আড়াইহাজারে ছাত্রদল-যুবদলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ২০
Published: 11th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবারও উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের পাঁচগাও দেওয়ানপাড়া এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সেখানকায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশের নজরধারী বাড়ানো হয়েছে। এর আগে সোমবার রাত ৯ টার দিকে পাঁচগাও দেওয়ানপাড়া এলাকায় দুপ্তারা ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহন মিয়া ও একই ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুম্মন খানের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শেষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়িত উভয় পক্ষই কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা নজরুল ইসলাম আজাদের অনুসারী বলে এলাকাবাসি জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পাঁচগাও গ্রামটির আড়াইহাজার উপজেলার অন্যান্য গ্রামের চেয়ে বিশাল এলাকা নিয়ে গঠিত। এই গ্রামের মোল্লাপাড়া এলাকায় ছাত্রদল নেতা মোহন মিয়া ও দেওয়ানপাড়া এলাকায় যুবদল নেতা জুম্মন খান নিয়ন্ত্রন করে
থাকে।
পাঁচগাও গোলাপবাগ বাজারটি বড় একটি ব্যবসাকেন্দ্র হওয়ায় বাজারের নিয়ন্ত্রন নিয়ে উভয় নেতার অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ লেগেই আছে। এছাড়াও এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও জুয়ার আসর থেকেও বিপুল পরিমান অর্থনৈতিক লেনদেন
হয়ে থাকে।
এ এলাকার ব্যবসা বানিজ্য ও আধিপত্য নিয়ে এর আগে বেশ কয়েকবার ছাত্রদল নেতা মোহন মিয়া ও যুবদল নেতা জুম্মন খানের অনুসারীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ সংঘর্ষ হয়েছে। সোমবার রাতে মাদক ও জুয়ার আসর জমানোকে
কেন্দ্র করে ছাত্রদল নেতা মোহন মিয়া ও যুবদল নেতা জুম্মন খানের অনুসারীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে উভয় পক্ষের অনুসারীরা দেশিয় ধারালো অস্ত্রসজ্জে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
এতে মোহন মিয়া (২০), তারা মিয়া (৫৫), খাইরুল ইসলাম (৩৫), জুম্মন খান (৩৫), মুন্না মিয়া (২৬), জামান মিয়া (৪০), ফালান মিয়া (৩৫), ইয়াকুব মিয়া (৩৭), ইয়াছিন ভূইয়া (৪০), আবুল কাসেম ভ’ইয়া (৪২), সোলেমান মিয়াসহ (৩৮), পারভেজ মিয়া (২৪) সহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়।
এদের মধ্যে আবুল কাসেম, খাইরুল ইসলাম ও মোহন মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফর করা হয়েছে। বাকিদের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে দুপ্তারা ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহন মিয়া জানান, দেওয়ানপাড়া এলাকার জুম্মন খানের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথে মিলে মিশে এলাকায় বেশ দাপটের সঙ্গে চলাফেরা
করে।
শেখ হাসিনার পতনের পর তারা রাতারাতি বোল্ট পাল্টে য্বুদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বনে গিয়ে এলাকায় তাণ্ডব শুরু করে। দেওয়াপাড়া এলাকার তাদের প্রতিপক্ষের বেশকয়েকটি বাড়িঘররে চাঁদার জন্য ভাংচুর করে লুটপাত চালায়। স্থানীয় ক্ষুদ্র কারবারিদের কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দিলে তাদের মামলা হামলা ও নানা হুমকী দমকী দিতে থাকে। শুরু করে পুরনো ব্যবসা মাদক কারবার ও জুয়ার আসর।
স্থানীয়রা সেনাক্যাম্পে জুম্মন খানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করলে গত ২০ অক্টোবর সেনাবাহিনীর তাকে আটক করে। সেখার থেকে এসে সে তার লোকজনকে নিয়ে এলাকায় মাদক কারবারের বিস্তার করতে থাকে। সাথে টাকার বিনিময়ে জুয়ার আসর জমায়। এতে স্থানীয় লোকজনের সাথে তিনিও এর প্রতিবাদ করলে জুম্মন খানের নেতৃত্বে ধারালো অস্ত্রসজ্জে সজ্জিত হয়ে তাদের উপর হামলা চালায় এতে তাদের লোকজন মারাত্মক জখম হয়।
এদিকে দুপ্তারা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুম্মন খান মাদক, চাঁদাবাজি ও জুয়ার আসর বসানো জন্য ছাত্রদল নেতা মোহন মিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তোলেন।
তিনি বলেন, তিনি ও তার অনুসারীরা এসব অপকর্ম বাঁধা দিলে মোহন মিয়ার নেতৃত্বে তার লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল, ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে। সেনাবাহিনী তাকে আটকের ঘটনাটি স্বীকার করলেও মিথ্যা অভিযোগের কারণে এ আটকের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি দাবী করেন। তিনি এলাকায় কোন ধরনের মাদকের কারবারের সাথে জড়িত নন। জুয়ার আসর বন্ধে তিনি সবসময় সোচ্চার থাকেন।
আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ ফোর্স প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কোন পক্ষ মামলা করেনি।
এলাকা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এই সংঘর্ষের ঘটনা বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থল ও এর আশপাশে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। মামলা দায়ের করা হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ জ ম মন খ ন র ও জ য় র আসর ছ ত রদল ন ত ম হন ম য় র ল কজন স ঘর ষ এল ক য় দ র কর ক রব র ব যবস র ঘটন য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
দুই ছাত্রলীগ নেতাসহ পলক রিমান্ডে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর ধানমন্ডিতে রিয়াজ হত্যা মামলায় সাবেক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের ফের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই মামলায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের দুই নেতার চার দিনের রিমান্ডে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদ রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিকালে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।
আরো পড়ুন:
মাগুরার শিশু ‘ধর্ষণের’ ঘটনায় ৪ আসামির রিমান্ডের আবেদন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
রিমান্ডে শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব মিয়াজী
আদালতে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামি পক্ষে আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখি রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট ধানমন্ডি থানাধীন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন রিয়াজ। এসময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত হন তিনি। এ ঘটনায় গত ১০ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন নিহতের মা শাফিয়া বেগম।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডির সাইন্সল্যাব থেকে জিগাতলা যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন মো. রিয়াজ (২৩)। দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বছরের ১৭ আগস্ট বিকেলে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের মা মোসা. শাফিয়া বেগম ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন।
গত ১৪ আগস্ট রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা হতে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক গ্রেপ্তার হন। এরপর থেকে অসংখ্য হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় তাবে দফায় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়।
গত ১৮ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সিয়ামকে রাজধানীর আদাবর এবং নাঈমকে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে আটক করে পুলিশ।
ঢাকা/মামুন/মাসুদ