Prothomalo:
2025-03-12@05:48:56 GMT

ফিতরা কীভাবে হিসাব করব

Published: 11th, March 2025 GMT

 রমজান পরবর্তী ঈদের অন্যতম ইবাদত হলো ‘ফিতরা’ দেওয়া; মানে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বা খাদ্য দান করা। পরিভাষায় একে বলে, ‘সদাকাতুল ফিতর’, অর্থাৎ ‘ফিতরের সদকা’। কখনো ‘যাকাতুল ফিতর’ও বলা হয়। ফিতর মানে নাশতা বা সকালের খাবার, বা যা খেয়ে রোজার সমাপ্তি করা হয়। রোজাদার ব্যক্তি দীর্ঘ এক মাস পরে অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতো খাবার খাচ্ছেন, হতে পারে রোজা পালনের সময় কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি ঘটে গেছে, একই সঙ্গে সমাজের দরিদ্র মানুষও যেন ঈদ উৎসবে অংশ নিতে পারেন, ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, এ-কারণেই ‘ফিতরার’ বিধান রাখা হয়েছে। এমনকি এই ঈদের নামকরণ করা হয়েছে ‘ঈদুল ফিতর’ বা ফিতরের ঈদ নামে। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষ এবং ছোট-বড় সবার জন্য নির্বিশেষে মহানবী মুহাম্মদ (সা.

) ‘ফিতরা’ বাধ্যতামূলক করেছেন।

 ফিতরা যেভাবে পরিমাপ করা হয়

 ফিতরা নির্ধারণের ক্ষেত্রে যে-পাঁচটি খাদ্য-পণ্য বিবেচনায় নেওয়া হয়, তা হলো, আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনির। এসব পণ্যের যে-কোনো একটি দ্বারা ফিতরা প্রদান করা যাবে। ফিতরার পরিমাপ হলো, গম ও চালের ক্ষেত্রে ‘অর্ধ সা’ এবং বাকি চারটি পণ্যের ক্ষেত্রে ‘এক সা’ নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘সা’ হলো প্রাচীন আরব পরিমাপের একক। কেজি ও গ্রাম হিসেবে ‘এক সা’ সমপরিমাণ ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম এবং ‘অর্ধ সা’ সমপরিমাণ ১ কেজি ৬শ ৫০ গ্রাম।

আরও পড়ুনরমজানে ৬টি অভ্যাস১০ মার্চ ২০২৫

ফিতরা কার জন্য বাধ্যতামূলক

 প্রতিটি সচ্ছল মুসলিম ব্যক্তি, যার ওপর জাকাত ওয়াজিব, ফিতরা তার ওপর ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক। তবে এটি নিজের জন্য দেওয়ার পাশাপাশি তার ওপর কেউ যদি নির্ভরশীল থাকে তাদের জন্যও দিতে হবে। যেমন, মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তান। এমনকি তার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্যও ফিতরা দেবেন।

 ফিতরা কখন দিতে হবে

ফিতরা প্রদান করতে হয় ঈদুল ফিতর নামাজের আগে। পরে দিলেও তা ‘সদকা’ হিসেবে আদায় হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে সওয়াব তুলনামূলক কম বলা হয়।

আরও পড়ুনরোজার নিয়ত কখন করবেন১৯ ঘণ্টা আগে

জাকাত ও ফিতরার পার্থক্য

জাকাত ও ফিতরার মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য আছে। জাকাতের বিধানের সঙ্গে রমজান বা ঈদের বিশেষ কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু ফিতরার সঙ্গে রমজান ও ঈদের বিশেষ সম্পর্ক আছে। সম্পদের পরিমাণ যত বেশি থাকে জাকাতের পরিমাণও তত বেশি হয়। কিন্তু ফিতরার ক্ষেত্রে বিষয়টি সে রকম নয়। ফিতরা নির্ধারিত একটি অঙ্ক, সম্পদের পরিমাণ হ্রাস-বৃদ্ধির সঙ্গে ফিতরার পরিমাণ ওঠা-নামা করে না।

ফিতরা কারা পাবে

ইসলামের দৃষ্টিতে যিনি জাকাত পাওয়ার উপযুক্ত তিনি ফিতরা পাওয়ার ক্ষেত্রেও উপযুক্ত হবেন।

বাংলাদেশে চলতি বছর জনপ্রতি সর্বোচ্চ ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮০৫ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১০ টাকা। এই ফিতরা নির্ধারণ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগ থেকে আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনির এই পাঁচটি পণ্যের বাজারমূল্য সংগ্রহ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এরপর এসব মূল্যের ওপর ভিত্তি করে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 ১. গম বা আটা ফিতরা দিলে ১ কেজি ৬শ ৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১১০ টাকা দিতে হবে।

