রেড ক্রিসেন্টের নতুন চেয়ারম্যান ডা. আজিজুল ইসলাম
Published: 11th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আজিজুল ইসলাম। একইসঙ্গে ১১ সদস্যের এ্যাডহক ম্যানেজিং বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি (৫ মার্চ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার উপসচিব ডা.
রাষ্ট্রপতি ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রেসিডেন্ট কর্তৃক বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি আদেশ, ১৯৭৩ (রাষ্ট্রপতির আদেশ ১৯৭৩ সনের ২৬ নং)-এর ৯ (১) বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে আগামী ৬ মাস পর্যন্ত সংগঠনটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. আজিজুল ইসলাম প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস এ কনসালট্যান্ট ফিজিশিয়ান জেনারেল হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। ১৯৮৫ সালে তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং সেখানেই তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি মেডিকেল কোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালে ডা. মো. আজিজুল ইসলাম মেডিসিনে এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৮ সালে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির আর্মড ফোর্সেস পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল ইনিস্টিটিউট এবং ২০১৫ সালে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার থেকে মেডিকেল অনকোলজিতে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন।
মেজর জেনারেল (অব.) ডা. মো. আজিজুল ইসলাম ১৯৬২ সালের ১ জুন গাজীপুরের শ্রীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি শ্রীপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৭৯ সালে নটরডেম কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এইচএসসি পাশ করেন। সমাজসেবায় নিয়োজিত ডা. মো. আজিজুল ইসলাম আছিয়া মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
এদিকে, একই প্রজ্ঞাপনে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর সহযোগী অধ্যাপক ড. তাসনিম আজিমকে ভাইস চেয়ারম্যান, ঢাকা ট্যাক্সবার এসোসিয়েশানের কর আইনজীবী ও রেড ক্রিসেন্টের সাবেক যুব প্রধান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়ে মোট ১১ সদস্যের এ্যাডহক ম্যানেজিং বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়। ম্যানেজিং বোর্ডের বাকি সদস্যরা হলেন- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ইমরান বিন ইউনুস, কার্ডিওলজিস্ট ও সমাজসেবক ডা. শেখ আবু জাফর, সিআরপি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাইদুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর শাহে আলম, ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন, ছাত্র প্রতিনিধি মুহাম্মদ তুহিন ফারাবী, ডা. মাহমুদা আলম মিতু এবং ডিজি ঢাকা কমিউনিকেশনস লিমিটেড এর পরিচালক মো. মাহবুব আলম।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল দ শ র ড ক র স ন ট স স ইট আজ জ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রিয় ক্রিকেট, আমাকে আর একটা সুযোগ দাও’
যশপ্রীত বুমরার ডেলিভারিটি ছিল লেগ স্টাম্পে। খুব দ্রুতই অবস্থান তৈরি করে নিলেন করুন নায়ার, ফ্লিক শটে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা!
নিজের বোলারকে ছক্কা হজম করতে দেখেও হাততালি দিয়ে উঠলেন মুম্বাই অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। একই ওভারের পঞ্চম বলে আবার ছক্কা। এবার স্লোয়ার ডেলিভারি উড়ে গেল লং অফ দিয়ে। অবাক চোখে চেয়ে দেখলেন বুমরা। এই দুই ছক্কার মাঝে হয়েছে একটি চারও। সব মিলিয়ে ছয় বলেই ১৮ রান। সময়ের সেরা পেসার বুমরার বলে নায়ারের এই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে ওঠার কথা অনেকেরই।
