প্রতিশ্রুত সময়ে নির্বাচন সম্ভব: নাহিদ
Published: 11th, March 2025 GMT
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়ার রাজনৈতিক দল, ছাত্র-শ্রমিক, ওলামায়ে কেরাম, লেখক, চিন্তক, বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে ইফতার মাহফিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতাদের দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আগের অবস্থান থেকে সরে এতে বলেছেন, সরকারের প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পাঁচ তারকা একটি হোটেলে এ ইফতার মাহফিলে এনসিপি আহ্বায়ক সংসদ এবং গণপরিষদ নির্বাচন একই সঙ্গে আয়োজনের দাবি জানান। তিনি বলেছেন, এর মাধ্যমে আমরা নতুন সংবিধান এবং গণতন্ত্রের পথে উত্তরণ করতে পারব। সকল কিছুই দ্রুত সময়ের মধ্যে হওয়া সম্ভব মনে করছি। সরকার যে নির্ধারিত সময় দিয়েছে, এরমধ্যেই এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া সম্ভব। তবে নির্বাচনের আগে অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটতে হবে। সন্ত্রাস, দখল, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারকে কঠোর হতে বলেছেন দলীয় দায়িত্ব নিতে উপদেষ্টার পদ ছেড়ে আসা নাহিদ ইসলাম।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে এনসিপি প্রধান বলেন, আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য নীতিগত বিরোধ হতে পারে। তবে গণতান্ত্রিক সম্পর্ক, সংলাপ, মিথস্ক্রিয়া যাতে ছেদ না পড়ে। জাতীয় ঐক্য ছাড়া ফ্যাসিবাদকে বিলোপ-পরাস্ত করা সম্ভব নয়। বিপদ এখনও কাটেনি। বাংলাদেশ বিরোধিরা এখনও ষড়যন্ত্র করছে। রাজনীতিবিদ এবং অভ্যুত্থানের শক্তির অনৈক্য, সামরিক বেসামরিক আমলাতন্ত্র, মাফিয়া জোট, ব্যবসায়ী শ্রেণি, ষড়যন্ত্রকারী নানা বৈদেশিক শক্তিকে সুযোগ করে দিতে পারে। নীতিগত বিরোধ হবে, তবে জুলাইয়ে যে ঐক্য হয়েছে তা থেকে সরে যাব না।
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন যে সংস্কার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন- তাদের প্রস্তাবিত জুলাই সনদ দ্রুত কার্যকর দেখতে চাই। জুলাই সনদ কার্যকরের মাধ্যমে সংস্কারের রূপরেখা স্পষ্ট হবে। জনপ্রশাসন ও পুলিশ সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে অধ্যাদেশের মাধ্যমে দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। নারীর প্রতি সহিংসতা, সন্ত্রাস-উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর অবস্থান দেখতে চাই।
ইফতারে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদী ও মাহবুব উদ্দিন খোকন, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.
এনসিপি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হলেও দলটির ইফতারে উপদেষ্টাসহ সরকারের কেউ অংশ নেননি। ছিলেন চিন্তক ফরহাদ মজহার, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, মাসুদ কামালসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার, সদস্যসচিব জাহিদ আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহবায়ক আব্দুল কাদের, লেখক মূসা আল হাফিজ, ধর্মীয় আলোচক হাবিবুর রহমান মিসবাহ, গুম হওয়া সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী অংশ নেন।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, জৈষ্ঠ্য যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব এবং সামান্তা শারমিন, জৈষ্ঠ্য সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা ও নাহিদ সারওয়ার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা ছিলেন ইফতারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প ইফত র ব এনপ জ ম য় ত ইসল ম র রহম ন র ত সময় বল ছ ন ইফত র এনস প ইসল ম সদস য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনা আলমের মুক্তিসহ বিশেষ ক্ষমতা আইন বিলোপের দাবি
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক মেঘনা আলমের মুক্তির দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। একইসঙ্গে এই আইন বিলোপেরও দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়। কমিটির পক্ষে এই বিবৃতি পাঠান সংগঠনের সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
বিবৃতিতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমের আটকের ঘটনাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগের স্বৈরাচারি আচরণের বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ একটি ফ্যাসিবাদী আইনের ধারা, যার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা আগে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করেছেন। অথচ এই আইন ব্যবহার করেই সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতের অন্যায় আচরণ ও প্রতারণা ঢাকতে একজন নারীকে বাড়িতে হামলা করে তুলে নিয়ে তাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। গত ১৫ বছর শেখ হাসিনার শাসনামলে বহু গুম ও স্বেচ্ছাচারি আটকের ভিত্তি তৈরি করে নাগরিকের মানবাধিকারকে নিষ্পেষিত করা হয়েছিল। জুলাইয়ে শিক্ষার্থী শ্রমিক জনতার বিপুল রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যখন জনগণের আকাঙ্খা হয়ে উঠেছে, তখন এ রকম আইনের ব্যবহার পুনরায় ফ্যাসিবাদী তৎপরতার প্রকাশ ঘটিয়েছে।’
মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে পুলিশের আনা ‘মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে কূটনীতিক সম্পর্ক নষ্ট করার’ অভিযোগকে বিভ্রান্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্র যদি একজন কূটনীতিকের ব্যক্তিগত বিদ্বেষের জের ধরে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে নাগরিকের অধিকার হরণ করে, তাহলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়। একইসঙ্গে কূটনৈতিক প্রশ্নে দ্ব্যর্থহীন নতজানুতা প্রকাশ পায়।
বিবৃতিতে অবিলম্বে মেঘনা আলমের মুক্তি এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন (১৯৭৪) বিলোপের দাবি জানায় গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। একইসঙ্গে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনারও দাবি জানানো হয়।