২. যব দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৫৩০ টাকা।

৩. কিশমিশ দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১৯৮০ টাকা।

৪. খেজুর দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২৩১০ টাকা।

৫. পনির দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২৮০৫ টাকা।

সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ আল-শেখ বলেছেন, ফিতরায় খাদ্যপণ্য দেওয়া উচিত। অর্থ আকারে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সৌদি গেজেট পত্রিকায় তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘যাকাত-আল-ফিতর’ খাদ্য হিসেবে দেওয়া নবীজি (সা.) এর সুন্নত।

আরও পড়ুনযাদের জাকাত দেওয়া যাবে০৭ মার্চ ২০২৫

রোজা পালন করার সময় মানুষ এমন কিছু ছোটখাটো ত্রুটিবিচ্যুতি করতে পারে যার জন্য তার রোজাকে মাকরুহ করে ফেলে, যেমন কোনো অশ্লীল কথা বলে ফেলেছে। ফিতরার মাধ্যমে রোজা পরিশুদ্ধ হয়। ফিতরার আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈদের আগে দরিদ্র মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা করা বা তাদেরকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা। যাতে তারা এই অর্থ দিয়ে ঈদের দিন উদ্‌যাপন করতে পারে।

আরও পড়ুনজীবনজুড়ে রমজান২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

তিক্ততা ভুলে শহিদকে জড়িয়ে ধরলেন কারিনা (ভিডিও)

বলিউডের তারকা জুটি কারিনা কাপুর ও শহিদ কাপুর। তাদের রুপালি পর্দার রসায়ন ব্যক্তিগত জীবনেও গড়িয়েছিল। দীর্ঘদিন চুটিয়ে প্রেম করার পরও ভেঙে যায় সেই সম্পর্ক।

প্রেমের ভাঙন কারিনা-শহিদের মনে তিক্ততা তৈরি করে। মুখ দেখাদেখিও বন্ধ ছিল তাদের। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন কারিনা কাপুর খান ও শহিদ কাপুর। ঝলমলে এই অনুষ্ঠানে কথা তো দূরের কথা, শহিদ কাপুরকে পাত্তাই দেননি কারিনা। এবার সেই শহিদ কাপুরকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন কারিনা।

গতকাল জয়পুরে অনুষ্ঠিত হয় আইফা অ্যাওয়ার্ডের সংবাদ সম্মেলন। সেই মঞ্চের একটি ভিডিও ক্লিপ এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। তাতে দেখা যায়, মঞ্চে পাশাপাশি দাঁড়ানো করন জোহর, শহিদ কাপুরসহ অনেকে। মঞ্চে গিয়ে শহিদকে জড়িয়ে ধরেন কারিনা। এরপর খানিকটা সময় তারা কথাও বলেন।

আরো পড়ুন:

ছাবা ঝড়: ২৩ দিনে আয় ১ হাজার কোটির দুয়ারে

সবচেয়ে বেশি আয় করা নারীকেন্দ্রিক পাঁচ সিনেমা

এ দৃশ্য দেখে বিস্মিত নেটিজেনরা। একজন লেখেন, “ওহ মাই গড, শহিদ-কারিনা একসঙ্গে।” আরেকজন লেখেন, “কি রসায়ন।” জুনায়েদ নামে একজন লেখেন, “নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না।” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে অন্তর্জালে।

কারিনাকে জড়িয়ে ধরা ও তার সঙ্গে কথা বলার ব্যাপার নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে পড়েন শহিদ। এ অভিনেতা বলেন, “আমাদের জন্য এটি নতুন কিছু নয়। আমাদের আজ মঞ্চে দেখা হয়েছে। কিন্তু আমরা এখানে-সেখানে একে অপরের সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি করি। এটা আমাদের জন্য সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ব্যাপার। মানুষ যদি এটাকে ভালোভাবে নেয় তাহলে এটা ভালো।”

বলিউডের অন্যতম আলোচিত জুটি শহিদ ও কারিনা কাপুর। তাদের প্রেম কাহিনিও ঠিক তেমন। ২০০৩ সালে ‘ইশক ভিশক’ সিনেমার মাধ্যমে নায়ক হিসেবে শহিদের বলিউডে অভিষেক হয়। তাকে দেখে প্রেমে পড়েন কারিনা। ‘কফি উইথ করন’ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় সিজনে হাজির হয়ে এ অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, শহিদের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাকে কল করতেন, মেসেজ পাঠাতেন। এমনকি, এই অভিনেতাকে বিয়েও করতে চান বলে জানান।