নায়ার সেই বিরল দুর্ভাগাদের একজন, যিনি ভারতের হয়ে অপরাজিত ট্রিপল সেঞ্চুরি করেও তিন ম্যাচ পর বাদ পড়ে আর কখনো জাতীয় দলে ফিরতে পারেননি। আইপিএলে ব্র্যাত্য হয়ে পড়েছিলেন ৩০ বছর বয়সেই। হারিয়ে গিয়েছিলেন শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেট থেকেই। ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর নায়ার টুইট করেছিলেন, ‘প্রিয় ক্রিকেট, আমাকে আর একটা সুযোগ দাও।’
গতকাল রাতে নায়ারের সেই টুইট দিয়ে একটি পোস্ট করেছে দিল্লি ক্যাপিটালস। ক্যাপশনে লেখা, ‘আমাদের হৃদয় ভরে গেছে।’ সঙ্গে চোখের কান্না লুকানোর ইমোজি, ভালোবাসারও। শনিবার রাতে আইপিএলের মুম্বাই–দিল্লি ম্যাচ সবচেয়ে বেশি তৃপ্ত হওয়ার কথা নায়ারেরই।
দিল্লি ক্যাপিটালসের ৩৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান আইপিএলে ম্যাচ খেলতে নেমেছেন প্রায় তিন বছর পর। ফাফ ডু প্লেসির ইমপ্যাক্ট বদলি হিসেবে নেমে করেছেন ৪০ বলে ৮৯ রান। ৫ ছক্কা আর ১২ চারে শুধু দিল্লির জন্য রানই তোলেননি, নিজের ভেতরে জমে থাকা খেদই যেন একের পর এক বের করে দিয়েছেন।
আইপিএলে নেমেছেন বছর তিনেক পর, তবে ফিফটিটি করেছেন প্রায় সাত বছর বিরতির পর। সুনির্দিষ্টভাবে বললে ২ হাজার ৫২০ দিন পর। আইপিএলে আর কোনো ব্যাটসম্যানের দুটি ফিফটির মধ্যে এত বড় ব্যবধান নেই।
নায়ার মাঝের দীর্ঘ সময়ে খেলার সুযোগই পেয়েছেন মাত্র তিন আসর। মাঠে নেমেছিলেন ৮ ম্যাচে। তাতে মাত্র ৩৭ রান তাঁর আইপিএল ক্যারিয়ারে বড় প্রশ্ন তুলে দেয়।
২০২২ সালের পর আর সুযোগই পাননি। ওই সময় বাদ পড়েছিলেন রাজ্য দল কর্নাটক থেকেও। অমন ঘোর অন্ধকার সময়েই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফুটে উঠেছিল নায়ারের সেই আর্তি—প্রিয় ক্রিকেট, আমাকে আর একটা সুযোগ দাও।
ক্রিকেট তাঁকে সেই সুযোগ দিয়েছে। অর নায়ার তা দুই হাত ভরে লুফে নিয়েছেন। সেটা কতটা, কিছু সংখ্যায় চোখ রাখলেই বোঝা যাবে। এক মৌসুম অপেক্ষা করে বিদর্ভে যাওয়া নায়ার সেই টুইটের পর থেকে গতকালের আগপর্যন্ত প্রথম শ্রেণি, লিস্ট ‘এ’ ও ঘরোয়া টি–টোয়েন্টি মিলিয়ে করেছেন ৩ হাজার ৩৫ রান, সেঞ্চুরি ১২টি। ভারতের আর কোনো ক্রিকেটার এই সময়ে এর চেয়ে বেশি রান বা সেঞ্চুরি করতে পারেননি।
ইংল্যান্ডের কাউন্টিতে নর্দাম্পটনশায়ারের হয়েও খেলেছেন দুই মৌসুম, রান করেছেন ৫৬ গড়ে। এ সময়ে দলগতভাবে জিতেছেন রঞ্জি ট্রফি, ফাইনালে উঠেছেন বিজয় হাজারে ট্রফির। ওয়ানডে সংস্করণের বিজয় হাজারেতে নায়ারই ছিলেন শীর্ষ ব্যাটসম্যান। ব্যাট করেছেন আট ইনিংসে, আউট হয়েছেন মাত্র দুবার। অপরাজিত ইনিংসগুলো ছিল এ রকম—১২২*, ৮৮*, ১৬৩*, ১১১*, ১২২*, ৮৮*। যে দুটিতে আউট হয়েছেন, তার একটিতে ১১২, আরেকটিতে ২৭।
প্রায় একা হাতে বিদর্ভকে ফাইনালে তোলার পর ট্রফি জিততে না পারলেও নায়ার আবার আইপিএলে জায়গা করে নিতে পেরেছেন। যদিও দিল্লি তাঁকে সস্তা দামেই কিনেছে (৫০ লাখ রুপি)।
নায়ারের দৃষ্টি ছিল অবশ্য মাঠে নামার সুযোগ পাওয়ার দিকেই। যদিও দিল্লির প্রথম চার ম্যাচে সেই সুযোগটা আসেনি। অবশেষে পঞ্চম ম্যাচে সুযোগ এসেছে ডু প্লেসিকে চোটের কারণে তুলে নেওয়ায়। আর আইপিএল প্রত্যাবর্তনের প্রথম সুযোগেই নায়ারের ব্যাটে ছুটল আগুনের ফুলকি, যে আগুনে পুড়লেন বুমরার মতো বোলারও।
ম্যাচটা অবশ্য নায়ারের দল শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি। মুম্বাইয়ের ২০৫ রান তাড়া করতে নেমে হেরেছে ১২ রানে। তবে নায়ার জিতেছেন ঠিকই। প্রিয় ক্রিকেট তাঁকে আরেকটা সুযোগ তাঁকে দিয়েছে। বয়স এখন ৩৩ বছর। কখনো আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে সুযোগ না পাওয়া নায়ার এখন সেদিকেও হয়তো একটা সুযোগ চাইতে পারেন।