জিনা খাতুন তার স্বামীর অবৈধ আয় দ্বারা ১ কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৪৮৩ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগদখল করছেন। একই মামলার দ্বিতীয় আসামি আবুল কালাম আজাদ অসাধু উপায়ে উপার্জিত অর্থ দ্বারা স্ত্রী’র নামে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনে প্রত্যেক্ষভাবে সহায়তা করেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং দণ্ডবিধি’র ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়ায় তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

এছাড়া আবুল কালাম আজাদ ও মর্জিনা খাতুন দম্পতির ছেলে ফজলে রাব্বি রিয়ন এর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হওয়ায় তার প্রতি গত বছরের ৮ মে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করা হয়। তিনিও তার বাবা-মায়ের সাথে একইদিন ৩ জুলাই দুদক পাবনা কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।

সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দেখা যায়, রিয়ন তার পিতার অবৈধ আয় দ্বারা ১ কোটি ১৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯৪১ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখল করছেন। এই মামলার আরেক আসামি তার পিতা আবুল কালাম আজাদ অসাধু উপায়ে উপার্জিত অর্থ দ্বারা তার পুত্রের নামে উক্ত জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনে প্রত্যেক্ষভাবে সহায়তা করেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং দণ্ডবিধি’র ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়ায় ছেলে ও বাবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঢাকা/শাহীন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ য় র কর কর ছ ন হওয় য়

এছাড়াও পড়ুন:

পিটার হাসকে হুমকি দেওয়া সেই মুজিবের স্ত্রী কারাগারে

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর আলোচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর স্ত্রী সাহেদা বেগমকে দুদকের করা এক মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ রোববার আদালতে সাহেদা বেগম আত্মসমর্পণ করলে মহানগর দায়রা জজ নুরুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

মুজিবুল চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর প্রকাশ্য জনসভায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি দেন মুজিবুল হক। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর আলোচনায় আসেন মুজিবুল। চাম্বল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত ওই সভায় মুজিবুল হক পিটার হাসের উদ্দেশে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন।

২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর মুজিবুল হক চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করে দুদক। দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বাদী হয়ে নিজ কার্যালয়ে পৃথক মামলা করেন।

দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, মুজিবুল হক জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৫৬ লাখ ৭১ হাজার ১৪ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। তিনি ১৯৯২ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে প্রবাসে থাকলেও দেশে টাকা পাঠানোর কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

অপর মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মুজিবুল হকের স্ত্রী সাহেদা বেগম জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৮৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৯৭ টাকার সম্পদ উপার্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। এ মামলায় মুজিবুল হককেও আসামি করা হয়। গত বছরের ১ আগস্ট মুজিবুল এবং তাঁর স্ত্রীর অবৈধভাবে অর্জিত স্থাবর সম্পদ জব্দের (ক্রোক) আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী (পিপি) মাহমুদুল হাসান বলেন, দুদকের করা মামলায় জামিন চেয়ে আত্মসমর্পণ করেন সাহেদা বেগম। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিটার হাসকে হুমকি দেওয়া সেই মুজিবের স্ত্রী কারাগারে