বাস্তবে তাদের প্রেমের গল্প মধুর হলেও শুরুতে রিল লাইফে তাদের রসায়ন দর্শকের খুব একটা মনে ধরেনি। তাদের প্রেমের গুঞ্জন যখন বলিপাড়ায় উড়ছে তখন, ‘ফিদা’ (২০০৪) সিনেমায় প্রথম জুটিবদ্ধ হন তারা। কিন্তু বক্স অফিসে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। ২০০৬ সালে ‘থার্টি সিক্স চায়না টাউন’ ও ‘চুপ চুপ কে’ সিনেমায় একসঙ্গে পর্দায় হাজির হলেও বক্স অফিস মাতাতে পারেননি তারা। তবে এই জুটিকে দর্শকের মন মতো পর্দায় তুলে ধরতে পেরেছিলেন নির্মাতা ইমতিয়াজ আলী। ‘জব উই মেট’ সিনেমায় তাদের রসায়ন আজও ভক্তদের মনে গেঁথে রয়েছে। কিন্তু পর্দায় রসায়ন জমে উঠলেও ততদিনে ম্লান হয়ে যায় তাদের বাস্তব জীবনের প্রেম। এই সিনেমার সেটেই তাদের ব্রেকআপ হয়। এমনকি সিনেমার ‘তুমসে হি’ গানের শুটিংও আলাদাভাবে করেন শহিদ-কারিনা।

তবে কী কারণে তাদের সম্পর্কে ভাঙন ধরেছিল তা আজও অজানা। গুঞ্জন শোনা যায়, শহিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি কারিনার মা ববিতা কাপুর। তা ছাড়া সিনেমায় নায়কের চরিত্রে শহিদকে নেওয়ার সুপারিশ করতেন কারিনা। তার মা সেটিও পছন্দ করতেন না। এছাড়া ব্যক্তিত্বের দিক থেকে শহিদ ও কারিনা ছিলেন সম্পূর্ণ আলাদা। শহিদ চুপচাপ থাকতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে কারিনা হাসিখুশি থাকেন ও একটু বেশি কথা বলতে পছন্দ করেন। প্রেমে পড়ার পর তাদের এই ব্যাপারগুলো সম্মুখে আসে। তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো, বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল এবং এ সকল কারণে তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে।

২০০৭ সালে ‘কিসমত কানেকশন’ সিনেমার শুটিং করতে বিদ্যা বালানের সঙ্গে কানাডা যান শহিদ। অন্যদিকে ভারতের লাদাখে সাইফ আলী খানের সঙ্গে ‘তাশান’ সিনেমার শুটিং করছিলেন কারিনা। সেই সময় বিদ্যার সঙ্গে শহিদ কাপুরের প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয়, যা শুনে কষ্টে পেয়েছিলেন কারিনা। সেই সময় এই অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়ান সাইফ আলী খান। পরবর্তীতে তাদের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হতে থাকে। এরপর প্রেম। এদিকে ‘কামিনে’ সিনেমা করতে গিয়ে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান শহিদ। তবে এই অভিনেতার সেই সম্পর্কও বেশিদিন টেকেনি।

২০১৬ সালে অভিষেক চৌবের ‘উড়তা পাঞ্জাব’ আবারো এক মঞ্চে হাজির করে শহিদ-কারিনাকে। সিনেমাটিতে তাদের একসঙ্গে কোনো দৃশ্য ছিল না। কিন্তু ট্রেইলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে একসঙ্গে হাজির হয়েছিলেন তারা।

ব্যক্তিগত জীবনে বর্তমানে শহিদ ও কারিনা দুজনই নিজ নিজ পরিবার নিয়ে সুখী। ২০১২ সালে সাইফকে বিয়ে করেন কারিনা। এই দম্পতির দুটো পুত্রসন্তান রয়েছে। অন্যদিকে অনেক জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০১৫ সালের ৭ জুলাই মিরা রাজপুতকে বিয়ে করেন শহিদ কাপুর। ২০১৬ সালের ২৬ আগস্ট এ দম্পতির মেয়ে মিশা এবং ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তাদের পুত্র জেইন কাপুরের জন্ম হয়।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বাতিল করল আয়ারল্যান্ড
  • যেমন ছিল মহানবীর (সা.) ইফতার
  • এই দেশ কি ধর্ষকের অভয়ারণ্য
  • তিক্ততা ভুলে শহিদকে জড়িয়ে ধরলেন কারিনা (ভিডিও)