মাদারীপুর কোটা সংস্কার আন্দোলনে রোমান ব্যাপারী (৩২) নিহত হওয়ার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে শহরের হরিকুমারিয়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আবদুল্লাহ আল মামুন জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি মাদারীপুর সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত বছরের ১১ জুলাই তিনি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি হিসেবে যোগদান করেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরপরই তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সদর মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে আবদুল্লাহ আল মামুন একটি শটগান হাতে নিয়ে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করেছেন। এমন একটি ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ তাঁকে শনাক্ত করেন। মঙ্গলবার বিকেলে কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে রিকশার গতিরোধ করে পুলিশ আবদুল্লাহ আল মামুনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁকে রোমান ব্যাপারী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মোকছেদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক পিপি আবদুল্লাহ আল মামুনকে রোমান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি শটগান হাতে নিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমানোর কাজ করেছেন। তাঁর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে পুলিশ সংগ্রহ করেছে। পরে সেই ভিডিও যাচাই-বাছাই করে পুলিশ নিশ্চিত হয়েই আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার সকালে তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে। তাঁর বিরুদ্ধে মারামারিসহ আরও দুটি মামলা আছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে রোমান ব্যাপারীকে (৩২) হত্যার ঘটনায় গত ২৪ আগস্ট নিহত ব্যক্তির স্ত্রী কাজল আক্তার বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। নিহত রোমান ব্যাপারী সদর উপজেলার ভদ্রখোলা এলাকার আমর ব্যাপারীর ছেলে ও পেশায় পিকআপের চালক ছিলেন। মামলায় মাদারীপুর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নোবেল ব্যাপারীকে প্রধান করে ১৮ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। জেলায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত তিনজনের মধ্যে এটিই প্রথম মামলা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ আল ম ম ন গ র প ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়া পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার উদ্যোগ

১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বগুড়া পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি করপোরেশন-২ শাখা থেকে জারি করা এক চিঠিতে বগুড়া পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার জন্য গণবিজ্ঞাপ্তি জারি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামত ও আপত্তি নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. ফিরোজ মাহমুদ স্বাক্ষরিত চিঠিটি গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের কাছে পৌঁছায়। চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বগুড়া পৌরসভার প্রশাসককে। জানতে চাইলে বগুড়া পৌরসভার প্রশাসক ও বগুড়ার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মাসুম আলী বেগ আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের চিঠি পাওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামত, আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, বগুড়া পৌর এলাকায় সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠা বিধিমালা (সিটি করপোরেশন ২০১০–এর বিধি ৬ অনুযায়ী গণবিজ্ঞপ্তি জারি এবং এলাকার অধিবাসীদের মতামত ও আপত্তি নিষ্পত্তিপূর্বক চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এর আগে বগুড়া পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার জন্য গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ বগুড়াকে সিটি করপোরেশন ঘোষণার আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নিয়েছে।

বগুড়া পৌরসভা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৪-০৫ সালের দিকে বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রচেষ্টায় বগুড়া পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার উদ্যোগ শুরু হয়। সিটি করপোরেশন ঘোষণার জন্য পৌরসভার সীমানা সম্প্রসারণ করে ২১টি ওয়ার্ডে উন্নীত করা হয়। এর পর থেকে এই উদ্যোগ আর এগোয়নি। ২১ট ওয়ার্ডবিশিষ্ট দেশের অন্যতম বড় এ পৌরসভায় এত দিন বিশেষ কোনো উন্নয়ন বরাদ্দ আসেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সিটি করপোরেশনে উন্নীত করা হলে দীর্ঘদিনের নাগরিক সেবা বঞ্চনার অবসান ছাড়াও শহরের অবকাঠামো এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন গতি আসবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